BRAKING NEWS

ফের বাবা ও ছেলের মধ্যে স্নায়ুর লড়াই চরমে, অখিলেশকে সর্বভারতীয় সভাপতি ঘোষণা করায় সপা থেকে বহিস্কার রামগোপাল যাদব, কোপ পড়ল কিরনময় নন্দ ও নরেশ অগ্রবালের উপর, কঠোর মুলায়ম

akhilesh-mulayamলখনউ, ১ জানুয়ারি, (হিস)৷৷ উত্তরপ্রদেশে সপা’র নাটক থামছেই না৷ আবারও বাবা ও ছেলের মধ্যে স্নায়ুর লড়াই চরমে উঠেছে৷ সকালেই অখিলেশ যাদবকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ঘোষণা করেন রামগোপাল যাদব৷ সাথে শিবপাল যাদব এবং অমর সিংকে দল থেকে ছেটে ফেলা হয়৷ অন্যদিকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার সাথে সাথে রামগোপাল যাদবকেই ফের ৬ বছরের জন্য বহিস্কার করে দেন মুলায়ম৷ পরে, অখিলেশের সভায় যোগ দেওয়ায় সপা’র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরনময় নন্দ এবং দলের আরেক শীর্ষ নেতা নরেশ অগ্রবালকেও বহিস্কার করেন নেতাজি! মুলায়মের মতে, অখিলেশ যে সভার আয়োজন করেছে তা দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অসাংবিধানিক৷ তাই ঐ সভায় গৃহিত সমস্ত সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা দিয়ে ফের একবার কঠোর পদক্ষেপ নেন সপা প্রধান৷ পাশাপাশি আগামী ৫ জানুয়ারী জরুরীভিত্তিক দলীয় কনভেনশনের ডাক দেন তিনি৷
রবিবার লখনউ-র জাতীয় সম্মেলনে ৫০০০ দলীয় নেতার সামনে অখিলেশ যাদবকে সর্বভারতীয় সভাপতি ঘোষণা করেন রামগোপাল যাদব৷ পাশাপাশি শিবপাল যাদবকে দলে উত্তরপ্রদেশ সভাপতির পদ থেকে হঠিয়ে দেওয়া হয়৷ শুধু তাই নয়, অমর সিংহকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়৷ মুলায়মকে করা হয় দলের মার্গদর্শক৷ অখিলেশ পন্থীদের এই সিদ্ধান্তের ফলে আবার নাটকীয় মোড় নিল সপার পারিবারিক দন্দ্ব৷
দু’দিন আগেই জাতীয় সম্মেলনের ডাক দিয়েছিলেন রামগোপাল৷ লখনউতে আয়োজন করা হয় দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক৷ সেই বৈঠকে দলীয় কর্মীদের যোগ দিতে বারণ করেছিলেন মুলায়ম সিং যাদব৷ সেই মর্মে কর্মীদের একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু, বারণকে তোয়াক্কা না করে রামগোপাল যাদবের ডাকা বৈঠকে যোগ দেন প্রায় সকলেই৷ বৈঠকে যোগ দিতে রবিবার সকাল থেকেই ভিড় বাড়ছিল৷ বেলা বাড়তে রামগোপাল যাদবের সঙ্গে সেখানে হাজির হন অখিলেশ যাদব৷ সঙ্গে ছিলেন নরেশ আগরওয়ালও৷ সেখানেই অখিলেশের হাতে দলের পূর্ণ দায়িত্ব তুলে দেন রামগোপাল৷
জাতীয় সম্মেলনের এই সিদ্ধান্ত দলে মুলায়মের কর্তৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার সামিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ এদিন বৈঠকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রামগোপাল যাদব বলেন, ‘‘নেতাজির (মূলায়ম সিং) নাম করে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন শিবপাল যাদব৷ তাই রাজ্য সভাপতির পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করে দেওয়া হোক৷ আর দলের অন্দরে বিরোধ তৈরি করার জন্য অমর সিংকে দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হোক৷’’ এদিকে দলে ভাঙন ধরানোর জন্য মুলায়ম ঘনিষ্ঠ অমর সিং ও কাকা শিবপাল যাদবকে দায়ি করেছেন অখিলেশও৷ তিনি বলেন, ‘‘নেতাজির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চোখে পড়লে ছেলে হিসেবে ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খুলে দেওয়া আমারই দায়িত্ব৷ আমাদের কাছে নেতাজি আজও সবার ঊধের্ব৷
এদিকে, অখিলেশের সভায় সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড় দেখে দল থেকে সরে দাঁড়ানো শ্রেয় বলে মনে করেন শিবপাল যাদব৷ সপা’র রাজ্য সভাপতির পদে তিনি আর থাকতে চাইছেন এই মর্মে মুলায়ম পত্র পাঠান শিবপাল৷ তবে, মুলায়ম শিবপালের আবেদনে সাড়া দেবেন কিনা তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি৷ তবে, এদিনের অখিলেশের সভা যে মেনে নেননি তা বুঝাতে কসুর রাখেননি৷ সপা’র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দকে পাঠানো চিঠিতে তাঁর সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে মুলায়ম বলেন, অখিলেশের ডাকা সম্মেলনে যা ঘটেছে, তা দল বিেেরাধী কার্যকলাপের সামিল৷ দলীয় সংবিধানের ধারা অনুযায়ী, সম্মেলনটি সর্বভারতীয় সভাপতি ডাকেননি৷ তা জানা সত্বেও প্রবীণ নেতা হয়েও তাতে যোগ দেন কিরণময় নন্দ৷ একইভাবে সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য নরেশকেও বহিস্কার করা হয়৷
উত্তরপ্রদেশে এদিন দিনভর যে রাজনৈতিক নাটক মঞ্চস্থ হল, তাতে বাবা-ছেলের সম্পর্কে শৈত্য আসলেও পারদ আবার চড়েছে বলেই মনে হচ্ছে৷ কারণ, এদিন অখিলেশের সভায় সপা’র অধিকাংশ হেভিওয়েট নেতারা টিপু’র প্রতিই আনুগত্য প্রকাশ করেছেন৷ শুধু তাই নয়, যাদবকূলে সবচেয়ে প্রভাবশালী হিসেবে মুলায়মের বদলে অখিলেশই এখন এগিয়ে রয়েছে৷ তাতে নেতাজি’র চটে লাল হওয়া স্বাভাবিক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ ফলে, পারিবারীক গৃহযুদ্ধ উত্তরপ্রদেশকে আবারও রাজনৈতিক অচলাবস্থার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *