নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ সেপ্টেম্বর ।। হায়রে সমাজ! বর্তমান সমাজে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও পুরুষ নারীর সমান অধিকার বাস্তবে তা কঠিন। কেননা বাস্তবে চার দেয়ালের কোনে নির্জন রাস্তায়, খোলা আকাশের নিচে কারোর স্ত্রী, কারোর বোন, কারোর কন্যা, প্রতিনিয়তই জ্বলে, কেউবা সন্তান হইনি বলে অত্যাচারিত হতে হয়,কেউ পেটের ভাত জোগারের জন্য তাদের জ্বলতে হয়। নারী হয়ে জন্ম নেওয়াটা এই সমাজের বুকে পাপ। কিন্তু যারা জ্বালাই তারা ভুলে যায় নারী দেহ থেকে তাদের জন্ম । যে পুরুষ ধর্ষন করে সে ভুলে যায় মাতৃদুগ্ধের কথা ,যে স্বামী অত্যাচার করে পুড়িয়ে মারে তার স্ত্রী কে, সে ভুলে যায় মেয়েটি তার জন্য কত ত্যাগ স্বীকার করে। বলা বাহুল্য আর কিছুদিন পরেই মাতৃবন্ধনায় মাতবে এই সমাজ । তবে বর্তমানে বাস্তবের দূর্গা কে পেটাচ্ছে কিছু কিছু পাষণ্ড। কি ছিলো তার অপরাধ? কেনো অত্যাচার করা হচ্ছে ?
সামান্য লোভ কটা টাকার এতই শক্তি যে মেয়েদের প্রাণের বিনিময় প্রতিনিয়তই পূরণ করতে হয় সেই অভাব। এবারের ঘটনা বিশ্রামগঞ্জ থানার অন্তর্গত নর্জলা এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় আজ থেকে ৪ বছর আগে বিশালগড় থানার অন্তর্গত রাউৎখলার কবিতা বেগমের সাথে সাত পাকে মিলিত হয় বিশ্রামগঞ্জ থানার অন্তর্গত দেলোয়ার হোসেন। বর্তমানে তাদের ৩ বছরের কন্যা সন্তানও রয়েছে একজন। জানা যায় বিবাহের কিছুদিন ঠিক চলছিল, কিন্তু ১ বছর পর থেকে শুরু হয় অশান্তি। দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী কবিতা বেগম অভিযোগ জানায় যে বিয়ের ১ বছর পর থেকে দীর্ঘ ৩ বছর যাবৎ তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন নেশাগ্রস্থ অবস্থায় পণের জন্য কবিতা বেগমের উপর দিনের পর দিন নির্যাতন চালাচ্ছে। অভিযোগ গত চার বছরে ৩ বার দেলোয়ার হোসেনের দ্বারা তার স্ত্রী কবিতা বেগম নির্যাতিত হয়েছে। এমনকি নির্যাতনের পরিমাণ এতটাই ছিল যে আক্রান্ত কবিতা বেগম প্রায় ৩ বার গুরুতর আহত অবস্থায় জিবি হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। এমনকি তখন বিশ্রামগঞ্জ থানায়ও মামলা করা হয়েছিল ওই আক্রান্ত গৃহবধূর পক্ষ থেকে তার স্বামী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে।
কিন্তু অদৃশ্য শক্তির আড়ালে বিশ্রামগঞ্জ থানার পুলিশ পাষণ্ড স্বামী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু পাষন্ড দেলোয়ার হোসেন এখানেই থেমে নেই। অভিযোগ বেশ কিছুদিন ধরে দেলোয়ার তার স্ত্রী কবিতার উপর নির্যাতন চালাচ্ছে যে দেলোয়ারকে যেনো তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দেওয়া হয়। কিন্তু কবিতা বেগমের বাবা একজন দিনমজুর হওয়ায় দেলোয়ারকে ৫০ হাজার টাকা দিতে পারছে না । যার ফলে পাষণ্ড দেলোয়ার তার স্ত্রী কবিতা বেগমের উপর আবার নির্যাতন চালাচ্ছে বেশ কিছুদিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফের একবার বিশালগড় মহিলা থানায় বাধ্য হয়ে কবিতা বেগম তার স্বামী দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। আক্রান্ত কবিতা বেগমের দাবি পুলিশ যেন সুষ্ঠ বিচার করে। তবে ।এই সভ্যতার বুকে এই ঘটনা গুলি লজ্জা জনক। যে সমাজে পনের জন্য নারীদের উপর প্রতিনিয়তই চলছে নির্যাতন। যে সমাজে ঘটা করে পালন করা হয় নারী দিবস, যে সমাজে কৌঁজাগরীর আসন পাতা হয়, যে সমাজের বুকে পন নেবো না পন দেবো না এই কথা গুলি ভাষন দেওয়া হয়। সেই সমাজেই নারীরা প্রতিনিয়ত প্রাণ বিসর্জন দেয় পনের জন্য। এখন দেখার বিষয় বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ কি ভূমিকা গ্রহণ করে।