Priority has been given to bring transparency : রাজ্যে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও পরিষেবা প্রদানে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ সেপ্ঢেম্বর৷৷রাজ্যে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন ও পরিষেবা প্রদানে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে৷ এখন থেকে ঘরে বসেই বিভিন্ন পরিষেবার সুুযোগ এবং পরামর্শ পাবেন নাগরিকগণ৷ আজ ইন্দ্রনগর আইটি ভবনে রাজ্যে সিএম হেল্পলাইন নম্বর ১৯০৫ পরিষেবার সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরই নাগরিকদের বিভিন্ন অভাব অভিযোগ সরাসরি যেন মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেন সেই লক্ষ্যে জনতার দরবারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো৷


কিন্তু কোভিড অতিমারী পরিস্থিতিজনিত কারণে এই উদ্যোগ স্থগিত রাখতে হয়৷ পরিস্থিতির সাথে সাযুজ্য রেখে অন্য আঙ্গিকে নাগরিকগণ যেন তাদের অভিমত, অভিযোগ ও পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে নিয়ে আসতে পারেন সেই লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী হেল্পলাইন নম্বরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে এখন থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাগরিকরা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সম্পর্কে জানার সুুযোগ যেমন পাবেন তেমনি অন্যান্য পরিষেবা সংক্রান্ত তথ্য জানারও সুুযোগ পাবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই হেল্পলাইনের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়ারও সুুযোগও থাকবে৷ নাগরিকদের পরামর্শগুলিকে আগামীদিনে সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গিতে কার্যকর করার ক্ষেত্রে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে সরকার৷ বর্তমানে সরকারি পরিষেবা প্রদানে স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে৷ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে ই-পরিষেবার উপর৷


মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জাগ্রত ত্রিপুরা অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিষেবা অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে৷ তার পাশাপাশি ১২০৪টি সিএসসি সেন্টারের মাধ্যমে একদিকে যেমন রোজগার সৃষ্টি হয়েছে অন্যদিকে গ্রামের মধ্যেই বিভিন্ন সহায়তা মেলার সুুযোগ তৈরি হয়েছে৷ এই অনলাইন পরিষেবাগুলি চালুর ফলে বিভিন্ন প্রকল্পের সুুযোগ সুুবিধা সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে সুুবিধাভোগী পর্যন্ত৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের নাগরিকদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার৷ রাজ্যের অধিকাংশ মানুষই এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন৷ এরফলে রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী যুব যোগাযোগ যোজনার মাধ্যমে চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোন প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ আইটি ক্ষেত্রের উন্নয়নের মাধ্যমে স্টার্টআপ সহ একাধিক কর্মসূচি রূপায়ণের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার৷
সপ্তাহব্যাপী স্টার্টআপ কর্মসূচির ফলে রাজ্যের উদ্যোগীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ দেশের উন্নত শহরগুলির মতো ত্রিপুরাতেও এখন স্টার্টআপের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে৷

মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, পরিষেবা প্রদানে হয়রানি হাস ও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যেই সিএম হেল্পলাইন নম্বর বিশেষ সহায়ক ভূমিকা নেবে৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পুলিশি ব্যবস্থার সাথে যুক্ত ইমার্জেন্সি রেসপন্স সাপোর্ট সিস্টেম (ইআরএস)-এর মাধ্যমে কোভিড পরিস্থিতিতে ব্যাপক সহায়তা মিলেছে৷ যার সুুফল পেয়েছেন রাজ্যের এবং রাজ্যের বাইরে আটকে পড়া নাগরিকরাও৷ বর্তমান ৪৭টি পরিষেবা ই-ডিস্ট্রিক্ট বা ই-ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনলাইন প্রদান করা হচ্ছে৷ এখনও পর্যন্ত ১৪১টি পরিষেবা হ্যাণ্ড টু হ্যাণ্ড ডিজিটাইজড করা হয়েছে৷ রাজ্য প্রশাসনের কাজে আরও স্বচ্ছতা আনা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৮টি দপ্তর ও অফিসে ই-পরিষেবা চালু করা হয়েছে৷ জাগ্রত ত্রিপুরার মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প সম্পর্কে জানার সুুযোগ রয়েছে৷ এর মধ্যে ১৯৩টি স্কিম অন্তর্ভক্ত রয়েছে৷ আইটি স্টার্টআপের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি ও শিল্পোদ্যোগে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে৷ রাণীরবাজারের রতিশ দেবনাথ ও ইন্দ্রনগর এলাকার চন্দন ভৌমিক মুখ্যমন্ত্রী হেল্পলাইন নম্বরে তাদের অভিমত জানানোর জন্য ফোন করলে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য শোনেন৷


রাজ্যের জনগণ যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের অভাব অভিযোগগুলি জানাতে পারেন তারজন্যই সিএম হেল্পলাইন নম্বর ১৯০৫ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ প্রাথমিকভাবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই পরিষেবার সুুযোগ পাওয়া যাবে৷ এই সেন্টার থেকে অভিমতগুলি গ্রহণ করার পর ইন্টিগ্রেটেড টাস্ক মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে৷ সংশ্লিষ্ট দপ্তর সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷ কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সে সম্পর্কে অভিযোগকারীকে অবগত করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী কার্যালয় থেকে গোটা প্রক্রিয়ার উপর নিয়মিত মনিটরিং করা হবে৷ প্রাথমিকভাবে ধলাই জেলায় এই পরিষেবা শুরু হলেও আজ থেকে রাজ্যব্যাপী এই কর্মসূচির সূচনা হয় মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে৷ জনগণের সাড়ার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে এই পরিষেবাকে দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা করার পরিকল্পনা রয়েছে৷ অভিমত বা অভিযোগ জানানো ছাড়াও নাগরিকগণ সরকারের কাছে উন্নতিকল্পে তাদের মূল্যবান পরামর্শ রাখার সুুযোগ পাবেন৷ তার পাশাপাশি এই হেল্পলাইনের মাধ্যমে সরকারি নতুন বা চলমান বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে তথ্য জানার সুুযোগ থাকবে৷ এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান সচিব জে কে সিনহা, সচিব তনুশ্রী দেববর্মা, আইটি অধিকারের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা তড়িৎ কান্তি চাকমা প্রমুখ৷