BRAKING NEWS

রাজ্যে সন্ত্রাসবাদে সাফল্য পেয়েছি, নারী নির্যাতনে কেন পাব না ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুলাই৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের গভীর

শনিবার আগরতলায় স্বামী দয়ালানন্দ বিদ্যানিকেতনের নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ ছবি নিজস্ব৷

হতাশা প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে৷ শুধু তাই নয় নারী সংক্রান্ত অপরাধকে সন্ত্রাসবাদের মতো বিষয়ের সাথেও তুলনা করলেন তিনি৷ মেয়েদের উপর অত্যাচারের সংখ্যা একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য নিজেদের ঘর থেকেই সচেতনতার কাজ শুরু করতে হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন৷ তিনি হতাশার সুরে বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়া গেলে এই কাজেও কেন আমরা সফল হতে পারব না৷ শনিবার আগরতলায় স্বামী দয়ালানন্দ বিদ্যানিকেতনের নব নির্মিত দ্বিতল ভবনের দ্বারোদঘাটন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথা বলেন৷
তিনি বলেন, শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে নজর দিতে হবে৷ মন প্রাণ ঢেলে দিয়ে ছেলে মেয়দের মানুষ করার কাজে ব্রতী হতে হবে৷ মনে রাখতে হবে শিক্ষক শিক্ষিকারা হচ্ছেন সমাজেরও শিক্ষক৷ দেশ কোন দিকে যাচ্ছে তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন৷ কারণ এই ছেলে মেয়েরা সঠিকভাবে গড়ে ওঠলে এক সময় তাঁদের হাতেই দেশ পরিচালনায় দায়িত্ব ন্যস্ত হয়৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক শিক্ষিকারা হচ্ছেন চুম্বকের মত৷ তারাই মূলত ঃ ছাত্র ছাত্রীদের পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন৷ ছাত্র ছাত্রীদের উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা গেলে তাদের অনুসরণ করে অনেক বেশী ছাত্র ছাত্রী সংশ্লিষ্ট সুকলে ভর্তি হতে পারবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখনকার ছাত্র-ছাত্রীদের সুকলে বেতন দিতে হয়না, প্রায় সবাই পাঠ্য পুস্তক পাচ্ছে, একশ জনের মধ্যে প্রায় আশি জনই কোন না কোন স্টাইপেন্ড পাচ্ছে৷ কেউ কেউ পোশাকও পেয়ে থাকে, উপরন্ত অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সবাই সুকলেই খাবার পেয়ে থাকে৷ এরপর, সবাই একশ নম্বরের মধ্যে শুধু পাশ করার নম্বরই পাবে৷ কেন? একশর মধ্যে অন্ততঃ পঞ্চাশ নম্বর কেন পাবেনা? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পুরো বই পড়তে হবে৷ শুধু নোট বই পড়লেই চলবেনা৷ এই বিষয়টির দিকে নজর দিতে হবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের শুধু ভাল নম্বর পেলেই চলবেনা৷ তাদের ভাল মানুষ হিসাবে গড়ে ওঠতে হবে৷ ধর্ম-বর্ণের ঊধের্ব ওঠে সমাজের জন্য কাজ করতে হবে৷ এই শিক্ষা সুকল থেকেই হতে হবে৷ আমাদের ছেলে মেয়েরা মানুষের কল্যাণে ব্রতী হউক এটা আমরা সবাই চাইব৷ তারা এমন কোন কাজ করবেনা যাতে মানুষের ক্ষতি হয়৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শতকরা হিসাবে ত্রিপুরায় শিক্ষা ক্ষেত্রে যে অর্থ ব্যয় করা হয়ে থাকে তা অন্য কোন রাজ্য করেনা৷ কেন্দ্রীয় সরকার তো এর ধারে কাছেও যায়না৷ মানব সম্পদ বিকাশের লক্ষ্যে এই রাজ্যে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী নজর দেয়া হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যে সাংসৃকতিক পরিমন্ডলে গুণগত অনেক পরিবর্তন এসেছে৷ রক্তদানের মত বৃক্ষরোপণেও আমরা কেন দেশের নজর কেড়ে নেবনা? এখন আমরা এই বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে ভাবছি৷ মেয়েদের উপর অত্যাচারের সংখ্যা একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য নিজেদের ঘর থেকেই সচেতনতার কাজ শুরু করতে হবে৷ তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়া গেলে এই কাজেও কেন আমরা সফল হতে পারবনা?
প্রধান অতিথির ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী বলেন, সাক্ষরতার হারে ত্রিপুরা আজ দেশের মধ্যে শীর্ষে৷ একজন মানুষও যাতে এই রাজ্যে নিরক্ষর না থাকেন এবং একজন শিশুও যাতে বিদ্যালয়ের বাইরে না থাকে তার জন্য রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে৷ পড়াশুনার গুণগত মান আরও বাড়ুক এটা আমরা চাই৷ এজন্য গুণগত শিক্ষার উপর সবচেয়ে বেশী জোর দেয়া হচ্ছে৷ শিক্ষাক্ষেত্রে রাজ্যে যে পরিবেশ তৈরী হয়েছে তার সুযোগ গ্রহণ করার জন্য তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় বলেন, দ্বিতল ভবনের দ্বারোদঘাটন হওয়ায় এই সুকলের দীর্ঘদিনের এক প্রত্যাশা আজ পূরণ হলো৷ আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ডঃ প্রফুল্লজিৎ সিনহা তার ভাষণে স্বামী দয়ালানন্দ বিদ্যানিকেতনের ফলাফল আগামী দিনে আরও ভাল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষন দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার দে৷ অনুষ্ঠানে সভাপিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রশাসক প্রবীর কুমার মল্লিক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *