নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ডিসেম্বর৷৷ ত্রিপুরা থেকে আরও ৯টি পণ্য আমদানিতে ছাড়পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার৷ তাতে, ত্রিপুরা অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
বাংলাদেশে রফতানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বহু দাবি উঠেছে৷ ত্রিপুরার ব্যবসায়ী সমাজ বিভিন্ন ফোরামে ওই দাবি তুলেছেন৷ সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সাক্ষাতে ওই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আমদানি পণ্য তালিকা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন৷
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ত্রিপুরা থেকে পণ্য আমদানির তালিকায় আরও ৯টি পণ্য যুক্ত করেছে৷ কাজু বাদাম, কাগজ, চিনি, জেনারেটর, ভাঙ্গা কাঁচ, চকলেট, বেবি ওয়াইপার, কনফেকশনারি দ্রব্যাদি ও বিটুমিন এই ৯টি পণ্য ত্রিপুরা থেকে আমদানি তালিকায় যুক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার৷
ইতিপূর্বে, ওই পণ্যগুলি পশ্চিমবঙ্গের বেনাপোল দিয়ে আমদানি করছে বাংলাদেশ৷ কিন্তু, বেনাপোলের তুলনায় ত্রিপুরা দিয়ে পণ্য আমদানিতে অধিক সাশ্রয়৷ তাই, বাংলাদেশ সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ অবশ্য, বাংলাদেশের এই সিদ্ধান্তে ত্রিপুরাও দারুন উপকৃত হবে৷ কারণ, বাংলাদেশ ত্রিপুরার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওই পণ্যগুলি কিনবে৷ ফলে, ত্রিপুরার ব্যবসা বাড়বে৷ স্বাভাবিকভাবেই, ত্রিপুরার অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে৷
মূলত, একতরফা বাণিজ্য নীতির বিরুদ্ধেই ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরা বার বার আওয়াজ তুলেছেন৷ এখন বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনেকটাই সমতা ফিরবে মনে করা হচ্ছে৷
৫ অক্টোবর, ২০১৯ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং তার ফলশ্রতিতে বাংলাদেশ সরকার ১ ডিসেম্বর, ২০১৯-এর এক গ্যাজেট নোটিফিকেশনে এই ন’টি দ্রব্যের উপর থেকে রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে৷
ত্রিপুরার আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য মূলত: বাংলাদেশের সাথেই হয়ে থাকে৷ বর্তমানে ৮টি নোটিফায়েড ল্যাণ্ড কাস্টম স্টেশন রয়েছে ত্রিপুরায়৷ সেগুলি হচ্ছে আগরতলা, শ্রীমন্তপুর, মুহুরীঘাট, খোয়াইঘাট, ধলাইঘাট, মনুঘাট, পুরান রাঘনা বাজার এবং সাবম৷ ২০১৮-১৯ বছরে এই স্থলবন্দরগুলি দিয়ে বাংলাদেশে ত্রিপুরার রপ্তানির পরিমাণ ছিলো ১৪.৬৬ কোটি টাকা এবং আমদানির পরিমাণ ছিলো ৫২২.৪২ কোটি টাকা৷ আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে এই বিশাল ফারাক থাকার মূল কারণ ছিলো বাংলাদেশ সরকারের আরোপিত বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যের উপর নিষেধাজ্ঞা৷ এ বিষয়ে ত্রিপুরা সরকার ২৭টি পণ্য দ্রব্যের উপর থেকে বাংলাদেশ সরকার যাতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সেজন্য ভারত সরকারের বাণিজ্য মকের সাথে আলোচনা চালায়৷
ফলে প্রথম ধাপে ৭টি এবং দ্বিতীয় ধাপে ৯টি পণ্যদ্রব্যের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বাংলাদেশ সরকার৷ রাজ্য সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরায় উৎপাদিত বা যেসব দ্রব্যের চাহিদা বাংলাদেশে বেশি সে সমস্ত দ্রব্যের উপর থেকেও যাতে বাংলাদেশ সরকার বন্দর সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেয়৷ এই পণ্যগুলি আগরতলা-আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট এবং শ্রীমন্তপুর স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা যাবে৷