নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ জানুয়ারি৷৷ উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিমল সিনহা হত্যা মামলায় ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে রাজ্য প্রশাসনে রীতিমতো দৌড়ঝাপ চলছে৷ ফলে, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেই অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে আলোচনা হবে বলে মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে৷
বিমল সিনহা হত্যা মামলায় ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করার জন্য রাজ্য সরকারকে ২৯ ফেব্রুয়ারি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে উচ্চ আদালত৷ সে বিষয়ে কিভাবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে আগামীকালের মন্ত্রিসভার বৈঠকে৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতের কাছে পরবর্তী বিধানসভা অধিবেশন পর্যন্ত রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে সময় চাইতে পারে৷ অথবা উচচ আদালতে এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার আবেদন জানাতে পারে৷ কয়েকদিন আগেই রাজ্য বিধানসভা অধিবেশন সমাপ্ত হয়েছে৷ ফলে বিশেষ অধিবেশনের ডাক দিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে রাজ্য সরকারকে, নয়তোবা পরবর্তী বিধানসভা অধিবেশন পর্যন্ত সময় চেয়ে নিতে হবে উচ্চ আদালতের কাছে৷
বিধানসভা সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৯ ফেব্রুয়ারির আগে এক দিনের জন্য বিধানসভা অধিবেশন বসতে পারে৷ ঐ অধিবেশনে রাজ্য সরকার ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট পেশ করতে পারে৷ তবে, এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে৷
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ৩১শে মার্চ রাজ্যের তদানিন্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিমল সিনহা ও তাঁর ভাই উগ্রপন্থীদের গুলিতে নৃশংসভাবে খুন হন৷ ঐ হত্যা মামলায় রাজ্য সরকার ১৯৯৮ সালের ৬ জুন ইউসুফ কমিশন গঠন করে৷ কমিশন তার তদন্ত রিপোর্ট ২০০০ সালের ৩১ জানুয়ারী রাজ্য সরকারের কাছে জমা দেয়৷ এরপর থেকে এই রিপোর্ট আর প্রকাশ করা হয়নি৷ বহুবার এই নিয়ে বিধানসভাতেও বিরোধী দলের সদস্যরা রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবী জানিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন৷ অবশেষে ২০১৫ সালের ১১ আগষ্ট প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী কল্যাণী রায় উচ্চ আদালতে বিমল সিনহা হত্যা মামলা সংক্রান্ত ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন৷ এই মামলায় গত ১১ জানুয়ারী উচ্চ আদালত রাজ্য সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট প্রকাশ করার জন্য নির্দেশ দেয়৷ ফলে, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২৯ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে রাজ্য সরকারকে ইউসুফ কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে৷
এক্ষেত্রে কিভাবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে এনিয়ে চিন্তিত রাজ্য প্রশাসন৷ তাতে ২৯ ফেব্রুয়ারীর আগেই পুনরায় রাজ্য বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল৷ তবে, পরবর্তী বিধানসভা অধিবেশনে রিপোর্ট প্রকাশের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করা হলে পারিপার্শ্বিক দিক খতিয়ে দেখে আদালতে তার সম্মতি মিলতে পারে বলেও আইনী বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা৷ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার বিষয়েও চিন্তা ভাবনা করছে৷ তাতে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রয়োজন হবে না৷
এদিকে, আগামীকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের আরেক প্রস্থ ডিএ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে৷
2016-01-19