মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে হত্যাকাণ্ড : রাজ কুশওয়াহ প্রধান অভিযুক্ত, পুলিশ জানাল সোনমের সঙ্গে ছিল সম্পর্ক

শিলং, ৯ জুন : মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে হত্যাকাণ্ডে রাজ কুশওয়াহ প্রধান অভিযুক্ত এবং মৃতের স্ত্রী সোনমের সাথে তার সম্পর্ক ছিল, পুলিশ এমনটাই সন্দেহ করছে। সদ্য বিবাহিত স্বামী রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ডে ২৪ বছর বয়সী সোনম রঘুবংশীকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ২১ বছর বয়সী রাজ কুশওয়াহাকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট চারজনকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে এবং একটি পুলিশ দল উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে রওনা হয়েছে সোনমকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে।

ইস্ট খাসি হিলস-এর পুলিশ সুপার ভিভেক সিয়েম জানান, রাজ কুশওয়াহের সাথে সোনমের প্রেমের সম্পর্কে ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনিই এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী বাকি তিন অভিযুক্তের “হ্যান্ডলার” ছিলেন। তবে রাজ নিজে কখনো মেঘালয়ে আসেননি। তিনি আরও বলেন, সোনম এই অপরাধের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন কি না, তা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেঘালয়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

গতকাল রাতে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ২২ বছর বয়সী বিশাল সিং চৌহান, যাঁকে ইন্দোর থেকে এবং ১৯ বছর বয়সী আকাশ রাজপুত, যাঁকে উত্তরপ্রদেশের ললিতপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চতুর্থ অভিযুক্ত আনন্দ সিং কুর্মি (২৩) কে মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলা থেকে সোমবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সিয়েম জানান, রবিবার মেঘালয় পুলিশের দুটি দল উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে গিয়ে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় এই অভিযান পরিচালনা করে। তৃতীয় একটি দল বর্তমানে গাজিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। রবিবার রাতে “আত্মসমর্পণ” করার পর সোনম স্থানীয় পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, “যখন আমরা সমস্ত তথ্যকে একত্রে সংযুক্ত করি, তখন দেখা যায় মূল সূত্রে রয়েছেন রাজ কুশওয়াহ ও সোনম। তাঁদের মধ্যেকার সম্পর্কই এই অপরাধের মূল মোটিভ বলে মনে হচ্ছে। তবে বর্তমানে আমরা এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছি না।”

উল্লেখ্য, গত মাসে ইন্দোরে বিয়ের পর রাজা ও সোনম মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়েছিলেন। ২৩ মে তাঁরা নিখোঁজ হন। প্রথমে এটি নিখোঁজ পর্যটকদের মামলা হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু ২ জুন ওয়াই সাওডং জলপ্রপাতে গভীর গিরিখাত থেকে রাজার মৃতদেহ উদ্ধারের পর মামলাটি হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ২৩ মে-তেই তিনজন হামলাকারী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে রাজ্য ত্যাগ করে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তে মাথায় সামনের ও পিছনের দিকে ধারালো অস্ত্রের দুটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। সিয়েম বলেন, “হত্যার দিনই অভিযুক্তরা চলে যায়। আমরা তখনও জানতাম না যে এটি হত্যা। আমরা তাদের নিখোঁজ পর্যটক হিসেবে খুঁজছিলাম। মৃতদেহ পাওয়া যায় ২ জুন, তখনই এসআইটি গঠন করে তদন্ত শুরু হয়।” তিনি আরও জানান, “সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া। বৃষ্টিপাত ও দুর্গম ভূপ্রকৃতির কারণে অনুসন্ধানে দেরি হয়েছে। তাছাড়া, পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও রেকর্ডিং ব্যবস্থা না থাকাও তদন্তকে কঠিন করেছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *