BRAKING NEWS

চব্বিশ ঘণ্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন

কলকাতা, ১২ এপ্রিল (হি.স.):   নির্বাচনী প্রচারে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন ! চব্বিশ ঘণ্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি জানিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন। তৃণমূলনেত্রীর একাধিক মন্তব্যের ফলে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করেছে কমিশন। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে সোমবার রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তৃণমূলনেত্রী।

কমিশনের তরফে কড়া ভাষায় জানানো হয়েছে, আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ (৩) ও ৩ (এ) ধারা এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬, ১৮৯ এবং ৫০৫ ধারা ভঙ্গ করেছেন মমতা। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গত ৭ এপ্রিল সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ভাগ না করার জন্য মমতা যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তাতে নোটিশ জারি করা হয়েছিল। দু’দিন পর তিনি যে উত্তর দিয়েছিলেন, তা সন্তোষজনক ছিল না। বরং বেছে বেছে, আংশিকভাবে উত্তর দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেইসঙ্গে চিঠিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও একপ্রস্থ অভিযোগ তুলেছিলেন। তা নিয়েও যে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল, তাতেও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে যান মমতা।

কিন্তু কী বলেছিলেন মমতা? গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের সভায় নাম না করে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) আব্বাস সিদ্দিকিকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। ‘শয়তান ছেলে’ হিসেবে উল্লেখ করে মমতা বলেছিলেন, ‘হাতজোড় করে বলছি যে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না। মনে রাখবেন, বিজেপি এলে সমূহ বিপদ আছে। সবচেয়ে বেশি (বিপদ) আপনাদের।’ সেই মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছিলেন মমতা। যিনি প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তারইমধ্যে ৭ এপ্রিল কোচবিহারের জনসভা থেকে মমতা বলেছিলেন, ‘যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, তাহলে একদল মহিলা তাদের ঘেরাও করে রাখবেন। আর অপর দল ভোট দিতে যাবেন। শুধু ঘেরাও করে রাখলে হবে না। আপনাদের ভোট নষ্ট করবেন না।’

কমিশন জানিয়েছে, মমতা যে মন্তব্য করেছেন, তা অত্যন্ত উস্কানিমূলক এবং প্ররোচনামূলক। তার জেরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি হতে পারত। যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সেই মন্তব্যের নিন্দার করার পাশাপাশি কড়া ভাষায় সতর্ক করা হয়েছে মমতাকে। সেই সঙ্গে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর থাকার সময় এইরকম মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার ‘পরামর্শ’ দিয়েছে কমিশন।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পঞ্চম দফার ভোটের আগে ধাক্কা খেল তৃণমূল। মঙ্গলবার বারাসত, বিধাননগর, হরিণঘাটা ও কৃষ্ণগঞ্জে সভা করার কথা ছিল মমতার। কিন্তু কমিশনের নিষেধাজ্ঞার পর সেই সভা করতে পারবেন না তিনি। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, মমতার প্রচারের নিষোধজ্ঞা উঠবে মঙ্গলবার রাত আটটার পর। আর প্রচারের সময়সীমা এগিয়ে আনায় পঞ্চম দফায় প্রার্থীদের প্রচার শেষ করতে হবে বুধবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটের মধ্যে। তার ফলে পঞ্চম দফার আগে হাতে বেশি সময় পাবেন না মমতা। তবে এই সিদ্ধান্তের জেরে তৃণমূলের ক্ষতি হল নাকি লাভই হল, সেই বিতর্ক অবশ্য থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *