নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ ফেব্রুয়ারি৷৷ চিকিৎসক স্বল্পতা নিয়ে ভীষণ অসহায় দেখা গেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরীকে৷ দরখাস্ত দিলেই চিকিৎসক নিয়োগ করা হবে, বলেন তিনি৷ কিন্তু বিরোধী দলের বিধায়কদের বক্তব্য, বেতন কাঠামো সংশোধন না করা হলে রাজ্যের চিকিৎসক স্বল্পতা কোনভাবেই দূর হবে না৷ বুধবার বিধানসভায় প্রশ্ণোত্তর পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা কত কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়ের প্রশ্ণের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এলোপ্যাথি ডক্টর ৮৭০ জন, হোমিওপ্যাথি ডক্টর ৪০ জন, আয়ুর্বেদিক ডক্টর ৪৮ জন এবং ডেন্টাল ডক্টর ৩৫ জন কর্মরত রয়েছেন৷ অন্য আরেকটি প্রশ্ণের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, জুলাই ২০১৬ থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫ ডক্টর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তার মধ্যে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন৷
প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বিধায়ক গোপাল রায় অতিরিক্ত প্রশ্ণ উত্থাপন করে বলেন, রাজ্যে কত সংখ্যক চিকিৎসক স্বল্পতা রয়েছে৷ এর জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, অনেক চিকিৎসকের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে৷ তবে ঠিক কত সংখ্যক চিকিৎসকের প্রয়োজন নির্দিষ্ট তথ্য এখন তার কাছে নেই৷ তিনি আরো জানান, গত বছর ৩৪৫ টি শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছিল চিকিৎসক নিয়োগের জন্য৷ কিন্তু মাত্র ৩৫ জন চিকিৎসক আবেদন করেছেন৷ এদিন তিনি জানান, এমবিবিএস পাশ করেই উচ্চ শিক্ষার জন্য সকলে বর্হিরাজ্যে চলে যাচ্ছেন৷ সেক্ষেত্রে তাদের আটকানো যাচ্ছে না৷ ফলে, চিকিৎসক স্বল্পতা দূর হচ্ছে না৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে গোপালবাবু বলেন, রাজ্যে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সময় ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয় যে এমবিবিএস পাশ করার পর রাজ্যেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে হবে৷ সেক্ষেত্রে যারা এমবিবিএস পাশ করে রাজ্য সরকারের অধীন চাকুরিতে যোগ দেননি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা, জানতে চান তিনি৷ তাতে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এমবিবিএস পাশ করেই বর্হিরাজ্যে উচ্চ শিক্ষার জন্য যারা গেছেন তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ তবে, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার পর তারা রাজ্যে ফিরে আসবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন৷ ফলে, ততদিন রাজ্যে চিকিৎসক স্বল্পতা দূর করা সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ, জাতীয় স্তরে ইন্টারভিউ নিয়েও চিকিৎসক মিলেনি৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে কংগ্রেস বিধায়ক রতন লাল নাথ বলেন, চিকিৎসকদের বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস না করা হলে এই সমস্যার সমাধান হবে না৷ তাঁর দাবি, সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরাতেই চিকিৎসকদের বেতনক্রম সর্বনিম্ন৷ তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে পরামর্শ দিয়ে বলেন, চিকিৎসক স্বল্পতা দূর করতে কালবিলম্ব না করে তাঁদের বেতনক্রম সংশোধন করুন৷ এদিন তিনি কটাক্ষের সুরে আরো বলেন, এবছর বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে কম বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান বাড়ানো কোন মতেই সম্ভব নয় বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷ জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের বেতনক্রম সংশোধন করতে সদিচ্ছার কোন অভাব নেই৷ কিন্তু, সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে তা করা সম্ভব হয়ে উঠছে না৷
2017-02-23