BRAKING NEWS

বাইদ্যাদীঘিতে বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষে আহত ছয়, পুড়ল দোকান ও ট্রিপার ট্রাক

নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ৩০ অক্টোবর৷৷ বিজেপিতে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন বাইদ্যাদীঘি এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে৷ উত্তেজিত বিজেপি কর্মীরা বাইদ্যাদীঘি বাজারে দুইটি দোকান ও একটি ট্রিপার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে৷ দুই গোষ্ঠীতে সংঘর্ষের জেরে অন্তত ছয় জন আহত হয়েছেন৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ এই ঘটনা কংগ্রেস ও সিপিএমের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি৷

আপাতত এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যারা পরিবেশ বিষিয়ে তুলতে চাইছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন গোলাঘাটি কেন্দ্রের বিধায়ক বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা৷


অভিযোগে জানা গিয়েছে, বিজেপির সিপাহীজলা জেলা সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি সাহেব মিয়ার সাথে দুই যুবকের বচসা হয়েছে৷ ওই সময় সাহেব মিয়া দুই যুবককে শারীরিক নিগৃহ করেছেন বলে অভিযোগ৷ তাতে, প্রতিশোধ নিতে সন্ধ্যায় বাইদ্যাদীঘি বাজারে ওই দুই যুবকের ঘনিষ্ঠরা সাহেব মিয়াকে পাল্টা মারধর করেছেন৷ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাহেব মিয়ার ঘনিষ্ঠরা সংঘবদ্ধভাবে বাইদ্যাদীঘি বাজারে হামলা চালায়৷ তখন কসবা এলাকার স্থানীয় জনগণও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন৷ দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ মারাত্মক রূপ নেয়৷ উত্তেজিত হয়ে সংঘর্ষকারীরা বাইদ্যাদীঘি বাজারে দুইটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রিপার গাড়িতেও তারা আগুন ধরিয়ে দেয়৷


এদিকে, সংঘর্ষের জেরে স্থানীয় দোকানদার ভয়ে পালিয়ে যান৷ অনেকে দোকান বন্ধ না করেও বাইক, বাইসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যান৷ কিন্তু, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন স্থানীয় জনগণও সংঘর্ষের জেরে আক্রান্ত হয়েছেন৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু দুইটি দোকান ও ট্রিপার গাড়িটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি৷ দমকল বাহিনী আগুন আয়ত্বে আনলেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷


এদিনের সংঘর্ষের জেরে সাহেব মিয়া সহ ছয় জন আহত হয়েছেন৷ জানা গেছে, সাহেব মিয়ার বড় ভাই জুজু মিয়া, শঙ্কর সাহা, জীবন চন্দ্র শীল, উত্তম দেবনাথ এবং প্রদীপ দেবনাথ আহত হয়েছেন৷ তাদেরকে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে সাহেব মিয়া ও জুজু মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাদের জি বি হাসপাতালে স্থানান্তর করেছে৷ বাকি চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷


এদিকে, সাহেব মিয়ার বোনের অভিযোগ, কয়েকজন যুবক তার ভাইয়ের গাড়ি আটকে তাকে প্রচণ্ড গালিগালাজ করেছে৷ তখন সাহেব মিয়া গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ জানালে ওই যুবকরা তাকে বেধড়ক পিটিয়েছে৷ তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার বড় ভাই জুজু মিয়াও আহত হয়েছেন৷ সাহেব মিয়ার বোন জানান, আক্রমণকারী যুবকদের পরিচয় তিনি জানেননা৷ কিন্তু, ওই ঘটনায় তিনি থানায় মামলা দায়ের করবেন৷


এই সংঘর্ষের খবর পেয়ে সিপাহীজলা জেলা পুলিশ সুপার কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্যী, বিশালগড় এসডিপিও উত্তম বণিক ও জম্পুইজলা এসডিপিও ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ এদিকে, এই সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিজেপি নেতা তথা বিশালগড় কেন্দ্রের বিজিত প্রার্থী নিতাই চৌধুরী, বিজেপি সিপাহীজলা জেলা সভাপতি অঞ্জন পুরকায়স্ত, গোলাঘাটি মণ্ডল সভাপতি সুশান্ত সেনগুপ্ত ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ নিতাইবাবু এই সংঘর্ষের পেছনে কংগ্রেস ও সিপিএমের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন৷ তবে, এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য তিনি আবেদন জানিয়েছেন৷


এদিকে, এই সংঘর্ষের ঘটনার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে৷ ফলে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যারা পরিবেশ বিষিয়ে তুলতে চাইছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন গোলাঘাটি কেন্দ্রের বিধায়ক বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা৷ তিনি সকল অংশের জনগণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন৷ পাশাপাশি, নদীলাগ এলাকার সিপিএমের ক্যাডার বাহিনী বাইদ্যাদীঘি বাজারে সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার অপপ্রয়াস বলে দাবি করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *