কলকাতা, ১২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): গাঁজা ভর্তি ট্রলি সহ কলকাতায় গ্রেফতার ওডিশার যুবক। উদ্ধার হওয়া গাঁজা ‘ইদ্দুকি গোল্ড’, না কি মাওবাদীদের মদতে তৈরি হওয়া ওডিশার ‘মালকানগিরি-কন্ধমাল স্পেশ্যাল’, তা পরীক্ষা করে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম ইব্রাহিম শেখ। সে ওডিশার কান্ধামালের বাসিন্দা।
গোয়েন্দা পুলিশের কাছে খবর ছিল যে, ফের দূরপাল্লার বাসে গাঁজা পাচার হচ্ছে কলকাতায়। সেই সূত্রেই লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা বাবুঘাটে দূরপাল্লার বাসগুলিতে শুরু করেন নজরদারি। রবিবার সকালে দেখা যায়, ট্রলি নিয়ে এক যুবককে নামতে। গোয়েন্দাদের টিম তাকে ঘিরে ফেললে দাবি করে, কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছে সে। বাবুঘাটেই ট্রলি ব্যাগটি খোলেন গোয়েন্দারা। ব্যাগে ভরতি জামাকাপড়। কাপড়ের আড়ালেই লুকিয়ে রাখা ছিল বারো কিলো গাঁজা। পুলিশের দাবি, এর আগেও কলকাতায় গাঁজা-সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচার করেছে ইব্রাহিম শেখ নামে ওই যুবক।
গাঁজা পাচারে অভিজ্ঞ ওই যুবককে জেরা করে জানা গিয়েছে যে, পাচারকারীরা এখন ওড়িশা থেকে কলকাতার করিডর ধরেই গাঁজা পাচার করছে। সেই গাঁজা কলকাতার এজেন্টদের হাতে আসার পর পৌঁছে যাচ্ছে মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘুটিয়ারি শরিফের ‘গোডাউনে’। এর পর কখনও বা গাড়ি, আবার কখনও বা অটো করেই তা এসে পৌঁছচ্ছে কলকাতার বিভিন্ন জায়গার সাব এজেন্টদের কাছে। এরপর পুরিয়া করে বিক্রেতাদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে ওই গাঁজা।
এদিকে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে খবর, বহু আগে থেকেই ওড়িশার মালকানগিরি, কোরাপুট, কন্ধমাল, গজপতি, রায়গড়, বারগড়ে জঙ্গল ও পাহাড়ঘেরা জায়গায় গোপনে গাঁজার চাষ করেন কিছু এলাকার বাসিন্দা। এলাকার কৃষকদের মদত জোগায় মাওবাদীরা। তারা কৃষকদের ‘রক্ষা’ করে। তার বদলে গাঁজার প্রত্যেক কিলো পিছু টাকা তোলা নেয় মাওবাদীরা, অভিযোগ এমনই। আবার অত্যন্ত চাহিদাপূর্ণ কেরলের ইদ্দুকি গাঁজা, অথবা তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশেও মাওবাদীদের মদতে চাষ হওয়া গাঁজা ওড়িশা থেকে আসে কলকাতায়। যেহেতু ইব্রাহিম শেখ নিজে কন্ধমালের বাসিন্দা, তাই ওই গাঁজা কন্ধমাল বা মালকানগিরিতে তৈরি হওয়ার পর সরাসরি ইব্রাহিমের মতো মাদক এজেন্টের হাতে পৌঁছয় বলে ধারণা গোয়েন্দাদের। তাকে জেরা করে কলকাতার এজেন্টের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।