নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারি৷৷ নড়েচড়ে বসল প্রশাসন৷ ফরমালিন ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী৷ পাশাপাশি মেনে নিয়েছেন বিভিন্ন খাদ্যের গুণমান যাচাই করার যথেষ্ট পরিকাঠামো থাকলেও তার ব্যবহার হয়নি রাজ্যে৷ ২০০৬ সালে ফুড সিকিউরিটি এন্ড স্ট্যান্ডার্ড এ্যাক্ট রাজ্যে চালু হলেও দশ বছর ধরে কোন কাজই হয়নি৷ তাই এখন খাদ্য সামগ্রী গুণমান যাচাই করার জন্য কঠোরভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷
গত কয়েকদিন ধরে ফরমালিন ব্যবহার নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়ে আসছে৷ এরই জেরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তড়িঘড়ি বৈঠকের ডাক দেন৷ মঙ্গলবার মহাকরণে মুখ্য সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণের অধিকর্তা, পুর নিগমের হেলথ অফিসার এবং এনআরএইচএম’র প্রোগ্রাম অফিসারদের নিয়ে ফরমালিন ব্যবহার বন্ধ সহ এসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠক করেছেন৷ এই বৈঠকেই তিনি জানতে পেরেছেন রাজ্যে পরিকাঠামোগত দিক দিয়ে কোন ঘাটতি না থাকলেও সদিচ্ছার অভাবে খাদ্যসামগ্রীর গুণমান যাচাই করা হচ্ছে না বহুদিন ধরে৷ তাই তিনি খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই করার জন্য একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ দ্রুততার সাথে কাজ শুরু করতে হবে, সেই নির্দেশও দিয়েছেন৷ ১৫ দিন বাদে এই পদক্ষেপের পর্যালোচনা করা হবে বলে তিনি আধিকারিকদের বলেছেন৷
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুরুতেই সংবাদমাধ্যমকে এযাবতীয় খবর প্রকাশিত করার জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন৷ সাথে তিনি জানান, এদিনের বৈঠকে সমস্ত আধিকারিকদের ফরমালিন ব্যবহার বন্ধ সহ খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই করার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে৷ সাতদিনের মধ্যে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে৷ ১৫ দিন পর এই পদক্ষেপের পর্যালোচনা বৈঠক হবে৷ তাতে যে সাফল্য উঠে আসবে এর ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ এদিন তিনি জানান, আপাতত রাজধানী আগরতলা দিয়ে কাজ শুরু করা হবে৷ এরপরে জেলাস্তরেও খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই করা হবে৷
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এদিন জানান, বাংলাদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে যে সমস্ত মাছ আসছে সেগুলিতে ফরমালিন রয়েছে৷ কিছু মাছ বিমানে করেও আসছে৷ তাতেও ফরমালিন রয়েছে৷ রাজ্যে খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই করার জন্য পরিকাঠামোগত দিক দিয়ে কোন ঘাটতি নেই৷ কিন্তু এর সঠিক ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি জানান, খাদ্য দপ্তর এবং পুর নিগমকে সাথে নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই করার কাজ করবে৷ তাতে, মাছ, শুকনো মাছ, ফলমূল, মিষ্টি, বেকারিজাত খাদ্য সামগ্রী, মশলা, চিপস ইত্যাদির গুণমান যাচাই করা হবে৷
এদিন তিনি জানিয়েছেন, এই আইনে কেউ ধরা পড়লে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদন্ড হতে পারে৷ তাই তিনি জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন৷ এদিকে, সূত্র অনুসারে জানা গেছে, রাজ্যে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বিভিন্ন খাদ্যপণ্য এবং পানীয় ও মশলা প্রস্তুত করে বাজারজাত করছে৷ সেই পণ্যগুলিতে প্রচুর ভেজাল সামগ্রী মেশানো আছে বলেও সূত্র অনুসারে জানা গেছে৷ খাদ্য সামগ্রীর গুণমান যাচাই প্রক্রিয়ায় সঠিক ভাবে শুরু হলে ঐ সংস্থার সমস্ত খাদ্য পণ্য ভেজাল তা প্রমাণিত হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে৷ এদিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, হোটেল এবং রাস্তায় স্টলে করে যে ফাস্টফুড বিক্রি করে হচ্ছে সেগুলিরও গুণমান যাচাই করা হবে৷
2017-02-08