ফুলতলী পঞ্চায়েত ভেঙ্গে পড়ায় স্তব্ধ উন্নয়নমূলক কাজ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ ডিসেম্বর : জাতীয় স্তরে এবং রাজ্য স্তরে রাজনীতি যেভাবেই চলুক কিংবা হউক না কেন — কৈলাসহর আছে কৈলাসহরেই৷ গত কিছুদিন পূর্বে কৈলাসহর মহকুমার গৌরনগর ব্লকের অধীনে শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি দলের সদস্য এবং সিপিআইএম দলের সদস্যরা মিলে পঞ্চায়েত দখল করার পর এই খবর চাউর হতেই সর্বত্র গুঞ্জন শুরু হয়েছিল৷ এবার একেবারেই উল্টো ধামাকা৷


কৈলাসহর মহকুমার চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে ফুলতলী গ্রামপঞ্চায়েতের তিন জন বিজেপি দলের সদস্য এবং কংগ্রেস দলের সদস্য মিলে পঞ্চায়েত গঠন করেছিল৷ এমনকি পঞ্চায়েত গঠন করে প্রধান এবং উপপ্রধান শপথ গ্রহণ করেছিল গত ষোল আগস্ট৷ যদিও প্রায় এক মাস পর চন্ডীপুর ব্লকের বিডিও প্রদীপ দেববর্মা গত ২০ সেপ্ঢেম্বর বিজেপি দলের তিন সদস্যের সদস্যপদ খারিজ করে দেওয়ায় পঞ্চায়েত ভেঙে যায়৷ নয় আসন বিশিষ্ট ফুলতলী গ্রাম পঞ্চায়েতে গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি দলের সাতজন সদস্য এবং কংগ্রেস দলের দুইজন সদস্য ভোটে জিতেছিল৷ গোটা ফুলতলী গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট জনসংখ্যার অর্ধেক বিষ্ণুপ্রিয়া মুণিপুরী সম্প্রদায়ের এবং অর্ধেক বাঙালি সম্প্রদায়ের বাস রয়েছে৷


সেটা মাথায় রেখেই বিজেপি দল স্থির করেছিল যে, সাতজন সদ্যেসর মধ্যে বিষ্ণুপ্রিয়া মুণিপুরী সম্প্রদায়ের ব্রাহ্মণ আভা শর্মাকে প্রধান এবং বাঙালি সম্প্রদায়ের অতিশ মালাকারকে উপপ্রধান পদে নিয়োগ করবে৷ বিজেপি দলের চন্ডীপুর মন্ডল এবং ঊনকোটি জেলা কমিটির পক্ষ থেকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল৷ গত ১৬ আগসট পঞ্চায়েত প্রাঙ্গণে পঞ্চায়েতের নয় জন সদস্যের শপথ পাঠ করান প্রিসাইডিং অফিসার বেনুমাধব চক্রবর্তী৷ এরপর যখনই প্রধান এবং উপপ্রধান নির্বাচন হবে তখনই শুরু হয় বিপত্তি৷ দলীয় আদেশ না মেনে বিজেপি দলের সাতজন সদস্যের মধ্যে প্রমিলা সিনহা, মৃদুল সিনহা এবং রঞ্জিত সিনহা তিন সদস্য কংগ্রেসের দুই সদস্যের সমর্থন নিয়ে প্রধান পদে নিয়োগ করে বিজেপি সদস্য মৃদুল সিনহা৷


এরপর প্রিসাইডিং অফিসার প্রধান পদে প্রমিলা দেবীকে এবং উপপ্রধান পদে মৃদুল সিনহাকে শপথ বাক্যও পাঠ করান৷ এরপর বিজেপি দলের হুইপ পেয়ে গত ২০ সেপ্ঢেম্বর বিডিও প্রদীপ দেববর্মা বিজেপি দলের প্রমিলা সিনহা, মৃদুল নিসহা এবং রঞ্জিত সিনহা এই তিন সদস্যের সদস্য পদ খারিজ করেন৷ এরপর থেকে ফুলতলী পঞ্চায়েত হ্যাং হয়ে আছে৷ কোনো ধরনের রেগার কাজ কিংবা কোনো উন্নয়ন মূলক কাজ হচ্ছে না বলে জানান পঞ্চায়েতের সচিব উপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ৷ তবে স্বার্থের জন্য কোনো নীতি নেই তা আবারও প্রমাণ হলো কৈলাসহরের শ্রীনাথপুর এবং ফুলতলী গ্রাম পঞ্চায়েতে৷ যদিও সদস্য পদ খারিজ হওয়ার পর বিজেপি দলের তিন সদস্য আদালতে মামলা করেছেন৷ আদালতে বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় বিডিও কিংবা জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিক কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলেননি৷


তবে বিজেপি দলের তিন সদ্যস এমন কাজ করায় বিজেপি দলের মধ্যে কোন্দল এবারও প্রকাশ্যে এল৷ দলের জেলাস্তরের দুই নেতা গোষ্ঠী কোন্দলে এর কারণে এমনটাই হয়েছে বলে জানা যায়৷ তবে এই বিষয়ে জেলা কমিটির সহ সভাপতি বাবু লাল সিনহার কথাতেই দলীয় কোন্দেলের কারণেই এমন হয়েছে বলে দাবি করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *