নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ সেপ্ঢেম্বর৷৷ সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে ত্রিপুরা সরকার যথেষ্ট আন্তরিক৷ তবে, অর্থের যোগানে দিল্লির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ তাই, কিছুটা সময়ের প্রয়োজন রয়েছে৷ আজ সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে আদালত অবমাননা মামলায় ত্রিপুরা সরকার এ-বিষয়ে মুচলেকা দিয়েছে৷ সাথে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে না ত্রিপুরা সরকার৷ সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে উচ্চ আদালতের রায় মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ আদালত চার সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছে৷
আজ ত্রিপুরা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ এ কুরেশী এবং বিচারপতি এস জি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলায় শুনানি হয়েছে৷ আগামী ৪ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির ধার্য্য হয়েছে৷ এ-বিষয়ে সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী সমিক দেব বলেন, আজ ত্রিপুরা সরকার মুচলেকা দিয়ে দুইটি বিষয়ে জানিয়েছে৷ প্রথমত, ত্রিপুরা সরকার হাই কোর্টের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানাবে না এবং উচ্চ আদালতের রায় মেনে নেবে৷ দ্বিতীয়ত, সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টিতে নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ কারণ, বিরাট সংখ্যায় শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে অর্থের যোগানের প্রশ্ণে কেন্দ্রের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে৷ তাঁর কথায়, নিয়মিতিকরণে নির্দিষ্ট স্কীম তৈরী করার জন্য কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন পড়বে৷ তাই, ত্রিপুরা সরকার আদালতের কাছে আরও সময় চেয়েছে, বলেন তিনি৷
এদিন উচ্চ আদালতে সরকারী আইনজীবী দেবালয় ভট্টাচার্য বলেন, সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণের রায়ের সাপেক্ষে ত্রিপুরা সরকার ইতিমধ্যে তাঁদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছে৷ নিয়মিতকরণের প্রশ্ণে এনসিটিই নির্দেশিকা খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ তবে, অর্থের যোগানে কেন্দ্রের সহায়তার জন্য ত্রিপুরা সরকার আরও সময় চেয়েছে৷ আদালত চার সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে ত্রিপুরা সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কি উদ্যোগ নেওয়া হবে জানাতে বলেছে৷
প্রসঙ্গত, প্রায় ৫২০০ স্নাতক এবং অস্নাতক শিক্ষক অধুনা সর্ব শিক্ষা তথা বর্তমান সমগ্র শিক্ষা প্রকল্পে ২০০৯ সাল থেকে কর্মরত রয়েছেন৷ তাঁরা চাকুরীর প্রথম দিন থেকে স্থির বেতনে কাজ করছেন৷ দীর্ঘ বছর ধরে বঞ্চনার অভিযোগ এনে নিয়মিতকরণের আর্জি নিয়ে ত্রিপুরা হাই কোর্টে দুইটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন সর্ব শিক্ষার শিক্ষকরা৷ ওই মামলায় উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি এ এ কুরেশী এবং বিচারপতি এস জি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণের রায় দিয়েছিলেন৷ ছয় মাসের মধ্যে ওই আদেশ কার্যকরের রায় দিয়েছিল আদালত৷ শুধু তাই নয়, তাঁদের ৫ বছর কার্যকাল সমাপ্ত হওয়ার পর থেকে নিয়মিত বেতনক্রমের সুবিধা এবং পেনশনেও তাঁর প্রতিফলনের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত৷
কিন্ত, ত্রিপুরা সরকার এখনো তাঁদের নিয়মিতকরণে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি৷ ফলে, সর্ব শিক্ষার শিক্ষকরা ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেছেন৷ আজ ওই মামলায় শুনানি শেষে আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সর্ব শিক্ষার শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে ত্রিপুরা সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ একত্রে পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষকদের নিয়মিতকরণে আর্থিক দিক বিবেচনায় কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক৷

