বাকসা (অসম), ২৭ এপ্রিল (হি.স.) : লকাডাউনের জেরে অতি কষ্টে ছিলেন। অবশেষে পায়ে হেঁটে দীর্ঘ চড়াই-উতরাই অতিক্রম করে অসমে এসেছেন রাজ্যের দশ পরিযায়ী শ্রমিক। গতকাল রবিবার ভোরে ভুটান থেকে রওয়ানা হয়েছিলেন তাঁরা। অবশেষে এদিন রাতের দিকে তাঁরা ভুটান সীমান্তবর্তী নিম্ন অসমের বাকসা জেলার কাউলি এলাকায় এসে পৌঁছেছেন।
আগতদের এক পরিযায়ী শ্রমিক অখিল বিশ্বাস সোমবার হিন্দুস্থান সমাচার-কে জানান, তাঁরা ভুটানের ভাংটার এলাকার কায়ৈপানিতে শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু করোনা ভাইরাস ঠেকাতে জারিকৃত লকডাউনের জেরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তাঁরা। গত প্রায় মাসাধিককাল থেকে অর্ধাহার অনাহারে দিন যাপন করতে হচ্ছিল। অবশেষে অনেক ভেবচিন্তে ঈশ্বরের ওপর ভরসা করে গতকাল (রবিবার) ভোর চারটে নাগাদ নিজেদের বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে যান। এখানে আসতে বহু উঁচু পাহাড় অতিক্রম করতে হয়েছে।
অখিল জানান, তাঁদের দশজনের মধ্যে পাঁচজন যথাক্ৰমে রামদয়াল পাইক, রূপেশ ওরাং, পাপলু ভূমিজ, খুদাং মুণ্ডা এবং আমজান খানের বাড়ি মধ্য অসমের শোণিতপুর জেলায়। তিনি, অখিল বিশ্বাস সহ বাকি পাঁচজন যথাক্রমে মহেশ্বর বিশ্বাস, হিরো বৈশ্য, উদয় বৈশ্য এবং প্ৰভাত বকশি বাকসা জেলার কাউলি এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে, করোনা-আক্রান্ত ভুটান থেকে দশ শ্রমিক অসমে আসায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। আতঙ্কিত স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে রাত দশটা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হন তামুলপুর থানার ওসি অসীম বরা এবং কুমারিকাটা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নিপন গগৈ। তাঁদের তৎপরতায় চিকিৎসা কৰ্মীর এক দল গিয়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। পরবর্তীতে ১০৮ নম্বর জরুরি পরিষেবার গাড়ি করে নিয়ে তাদের সকলকে নাগ্ৰিজুলি আদৰ্শ হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইনে রেখে দিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
নাগ্ৰিজুলি আদৰ্শ হাসপাতালের ইনচার্ড ডা. মনোহর দাস জানান, রাত প্ৰায় ১০টা নাগাদ ভুটান থেকে আগত দশ শ্ৰমিককে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। অনাহারী শ্রমিকরা পাহাড় অতিক্রম করে দীর্ঘ পথে পায়ে হেঁটে অত্যন্ত দুৰ্বল হয়ে পড়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে প্ৰাথমিক চিকিৎসা প্ৰদান করে আহারও দেওয়া হয়েছে। এঁদের সকলেই সুস্থ বলে জানিয়েছেন ডা. মনোহর দাস।