BRAKING NEWS

এবার নজিরবিহীন প্রচার, রাজ্যে টানা সাতদিন থাকবেন অমিত শাহ, দু’দিনই আসবেন মোদি, কেন্দ্রীয় নেতাদের দিয়েই প্রচারে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা বামফ্রন্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জানুয়ারি৷৷ আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে উন্মাদনা সারা রাজ্যেই৷ এরই মাঝে পরিবর্তন এবং প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি ও বামফ্রন্ট৷ তাই প্রচারে ঝড় তুলতে চাঁদের হাট বসাতে চলেছে গেরুয়া শিবির৷ বিজেপি সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুই দফায় জনসভায় অংশ নেবেন৷ পাশাপাশি, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি টানা সাতদিন রাজ্যে অবস্থান করবেন বলে চূড়ান্ত হয়েছে৷ এছাড়াও একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রচারে অংশ নেবেন৷ সম্ভবত, ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে বিজেপি সম্মান রক্ষার লড়াই হিসেবে বেছে নিয়েছে৷ কারণ, দেশের একটি প্রান্তিক রাজ্যে নির্বাচনকে ঘিরে প্রধান জাতীয় দলের সর্বভারতীয় সভাপতির টানা সাতদিনের অবস্থান নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর দুই দফায় রাজ্য সফর এক্ষেত্রে যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ বলেও দাবি রাজনৈতিক মহলের৷ অন্যদিকে, শাসকদল সিপিএম প্রচারে পুরনো মুখদেরই আনছেন৷ সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাত এবং বৃন্দা কারাতকে বাদ দিলে অধিকাংশই বঙ্গ ব্রিগেডের নেতৃত্বরা রাজ্যে বামফ্রন্টের প্রচারে কামান দাগবেন৷

বিজেপি সূত্রের খবর, দলীয় প্রার্থীরা ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন৷ পাশাপাশি, ৩ এবং ৪ ফেব্রুয়ারি সারা রাজ্যে একসাথে বাড়ি বাড়ি প্রচার করবেন দলীয় প্রার্থীরা৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বিজেপির তারকা প্রচার শুরু হবে৷ ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি উত্তর জেলায় ৬টি বিধানসভা এলাকায় রোড শো করবেন৷ ৫ ফেব্রুয়ারি সদর জেলার ৬টি বিধানসভা এলাকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং ৬ ফেব্রুয়ারি বাকি ৬টি বিধানসভা এলাকায় কেন্দ্রীয় মহাসড়ক ও ভূতল পরিবহন মন্ত্রী নিতীন গডকরি রোড শোতে অংশ নেবেন৷ আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ৯ ফেব্রুয়ারী ধলাই জেলায় ৬টি বিধানসভা এলাকায় রোড শো করবেন৷ এদিকে, ১০ ফেব্রুয়ারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এবং কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী মুখতার আববাস নকভি সিপাহীজলা জেলায় বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় রোড শোতে অংশ নেবেন৷

সূত্রের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর সূচি চূড়ান্ত হয়েছে৷ আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টায় শান্তিরবাজারে এবং বিকেল সাড়ে ৩টায় কৈলাসহরে তিনি জনসভায় অংশ নেবেন৷ পরবর্তী পর্যায়ে ১৫ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রী সদর জেলায় জনসভায় সম্বোধন করবেন৷ সূত্রের আরো দাবি, ঐসময় প্রধানমন্ত্রী দুইদিনের সফরে রাজ্যে আসছেন৷ তাঁর সাথে অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও থাকবেন৷

সূত্র অনুসারে জানা গেছে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সরব প্রচারের অন্তিম দিন পর্যন্ত টানা রাজ্যে অবস্থান করবেন৷ সূত্রের বক্তব্য, মাঝে হয়তোবা স্বল্প সময়ের জন্য  তিনি মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে প্রচারে যাবেন৷ বিজেপির তারকা প্রচারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দুই দফায় রাজ্য সফর এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতির টানা অবস্থান নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ ১৯৮৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ১৮ জন মন্ত্রী এরাজ্যে ঘাঁটি গড়েছিলেন৷ কিন্তু, ঐসময় কংগ্রেস সভাপতি দীর্ঘ সময় ধরে রাজ্যে ঘাঁটি গড়েননি৷ প্রধানমন্ত্রীও একদিনের জন্য রাজ্যে এসেছিলেন৷ এদিকে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে মঙ্গলবার থেকে সরব প্রচারের অন্তিম দিন পর্যন্ত রাজ্যে টানা অবস্থান করবেন বিজেপির নির্বাচন প্রভারী তথা আসামের মন্ত্রী ড হিমন্তবিশ্ব শর্মা৷

এছাড়াও বিজেপির প্রচারে অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জে পি নাড্ডা, দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহনওয়াজ হোসেন, কেন্দ্রীয় উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী জুয়াল ওরাম, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রীয়৷ সাথে থাকছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ ফলে, ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে বিজেপির এই উদ্যোগ দলের সম্মান রক্ষার লড়াইয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷

এদিকে, বামেদের প্রচারে পুরনোদেরই প্রাধান্য দেখা যাবে৷ মূলত, সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্যরাই প্রচারে কামান দাগবেন৷ জানা গেছে, সোমবার থেকে সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্যরা রাজ্যে টানা প্রচারে অংশ নেবেন৷ সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, হান্নান মোল্লা, সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত, বৃন্দা কারাত, সুভাষিনি আলি এবং মহম্মদ সেলিম বামেদের প্রচারে আসছেন৷ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অন্তিম সভা হবে৷ এছাড়া, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার টানা প্রচার চালিয়ে যাবেন৷ বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে জনসভা সমাপ্ত হওয়ার পর মানিক সরকার নিজ বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারে মনোনিবেশ করবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *