মানুষের কাঁধে বোঝা চাপিয়ে দেশকে নিলামে তোলার ব্যবস্থা চলছে, অভিযোগ তপন সেনের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারী৷৷ দেশকে নিলামে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা চলছে৷ ভাল করা হবে বলে কার্যত যা হচ্ছে তাতে দেশবাসীর কাঁধে আরো বেশি করে বোঝা চাপছে৷ আর এই বিষয়টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সমাজে বিষ ছড়ানোর কাজ চলছে৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিট্যুর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভার সাংসদ তপন সেন এভাবেই বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন৷

এদিন তিনি উদ্বেগের সুরে বলেন, দেশে বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷ দেশকে নিলামে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার ভালো করবে বলে কার্যত যা করছে তাতে সাধারণ মানুষের কাঁধে আরো বেশি করে বোঝা চাপছে৷ সম্প্রতি সংসদে পেশ হওয়া বাজেটে সেটা প্রতিফলিত হয়েছে৷ তার দাবি, শ্রমজীবী মানুষের ওপর ব্যাপক আক্রমণ করা হচেছ৷ তাদের স্বার্থে আইন সংশোধনীতে যে প্রস্তাব আনা হয়েছে তাতে ৭৫ শতাংশের উপর শ্রমিক এই আইনের বাইরে থাকবে৷ বাজেট বত্তৃণতায় বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে৷ ফলে, এই পরিস্থিতি শ্রমজীবি মানুষের কাছে একটি চ্যালেঞ্জের মত৷ তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিজের এবং দেশের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে৷

এদিন তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অগ্রগতি যে হিসেব দিচ্ছে তা মিলছে না৷ তাঁর বক্তব্য, জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭৫ শতাংশ বলা হচ্ছে৷ অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেব অনুযায়ী জিডিপি বৃদ্ধির হার ৬৫ শতাংশ৷ তবে, তিনি মনে করেন এই হিসেব আরো অনেক কম৷ এদিন তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বেসরকারিকরণের দিকেই ঝোঁক বেশি৷ দেশে এফডিআই আসছে৷ তাতে নতুন নতুন কোম্পানিগুলি বিদেশি কোম্পানি অধিগ্রহণ করছে৷ এর ফলে বহু শ্রমিক কাজ হারাচ্ছেন৷

নোট বাতিলের পদক্ষেপে দেশে ৮ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ পাশাপাশি বলেন, স্বরোজগারিদের জীবিকা শেষ হয়ে গেছে৷ বহিরাগত শ্রমিকরা প্রায় আড়াই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন৷

এসমস্ত বিষয় নিয়ে এদিন তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিস্থিতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিভেদকামী শক্তিকে উৎসাহ দিচ্ছে৷ তাঁর বক্তব্য, সম্প্রতি সমাজে বিভিন্ন বিভেদকামী প্রবণতা তৈরি হচ্ছে৷ এর মাধ্যমে সমাজে বিষ ছড়ানোর কাজ চলছে৷ কিন্তু তিনি মনে করেন, এই সবকিছু করে কেন্দ্রীয় সরকার পার পেয়ে যাবে বলে যে স্বপ্ণ দেখছে তা পূরণ হবে না৷ তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরাতেও এই ধরনের চক্রান্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷
তাই, রাজ্যে সিট্যুর সম্মেলনে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ অশুভ শক্তি ত্রিপুরাতেও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, এজন্য সকলকে সতর্ক ও সচেতনভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে৷ তিনি জানান, সম্মেলনে একে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে সিট্যু আগামীদিনে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সিট্যুর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত জানান, সম্মেলনে সংগঠনের নতুন কমিটি তৈরি হয়েছে৷ সভাপতি পদে মানিক দে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে শংকর প্রসাদ দত্তকে পুনরায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ সংগঠনের অফিস বিয়ারার হিসেবে মোট ২২ জন রয়েছেন৷ এছাড়া কার্যকরী কমিটিতে রয়েছেন ৪৮ এবং সাধারণ পরিষদে রয়েছেন ১২১ জন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *