নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারী৷৷ চড়িলাম বিধানসভার অন্তর্গত লালসিং মুড়ায় তিপ্রা মথা ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে আহত ১২ জন বিজেপি কর্মী৷ উত্তেজিত তিপ্রা মথার সমর্থকরা বিজেপির পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে৷ এছাড়া এলাকার বেশ কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর চালিয়েছে৷ গাড়ি অটো রিক্সা মোটরবাইক সহ অন্যান্য সম্পদেও ভাঙচুর করে উত্তেজিতরা৷ হামলায় অন্তত ১২ জন বিজেপির কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে৷ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে৷
পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন৷ রাজনৈতিক হিংসাত্মক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের তরফ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ ঘটনার পর থেকে এলাকার জাতি উপজাতি উভয় অংশের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত৷ রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মার নির্বাচনী এলাকায় ভোট পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও হলে নানা প্রশ্ণ করতে শুরু করেছে৷
এই কেন্দ্রে তিপ্রা মথা ও বিজেপি কোন পক্ষই প্রতিপক্ষকে এক ইঞ্চি মাটি ছাড়তে নারাজ৷ সরব প্রচারের শেষ দিনে লাল সিং মুড়া এলাকায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠায় সাধারণ ভোটাররা আতঙ্কগ্রস্থ৷
সরব প্রচার শেষ হতেই লাগু হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬ টা পর্যন্ত লাগু থাকবে এই বিধি৷ বিধানসভা নির্বাচনের সড়ব প্রচার শেষ হয়েছে মঙ্গলবার বিকাল চারটে৷ সরব প্রচার শেষ হতেই বিকেল চারটা থেকে লাঘু হয়েছে ১৪৪ ধারা৷ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক স্বার্থে নগদ টাকা, উপহার , মাদকদ্রব্য ইত্যাদি বিলি করে যাতে নির্বাচকদের প্রভাবিত করা না যায় সেজন্য নির্বাচনী এলাকায় কড়া নজরদারি রয়েছে৷ পশ্চিম জেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের এলাকায় সমাজবিরোধী ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে শাস্তি যাতে ভঙ্গ না হয় সেজন্য পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন সমগ্র পশ্চিম জেলায় সিপিসি কোড ১৯৭৩ এর ১৪৪ ধারা অনুসারে লাঠি, আয়রন , রড , বাস৷ পাথর ও অন্যান্য অস্ত্রসম বস্তু ইত্যাদি সহ বা ছাড়া পাঁচ বা ততোধিক লোকের জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন৷ একই সঙ্গে এদিন বিকেল চারটের পর থেকে জনসভা , মিটিং , মিছিল , লাউড স্পিকারের ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে আদেশ জারি করা হয়েছে৷ তাছাড়া দুই বা ততোধিক মোটর বাইক বা মোটর গাড়ির একসঙ্গে চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ বাড়ি বাড়ি প্রচার চালানো যাবে৷ তবে এজাতীয় প্রচারে প্রার্থীসহ পাঁচ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না৷ এজাতীয় প্রচার অভিযান সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে করতে হবে, কোন রাজনৈতিক দলের পতাকা ,ব্যানার , চিহ্ণ ইত্যাদি বহন করা যাবে না এবং যারা এজাতীয় প্রচারে অংশ নেবেন তাদের সংশ্লিষ্ট নির্বাচনক্ষেত্রের নির্বাচন হতে হবে৷ পশ্চিম জেলার জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার আরও জানিয়েছেন এই নিষেধাজ্ঞা শান্তিপ্রিয় ও কর্তব্য পরায়ন নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করার জন্য নয়৷ বরং শান্তিপূর্ণ ও স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য৷ এই নিষেধাজ্ঞা ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটা থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ছটা পর্যন্ত বলব থাকবে৷ এই আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আইপিসির ১৮৮ ধারা অনুসারে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে৷ তবে এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত কর্মী সি আর পিএফ , পুলিশ , তাদের দ্বারা ব্যবহৃত যানবাহন এবং উপযুক্ত পাস সহ মিডিয়া পার্সেন, ড্রাইভার , সাফাই কর্মীরা৷
2023-02-14