Buyer-seller meeting program : রাজ্যে আগর নির্ভর বাণিজ্যিক হাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে ক্রেতা বিক্রেতা সাক্ষাৎ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে আগর নির্ভর বাণিজ্যিক হাব গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার৷ বড়মাত্রায় রোজগার তৈরি সহ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথকে সুুগম করবে এই আগর৷ আজ বন দপ্তর আয়োজিত আগরভিত্তিক ক্রেতা বিক্রেতা সাক্ষাৎ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ এদিন আগর পলিসি ২০২১-র আববরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ৷ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানকে সম্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল৷


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরকে কেন্দ্র করে বড়মাত্রায় অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার৷ বিগত দিনে এক্ষেত্রে আন্তরিকতার ঘাটতি থাকলেও বর্তমান সরকার সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগরের বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক পথকে সুুগম করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ আগর গাছ থেকে উপলব্ধ বিভিন্ন উপকরণকে কাজে লাগিয়ে শিল্পক্ষেত্রের বিকাশে পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের৷ আগর নির্ভর শিল্প স্থাপনে শিল্প উদ্যোগীদের বিভিন্নভাবে সহায়তার মাধ্যমে শিল্প স্থাপনে আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরকে কেন্দ্র করে আত্মনির্ভর ত্রিপুরার স্বপ বাস্তবায়নে বিশাল সুুযোগ রয়েছে৷ এই সম্ভাবনাময় দিকটির বিকাশে আন্তরিকতার সঙ্গে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করছে সরকার৷ সুুগন্ধি ও ধূপকাঠি সহ আগর থেকে উপলব্ধ বিভিন্ন উপকরণকে কাজে লাগিয়ে মানুষের রোজগার বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিয়েছে সরকার৷ তার পাশাপাশি স্বসহায়ক দলের মাধ্যমে আগর থেকে প্রস্তুত ধূপকাঠি ও অন্যান্য সহায়ক সামগ্রী তৈরিতে মহিলাদের রোজগার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে৷

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে আগরকে কেন্দ্র করে বিশাল অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুুযোগ থাকলেও আন্তরিকতার অভাবে এই ক্ষেত্রটি উপেক্ষিত ছিলো৷ যে আগরচাষীরা ত্রিপুরাকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে দিতে পারতো তাদের আগর প্রস্তুত দ্রব্যাদির বিক্রিতে আইনী বৈধ সুুযোগ তৈরি করে দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিকতার ঘাটতি ছিলো৷ কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকার এই ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনুধাবন করে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বহু মূল্যবান আগর থেকে প্রস্তুত তেল এবং অন্যান্য উপকরণ বিক্রির সুুযোগ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করায় আশার আলো দেখতে পেয়েছেন আগরচাষীরা৷ যা শুধুমাত্র আগরচাষীদেরই নয় আগামীদিনে ত্রিপুরা এবং জাতীয় অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করবে৷ একটা সময়ে আইনী জটিলতায় প্রক’ত আগরচাষীরা বি’ত হতেন৷ কিন্তু বর্তমানে সঠিক ব্যবস্থাপনায় যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন তারা৷ খুলে যাচ্ছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুুযোগ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত দিনে আগরতলায় থেকেও যারা আগরের সুুগন্ধ ও সমৃদ্ধির সম্ভাবনাকে অনুধাবন করতে পারেননি তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অভাবে এই ক্ষেত্রের বিকাশ উপেক্ষিত ছিলো৷ কিন্তু দিল্লিতে বসেও প্রধানমন্ত্রী এই ক্ষেত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এর বাণিজ্যিক প্রসার ও বিকাশের সুুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন৷ আগরকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিকটি প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করতেই তৎক্ষণাৎ আগ্রহের সহিত এর সমৃদ্ধির পথকে সুুগম করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন৷
এরফলে জাতীয় ক্ষেত্র শুধু নয় আন্তর্জাতিক বাজারেও ত্রিপুরার আগরের ও আগর থেকে প্রস্তুত উপকরণের বিপণনের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে৷ এরজন্য প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল বলেন, আগর থেকে প্রস্তুত তেল তরল সোনার মতো বহু মূল্যবান৷ আগর নির্ভর বড়মাত্রায় অর্থনীতির সম্ভাবনা রয়েছে৷ আর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এই ক্ষেত্রের বিকাশের মাধ্যমে রোজগার বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা নেবে রাজ্য সরকারের আনা আগর পলিসি ২০২১৷ এই পলিসি রাজ্যের অর্থনৈতিক ভাগ্য বদলে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷ প্রক’তির ভারসাম্য বজায় রেখে আগর নির্ভর বাণিজ্যিক ক্ষেত্রের বিকাশের পাশাপাশি বড়মাত্রায় আগর গাছ রোপণের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন তিনি৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য রাজ্যের কাছে রোল মডেল হিসেবে উঠে আসবে ত্রিপুরা৷ স্থায়ী রোজগার তৈরিতে ভবিষ্যতে এই পদক্ষেপ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে৷ বিগত দিনে রাজ্যে বিপুল পরিমাণে আগর গাছ থাকলেও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে বড়মাত্রায় বাণিজ্যিক সুুযোগ থেকে বি’ত হয়েছে আগরচাষীরা৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব প্রধানমন্ত্রীকে আগর নির্ভর অর্থনীতির সম্ভাবনাময় দিকটি অবহিত করায় তার গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, রাবার সহ উত্তর পূর্বা’লের রাজ্যগুলির সম্ভাবনাময় বিভিন্ন দিকগুলির বিকাশের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং রোজগার তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ত্রিপুরার রাবারকে কাজে লাগিয়েও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ সুুগম হচ্ছে৷

অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী এন সি দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরায় বড়মাত্রায় বনভূমি যা একটা অংশের মানুষের জীবিকার উৎস৷ আগর থেকে অর্থনৈতিক বিকাশ এবং রোজগার তৈরির লক্ষ্যে এই কর্মসূচির মাধ্যমে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বলেন, বর্তমান সরকারের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগরের বাণিজ্যিকীকরণের সুুযোগ সম্পসারিত হয়েছে৷ আগরচাষীদের উৎসাহিত করা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগরের উৎপাদন বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায় বলেন, আগর নির্ভর শিল্প সম্ভাবনার সুুযোগ বর্তমানে উন্মোচিত হয়েছে৷ তিনি আগামীদিনে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগরের গুণগতমান বজায় রেখে বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন সহ বিভিন্ন সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব কুমার অলক আশা প্রকাশ করেন এই আগর ক্ষেত্রকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের বাণিজ্যিক সম্ভাবনার সুুযোগ বাড়বে৷ আগর থেকে উপলব্ধ প্রতিটি অংশকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি৷ তার পাশাপাশি এর থেকে প্রস্তুত বিভিন্ন উপকরণের বাণিজ্যিকীকরণের উপরও গুরুত্ব আরোপ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন এই ক্ষেত্রের বিকাশে মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতা এবং সদিচ্ছা আগর নির্ভর শিল্পের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নেবে৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পিসিসিএফ ডি কে শর্মা, বিজয় কুমার, এডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল, ফরেন ট্রেড গভর্নমেন্ট অব ইণ্ডিয়া, অনিল মোথা, সি আই আই নর্থ ইস্ট টাস্ক ফোর্স, অভিজিৎ বোরা, চেয়ারম্যান সি আই আই নর্থ ইস্ট কাউন্সিল প্রমুখ৷