রানাঘাট, ১২ এপ্রিল (হি. স.) : রানাঘাটের সভায় বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করে ফের সাম্প্রদায়িক তাস খেললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শীতলকুচির ঘটনা টেনে তিনি বলেন, ‘‘রাজনীতি মানে করে খাওয়া নয়। রাজনীতি মানে গুলি চালানো যায় না।’’
আমার খুব দুঃখ। কোচবিহারের শীতলকুচিতে যে ভাবে ভোটের লাইনে যে ভাবে গুলি চালিয়েছে। বিজেপি-কে কেউ ক্ষমা করবেন না। ওরা হিন্দু-মুসলিম করে। মানুষ মারা গেলে হিন্দু –মুসলিম হয়? মানুষের রক্তে হিন্দু-মুসলমান হয়? প্রথমে নিজেদের একটা লোককে খুন করেছে। এরা পারে না এমন কাজ নেই। ওদের একজন মহিলা সাংসদ নিজের গাড়ি নিজে ভাঙছিলেন। এরা নিজের লোককে নিজে মেরে দিতে পারে। তার পর হিন্দু-মুসলিম করবে।“
মমতা বলেন, “নদিয়া উন্নয়নের জায়গা, শান্তির জায়গা বলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা ছদ্মবেশী ধর্ম করি না।“ হুঙ্কারের সুরে তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পরই তো শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে আমি তদন্ত করবই। দেখব, কে কোথায় মিটিং করেছে। ঠিক ব্যবস্থা নেব।’ এরপরই অমিত শাহের নাম না করে তির্যক মন্তব্য করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমাকে রাজবংশী নিয়ে কথা বলছে। নিজেদের দলের কর্মীদেরই নিজেরা মারে। লজ্জা করে না। রাজবংশী মানুষজন আমার পরিবার। তাঁরা জানে আমি কী করেছি।’
কোচবিহার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, এরা নাকি রাজনীতি করবে! রাজনীতি করতে গেলে কথাবর্তা শেখা দরকার। বুঝে কথা বলা দরকার। রাজনীতি মানে করে খাওয়া নয়। বিজেপি মনে করছে রাজনীতি মানে গুলি করার অধিকার দেওয়া, এটা রাজনীতি নয়। চারটি লোককে ভোটের লাইনে গুলি করে মেনে নিল। তার পরেও বলছে ৮ জনকে গুলি করা উচিত ছিল। সবাইকে বুকে গুলি করে দাও। এরা অদ্ভূত। একটা রাজনৈতিক দল বুক দেখে গুলি চালিয়ে দিতে বলছে। এদের নিষিদ্ধ করা উচিত। যারা গুলি চালানোর পক্ষে সওয়াল করে তাদের রাজনৈতিক ভাবে নিষিদ্ধ করা উচিত।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি মিথ্য কথা বলেছে আমাদের নিয়ে, টাকা ছড়িয়েছে। তাই গতবার এখানে হেরেছিলাম আমরা। ভাই-বোনেরা বলুন গুলি চালানোর জন্য ভোট দেবেন, নাকি গুলি চালানোর জন্য ভোট দেবেন না? রানাঘাটের মানুষকে বলব, আপনারা নিশ্চয়ই চান, আমরা শান্তিতে থাকি। গুলি করে মানুষ মারতে যেন না হয়। আমি ২১ জুলাই দেখেছি। আমার ১৩ জন শহিদ হয়েছিল। গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে বলছে ৪ জনের জায়গায় ৮ জনকে মারা উচিত। এই বিজেপি-র নেতা, এরা দেশের নেতা হবে। এদের আপনারা ভোট দেবেন? এরা নিজের গাড়ি নিজে ভাঙবে, নিজে নিজের চরিত্রহনন করে ভোট চাইবে। তাই বলছি কখনও কখনও নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকে নিতে হয়। আজকের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত বাংলাকে বাঁচানো।