Sushmita Dev can be the state trinamool leader : সন্তোষ কন্যা সুষ্মিতা দেব রাজ্য তৃণমূলের কান্ডারি হতে পারেন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ ছক অনেক আগেই তৈরী ছিল৷ সেই মোতাবেক মমতা ত্রিপুরা সম্পর্কে মোটামুটি সিদ্ধান্ত মাথায় রেখেছেন৷ সুষ্মিতা দেবের রাজনৈতিক প্রাজ্ঞতা যথেষ্টই আছে বলা যায়৷ সন্তোষ দেব কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন দীর্ঘদিন৷ ত্রিপুরায় লোকসভা নির্বাচনে দুইবার জিতেছেন তিনি৷ সেই সুবাদে সন্তোষ কন্যা ত্রিপুরা সম্পর্কে অনেক বেশী ওয়াকিবহাল আছেন৷ ত্রিপুরার মাঠ-ঘাট গ্রাম-গঞ্জ এই সন্তোষকন্যার অনেকটাই দখলে৷ সুষ্মিতা মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী ছিলেন৷ তিনি রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত৷ ত্রিপুরায় তৃণমূলের সভানেত্রী পদে সুষ্মিতার দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে ছক অনেকটাই চূড়ান্ত হয়ে আছে বলে তৃণমূলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গিয়েছে৷ কংগ্রেসে থাকা অবস্থায় সুষ্মিতা ত্রিপুরার মাটি চষে বেড়িয়েছেন এবং কংগ্রেসের কর্মী নেতাদের সাথে তাঁর সম্পর্ক অনেকটাই সুহৃদয় ছিল৷ ফলে, তৃণমূল ত্রিপুরায় সুষ্মিতাকে দলের রাজ্য কমিটির সভানেত্রী পদ নিয়োগ করলে দল অনেকটাই উজ্জীবনি শক্তি পেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা৷


ত্রিপুরায় বিশ্বস্ত এবং দক্ষ জনপ্রিয় নির্ভরযোগ্য নেতা না পাওয়াতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া এই মুহুর্তে নিতে চাইছেন না৷ আপতত বঙ্গ থেকেই দল চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া আছে৷ আর এজন্যই পশ্চিমবঙ্গ থেকে নেতারা রাজ্যে ছুটে আসছেন৷ মিটিং মিছিল করছেন এবং তৃণমূলে যোগদানের সংখ্যাও বাড়াতে সচেষ্ট রয়েছেন৷ তৃণমূল এমন একজনকে সভানেত্রী বা সভাপতি হিসাবে বসাতে চান যিনি যথেষ্ট নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাহায্য পাবেন এবং সরকারি আরও সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে একজন সাংসদ এর যে সুবিধা রয়েছে তা অন্য কারও নেই৷ সুষ্মিতা সাংসদ হলে তাঁকে রাজ্য চষে বেড়াতে বা কর্মসূচিতে যোগ দিতে তাঁকে হয়ত অনেকটাই সাহায্য করবে৷ এইসব বিভিন্ন দিক চিন্তা করে সুষ্মিতাকে দলের রাজ্য কমিটির সভানেত্রী পদে বসাতে মমতা অনেকটাই এগিয়ে আছেন বলে সূত্রের খবর৷


প্রশ্ণ উঠতে পারে সুষ্মিতা বহিঃরাজ্যের বাসিন্দা৷ ত্রিপুরার নেতাদের বঞ্চিত করে এই সিদ্ধান্ত কার্য্যকর করলে প্রতিক্রিয়া হতে পারে কি না৷ কিন্তু, একথা তো ঠিক সন্তোষ মোহন দেব অসমের বাসিন্দা হয়েও ত্রিপুরা থেকে দুইবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন এবং কেন্দ্রের ভাল মন্ত্রিত্ব পান৷ ত্রিপুরায় বহিরাগতরাই রাজ্য শাসনের মানদন্ড তুলে নিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত আছে৷ নৃপেন চক্রবর্তীও ত্রিপুরার বাসিন্দা ছিলেন না৷ তিনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজনীতি করতে এসেছিলেন ত্রিপুরায়৷ শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন এবং এখনও ত্রিপুরার মানুষের মনে রয়েছেন৷ পশ্চিমবঙ্গ থেকে এখানে এসেছেন বহু নেতা৷ সুষ্মিতা দেবের সভানেত্রী পদে আসীন হওয়া এই প্রশ্ণ ধোপে টিকবে না৷ তাছাড়া, তৃণমূলে বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবির যারা একসময় তৃণমূলে ছিলেন তারা ১৮ নির্বাচনের মুহুর্তে দলবল সহ বিজেপিতে যোগ দেয়৷ সেই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী আবারও তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ করে৷ শর্ত আরোপ করে৷ তবু মুহুর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল করে পাল্টি খেয়ে যায়৷ ফলে, তৃণমূল রাজ্য কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সেখানে থমকে যায়৷ নেতাদের অনেকেই জনস্বার্থের চাইতে নিজেদের স্বার্থকে বেশী গুরুত্ব দেন৷
কংগ্রেসেরে টিকিটে জিতে তারা তৃণমূলে যোগ দেন, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে৷ মানুষের ভোটের কোন গুরুত্ব দিলেন না৷ এই রাজনীতি বেশীদিন টিকে না৷ সুষ্মিতা কংগ্রেসে থেকে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব বিসর্জন দিতে রাজী নন বলেই তৃণমূলে গেলেন৷ শিলচরে কংগ্রেসের ভোট তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে৷ বিজেপি বড় অংশে থাবা বসিয়েছে৷ মুসলিম ভোটে থাবা বসিয়েছে৷ ফলে কংগ্রেস বড় বিপাকে৷ এটা সুষ্মিতা বুঝে গেছেন শিলচলরকে ভিত্তি করে তার রাজনৈতিক জীবন বিসর্জন দিতে চান না৷


তাই তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে নিজেকে ত্রিপুরার জন্য সমর্পিত করতে চান৷ ভবিষ্যতে তিনি রাজ্যসভায় পাঠানো হবে৷ ত্রিপুরায় তৃণমূলের অবস্থানকে সুদৃঢ় করবে৷ এটা মমতার দৃঢ় ধারনা৷ এই অবস্থায় রাজ্যে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপি অনেক বেশী সক্রিয়৷ কারণ সিপিএমের চাইতেও তৃণমূলকে তারা অনেক বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে৷ তার কারণ ১৫ এবং ১৬ তারিখ আবেদন করা সত্বেও মহামিছিলের অনুমতি পায়নি৷ এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট আলোড়ন সৃষ্টি করেছে৷ নির্বাচনের আরও দেড় বছর বাকি আছে৷ মনে হয় ভোটের রাজনৈতিক তৎপরতা এখনই শুরু৷ বাতাস বইতে শুরু করেছে৷ তার সাথে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে৷ একদিকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে আবার অন্যদিকে তৃণমূলেও লোক যোগ দিচ্ছে৷ মানুষ কোন দিকে, রাজ্যের মানুষ কি চায়৷ আজ তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক সংগ্রাম কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে তা এখন প্রশ্ণের মুখে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *