নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারী৷৷ রাজ্য বাজেটে খুব একটা চমক থাকবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন৷ প্রথা অনুযায়ী ইংরেজি বছরের প্রথম অধিবেশন রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই শুরু হয়৷ সেই অনুযায়ী শুক্রবার রাজ্যপাল বিধানসভায় ভাষণ দেবেন৷ বুধবার বিএসি’র(বিজনেস এডভাইজারি কমিটি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷ ঐ বৈঠকে বাজেট অধিবেশনের সূচী নির্ধারিত হবে৷ ধারণা করা হচ্ছে আগামী সোমবার রাজ্য বিধানসভার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷ অর্থ দপ্তর সূত্রে খবর, কেন্দ্রের বরাদ্দের যা অবস্থা তাতে উন্নয়ন কাজ চালু রেখে চমকপ্রদ বাজেট পেশ করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন দপ্তরের কর্তারা৷
অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা জানিয়েছেন, কেন্দ্রের অর্থ বরাদ্দের যা লক্ষণ তাতে রাজ্যের অর্থনৈতিক দুর্দাশায় ফুটে উঠেছে৷ বরাদ্দ বাড়িয়ে দেখানো হলেও গত অর্থবছরের তুলনায় অনেকটাই কম বলে তিনি দাবি করেন৷ মূলত, সংসদে সাধারণ বাজেট থেকেই অনুমান করে রাজ্য বাজেটের প্রস্তাব পেশ করা হয়৷ কিন্তু যোজনা কমিশন থাকাকালীন প্রতিবছরই কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বাড়ত৷ এখন তার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে৷ রেল সাধারণ বাজেটের অঙ্গ হয়েছে৷ ফলে, কেন্দ্র থেকে অর্থের যেমন সংস্থান হবে তার মধ্যেই সাধ্য অনুসারে রাজ্যের জন্য কাজ করা হবে বলে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন৷
সূত্রের খবর, বরাদ্দ অর্থের হিসেব নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের উপর চাপ রেখেছে৷ রেগা প্রকল্পে জিও ট্যাগিং সারা রাজ্যে করে উঠতে পারছে না রাজ্য সরকার৷ যার কারণে রেগা প্রকল্পেও অর্থ বরাদ্দে কোপ পড়ছে৷ সূত্রের দাবি, জিও ট্যাগিং না করা হলে রেগার বরাদ্দ অর্থে কাঁটছাট করবে কেন্দ্র৷ এদিকে, সূত্রটি জানিয়েছে, বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের শংসাপত্র সঠিক সময়ে কেন্দ্রের কাছে জমা পড়ছে না৷ যার কারণে বরাদ্দ অর্থও সঠিকভাবে কেন্দ্র রাজ্যকে দিচ্ছে না৷ কেন্দ্রীয় সরকারের স্পষ্ট নির্দেশিকা প্রকল্প রূপায়ণের শংসাপত্র সময়ের মধ্যে না মিললে একটি টাকাও দেওয়া হবে না৷ এছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের কাছে বরাদ্দ অর্থের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব দিতে বলেছে৷ সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্র যেভাবে বরাদ্দ অর্থের হিসেব নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর সমস্যায় পড়েছে৷
তবে, রাজ্য সরকারের বক্তব্য, কেন্দ্র প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থ দিচ্ছে না৷ অনেক প্রকল্পে এমন শর্ত আরোপ করছে যা রাজ্যের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্য হলেও কেন্দ্রীয় সরকার বাজেট বরাদ্দ থেকে কাটছঁাট করছে৷ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার জানিয়েছেন, এবছর প্রায় ১৫০০ থেকে ১,৭০০ কোটি টাকা কম দিয়েছে৷ যার কারণে উন্নয়ন কাজ চালু রাখার ক্ষেত্রে অর্থলগ্ণিকারী সংস্থার কাছ থেকে রাজ্যকে ঋণ নিতে হচ্ছে৷
অর্থ বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের বক্তব্যে মতানৈক্যের জেরে এবার রাজ্য বাজেটে কোন ধরনের চমক থাকার সম্ভাবনা নেই বলেই ধারণা৷