BRAKING NEWS

ডিমাপুর-কোহিমা নতুন বিজি সিঙ্গল লাইন প্রকল্পের ৪ নম্বর টানেলে সাফল্য অর্জন এনএফ রেলের

গুয়াহাটি, ২৫ জানুয়ারি (হি.স.) : ডিমাপুর-কোহিমা নতুন ব্রডগজ (বিজি) লাইন সংযোগ স্থাপনকারী প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে সম্প্রতি উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে এক বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। বুধবার মোলভম-ফেরিমা স্টেশনের মধ্যে টানেল নম্বর ৪-এর সাফল্য পাওয়া গেছে। এই টানেল ১৫১ মিটার কাট এবং কভার সহ ১,৩১৯ মিটার দৈর্ঘে নির্মিত। এই প্রকল্পের পর্যায়-II-এর এটিই হলো দ্বিতীয় দীর্ঘতম টানেল। ভারতীয় রেলওয়ে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের অবশিষ্ট অংশের সাথে কোহিমার সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এই সাফল্য অর্জনকে একটি মুখ্য পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে। বিবৃতিতে সব্যসাচী জানান, এই টানেল নির্মাণের কাজ পোর্টাল-১ সাইড থেকে শুরু হয়েছিল ২০২১ সালের ১০ মার্চ থেকে। পোর্টাল-২ থেকে কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি। টানেলের ভেতরে কিছু কিছু স্থানে জলের ঝরনা সহ যে শিলাস্তর ছিল তা মূলত শেল এবং প্রাকৃতিকভাবে অত্যন্ত আবহাওয়াযুক্ত। টানেলটি নির্মাণ করতে রেলওয়ে কর্মীদের বহু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। প্রথম কারণ ২০২২-এর এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টি, দ্বিতীয়ত টানেল ৪-এ অত্যন্ত নিম্নমানের মাটির জন্য পোর্টাল-২-এ চাপা পড়া এবং তৃতীয়ত পিছলে যাওয়ার সম্ভাবনা অধিক ছিল। ফলে এ সব সমস্যায় কাজের অগ্রগতিতে প্রভাব পড়েছিল। সমস্যাবলি সমাধানের জন্য জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া এবং স্বতন্ত্র পরামর্শদাতাদের দিগনির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল।

তিনি জানান, মাটির নীচে খননের কাজ প্রতিমাসে গড়ে ৪১.২৫ মিটার করে হয়েছে। মাটি খননের কাজ নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথোড (এনএটিএম) ব্যবহার করে সম্পাদন করা হয় এবং টানেলের কাজ শুরু হওয়ার সময় থেকে দিনরাত ২৪ ঘণ্টার জন্য ২১০ জন শ্রমিক নিয়োজিত ছিলেন। টানেলটির চূড়ান্ত সাফল্যের পাশাপাশি মাটি খননের কাজও ১,১৬৮ মিটার সম্পূর্ণ করা হয়। টানেলটির চূড়ান্ত লাইনিং সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য ধার্য করা হয়েছিল ২০২৪-এর মে মাসে।

একাধিক নতুন রেল লাইন প্রকল্প সম্পাদন করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির রূপান্তরে ভারতীয় রেলওয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবগুলি রাজ্য রাজধানীর সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ক্যাপিটাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-এর অধীনে নতুন রেল লাইন নির্মাণের কাজ চলছে এবং এগুলির মধ্যে একটি নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর থেকে কোহিমা পর্যন্ত নতুন ব্রডগজ রেল লাইন নির্মাণ। মোট ৮২.৫ কিমি (২.৭৫ কিমি অসমে এবং ৭৯.৭৫ কিমি নাগাল্যান্ডে) দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পে আটটি নতুন স্টেশন রয়েছে। সেগুলি যথাক্রমে ধনশিরি, ধনশিরিপাড়, শোখুভি, মোলভম, ফেরিমা, পিফেমা, মেঙ্গুজুমা ও জুবজা।

এই প্রকল্পে ২৪টি মেজর ব্রিজ, ১৫৬টি মাইনোর ব্রিজ, ০৬টি রোড ওভার ব্রিজ, ১৫টি রোড আন্ডার ব্রিজ ও ৩১ কিমি দৈর্ঘের ২১টি সুড়ঙ্গ অন্তর্ভুক্ত। প্রকল্পের মোট প্রত্যাশিত ব্যয় ৬,৬৬৩ কোটি টাকা।

নতুন রেল সংযোগের ফলে দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকে খুব সস্তায় খাদ্যশস্য, অটোমোবাইল ও অন্যান্য পরিকাঠামোমূলক ও নির্মাণ সামগ্রী পাহাড়ি রাজ্যে পরিবহণে সহায়ক হবে এবং স্থানীয় মানুষ লাভান্বিত হবেন। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও শক্তিশালী হবে বলে প্রত্যাশী উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কৰ্তৃপক্ষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *