BRAKING NEWS

চিটফান্ডের টাকা ফেরত চেয়ে মানুষের রোষের শিকার মানিক সরকার, কৃতকর্মের ফল, বলল বিজেপি

আগরতলা, ১০ মে (হি.স.)৷৷ রোজভ্যালি সহ চিটফান্ড-এ গচ্ছিত আমানত ফেরত চেয়ে আজ সোমবার ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতাকে কাছে পেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শান্তিরবাজারবাসী৷ মূলত, আক্রান্ত দলীয় কর্মীর খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ বিধায়ক বাদল চৌধুরী, বিধায়ক সুধন দাস ও সিপিএম নেতৃবৃন্দ৷ বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়েছেন৷ তাতে, তাঁরা দৈহিকভাবে আক্রান্ত হওয়ার সাথে গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে৷ ওই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা ত্রিপুরায় জঙ্গলের শাসন কায়েম হয়েছে বলে শাসক দলকে নিশানা করেছেন৷ তবে, সিপিএম-এর বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকদের দীর্ঘ সময়ের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছে বলে দাবি করেন আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ৷


মন্ত্রী রতনলালের সাফ কথা, ক্ষমতায় থাকার সময় কর্মীদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়েছিলেন সিপিএম নেতৃবৃন্দ৷ তাই আজ তাঁদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে৷ বিজেপি-র প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যের সাফ কথা, আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়৷ সাথে তিনি যোগ করেন, চিটফান্ড-এ টাকা রাখার জন্য সিপিএম নেতৃবৃন্দরা উৎসাহিত করেছেন৷ এখন তার ফল ভোগ করছেন৷


সোমবার বেলা আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ শান্তিরবাজার পোস্টফিস সংলগ্ণ এলাকায় সিপিআইএম সমর্থিত কর্মী নরেন্দ্র দাসের বাসভবনে যান বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ কিছুদিন আগে দুষৃকতকারীরা শান্তিরবাজারে কয়েকজন সিপিআইএম সমর্থিত কর্মীর বাসভবনে গিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করেছিল৷ ওই ঘটনায় দলীয় কর্মীদের খোঁজ নিতে যান মানিক সরকার৷ তিনি শান্তিরবাজারে প্রবেশের পথে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েন৷ সকলে হাতে কালো পতাকা নিয়ে চিটফান্ডে গচ্ছিত আমানত ফেরত চাই এবং গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকেন৷ সমস্ত কিছু উপেক্ষা করে মানিকবাবু নরেন্দ্র দাসের বাসভবনে প্রবেশ করেন৷ সেখানে গিয়ে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন৷ পরবর্তী সময় শান্তিরবাজারে অসংখ্য লোকজন জড়ো হওয়ার ফলে অন্যান্য সিপিআইএম কর্মীদের বাসভবনে যাবার সিদ্ধান্ত বাতিল করেন তিনি৷


আজ তাঁর সাথে সফরে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিধায়ক বাদল চেঁধুরী, প্রাক্তন বিধায়ক বাসুদেব মজুমদার, বিধায়ক সুধন দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্ববৃন্দ৷
এদিকে, নরেন্দ্র দাসের বাড়ি থেকে আগরতলা আসার উদ্দ্যেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন৷ তাঁদের ওপর আচমকা আক্রমণ শুরু করেন৷ তাঁদেরকে উদ্দ্যেশ্য করে ছোঁড়া হয় ডিম, ঝাঁড়ু, জোতা সহ অন্যান্য সামগ্রী৷ ভাঙচুর করা হয় গাড়ি৷ তাতে আহত হন প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী৷


এদিন শান্তিরবাজার থেকে ফিরে সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা বিস্তারিত জানান এবং ত্রিপুরায় জঙ্গলের শাসন কায়েম হয়েছে বলে দাবি করেন৷ তিনি আজকের ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং সমস্ত কিছু পূর্ব পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন৷ মানিকবাবুর কথায়, বিভিন্ন রাজ্যে ভরাডুবিতে বিজেপি টের পেয়েছে, তাঁদের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে৷ তাই, কমিউনিস্টদের ওপর আক্রমণ নেমে এসেছে৷ তিনি অনেকটা উস্কানির সুরে বলেন, আমার রক্তের বিনিময়ে ত্রিপুরায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে সাধুবাদ জানাব৷


এদিকে, মানিকবাবুদের ওপর হামলার ঘটনা তাঁদের কৃতকর্মের ফল বলে দাবি করেছেন বিজেপি প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য৷ তাঁর কথায়, চিটফান্ডে টাকা রাখার জন্য মানিক বাবুরাই উৎসাহ দিয়েছেন৷ এখন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ তাঁদের কাছে প্রতিকার চাইছেন৷ ফলে, মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়ছে৷ তিনি বলেন, ইতিপূর্বেও মানিক সরকার এভাবেই ক্ষোভের মুখোমুখি হয়েছেন৷ তবে, আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত হবে না৷ তাঁর কথায়, চিটফান্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রামাণ্য তথ্য নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হন৷
এদিন আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, ক্ষমতায় থাকার সময় সিপিএম-এর নেতৃবৃন্দ অনেকের কাছ টাকা হাতিয়েছেন৷ চাকরি এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন৷ এখন সুযোগ-সুবিধাও দিতে পারছেন এবং অর্থও ফিরিয়ে দিচ্ছেন না৷ তাই, মানুষ তাঁদের দেখলেই ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন৷ তারই বহিঃপ্রকাশ আজ শান্তিরবাজারে দেখা গিয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *