BRAKING NEWS

ম্যালেরিয়া নিয়ে সাবধানি হলেও দপ্তরের কর্মী আধিকারীকদের ভূমিকায় অশান্তিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

BADAL HEALTHনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ মে৷৷ ম্যালেরিয়া নিয়ে রাজ্য সরকার অতি সাবধানি হলেও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারীকসহ কর্মীদের নিয়ে চরম অশান্তিতে রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী৷ ম্যালেরিয়ার খোঁজ খবর নিতে গন্ডাছড়া সফরে গিয়ে এসডিএমও-কে নিজের দায়িত্ব কর্তব্য সঠিক ভাবে পালন করার জন্য হুশিয়ারী দিয়েছেন তিনি৷ সোমবার মহাকরণে তিনি জানান, গন্ডাছড়া এসডিএমও’র বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বহু অভিযোগ দপ্তরের কাছে এসে পৌঁছেছে৷ গন্ডাছড়া হাসপাতালে গিয়ে এসডিএমও’র নানা দূর্বলতা এবং গাফিলতি স্বচক্ষে দেখেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানান, খুবই নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ কায়েম হয়েছে গন্ডাছড়া হাসপাতালে৷ হাসপাতালের শয্যার চাদরগুলি পর্যন্ত ভিষণ নোংরা৷ অথচ আলমারীতে নতুন এবং কাচানো চাদর রয়েছে৷ সেগুলি পাল্টানোর লোক থাকলেও কেউ সেই দায়িত্ব পালন করছেন না৷ গন্ডাছড়া সফরে গিয়ে পর্য্যালোচনা বৈঠকে তিনি এই ধলাই জেলার সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক এবং আধিকারীকদের কড়া ভাষায় জানিয়েছেন কাজে কোন ধরনের গাফিলতি এবং অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না৷ হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিক সময়ে উপস্থিত থাকতে হবে৷ বিশেষ করে তিনি বিভিন্ন স্বাস্থকেন্দ্র এবং উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি আশা কর্মী এবং এমপিডব্লিওদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে যে গুরুতর অভিযোগ উঠে আসছিল সেই বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা এখন থেকে নিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি ভিলেজ কমিটির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেছেন কোন আশা কর্মী এবং এমপিডব্লিওরা কাজে গড়হাজির হলে তার হিসাব রাখতে হবে৷ মাসের শেষে তাদের সেই হিসাব অনুযায়ী বেতন ও সাম্মানিক ভাতা কেটে নিতে হবে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আশা কর্মী এবং এমপিডব্লিওদের বিরুদ্ধে জনপ্রতিনিধিরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছিলেন৷ তাদের মধ্যে কাজে না যাওয়ার এক প্রবণতা জন্মেছে৷ এসডিএমও এবং সিএমওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আশা কর্মী ও এমপিডব্লিওদের মধ্যে যারাই কাজে আসবে না তাদরে বেতন ও সাম্মানিক ভাতা কেটে নেওয়ার জন্য৷
এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ম্যালেরিয়া রাজ্যে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে৷ এক তথ্য তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, গত জানুয়ারী থেকে গতকাল পর্যন্ত অসংখ্য জ্বরের রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷ তবে তাদের সকলের রক্তের নমুনায় ম্যালেরিয়া পাওয়া যায়নি৷ তিনি জানান, জানুয়ারীতে ৩৬১ জন, ফেব্রুয়ারীতে ২৭৬ জন, মার্চে ৩২২ জন, এপ্রিলে ৪০৮ জন এবং চলতি মাসের গতকাল পর্যন্ত ৫৬১ জন জ্বরের রোগী ধলাই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে৷ এদের মধ্যে জানুয়ারীতে ৫ জন, ফেব্রুয়ারীতে ৪ জন, মার্চে ৫ জন, এপ্রিলে ১২ জন এবং চলতি মাসের গতকাল পর্যন্ত ৩৫ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত বলে চিহ্ণিত হয়েছে৷ চলতি মাসের এখন পর্যন্ত ৪ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ধলাই জেলায় মারা গিয়েছে৷ এদের মধ্যে মনুঘাট ব্লকে একজন, গঙ্গানগরে একজন, ছাওমনুতে একজন এবং কুলাই জেলা হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়েছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশরাই কম বয়সের৷ এদিকে, তিনি জানিয়েছেন, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও আগামীদিনে কোন বড় বিপত্তি ঘটলে তা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য দপ্তর৷ প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার আর ডি কিট যথেষ্ট পরিমানে মজুত রাখা হয়েছে৷ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কলকাতা থেকে বিমানে করে আরও আর ডি কিট আনা হবে৷ এদিকে তিনি ম্যালেরিয়ার হাত থেকে বাঁচচে সকলকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ জ্বর হলেই সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন৷ এদিনের, পর্যালোচনা বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য যুগ্ম অধিকর্তা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা, স্থানীয় বিধায়ক ললিত ত্রিপুরা, ধলাই জেলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার এবং মহকুমা শাসক অফিসের পদস্থ আধিকারীকরা এবং রইস্যাবাড়ি, গন্ডাছড়া, ডম্বুরনগর ও গঙ্গানগর ব্লকের ভিলেজ কমিটির চেয়ারম্যান প্রমুখ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *