BRAKING NEWS

বরাক পৃথকীকরণের দাবিকে পরোক্ষ সমর্থন জানানোয় মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন বিডিএফ-এর

শিলচর (অসম), ৮ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : গতকাল বরাক উপত্যকা সফরে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, বরাকের জনগণ চাইলে পৃথকীকরণের ব্যাপারে তাঁর আপত্তি নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি চান এই উপত্যাকা অসমের সাথেই থাকুক। পৃথকীকরণকে এভাবে পরোক্ষভাবে সমর্থন জানানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)।

আজ সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য পেশ গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, ডিলিমিটেশন করে বরাকের ৪২ লক্ষ লোকের জন্য বরাদ্দ হল ১৩টি বিধানসভা আসন, যেখানে ২৪ লক্ষ জনসংখ্যার বোড়োল্যান্ডের জন্য আসন সংখ্যা ১২ থেকে বাড়িয়ে ১৫ করা হল। তিনি বলেন, এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিলে যে বনধ ডেকেছিল তাতে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়েছিলেন আপামর বরাকবাসী। একই ভাবে পৃথকীকরণের দাবিতেও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পাওয়া যাবে এটা নিশ্চিত। তিনি বলেন, মাত্র একমাস হল বিডিএফ বরাক পৃথকীকরণের ডাক দিয়েছে। এখনও প্রচার পর্বই শুরু হয়নি। এর পর আসবে কর্মসূচি নেওয়ার পালা। কিন্তু ইতিমধ্যেই এ নিয়ে সারা বরাক জুড়ে সাড়া পড়েছে। অনেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগাযোগ করছেন। এমন-কি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। প্রদীপ বলেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য যে সঠিক এ সবই তার উপযুক্ত প্রমাণ।

বিডিএফ-এর মুখ্য আহ্বায়ক এদিন আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্টীকরণের জন্য পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল বিডিএফ এর পক্ষ থেকে। এক লক্ষ নিযুক্তির মধ্যে বরাক থেকে কতজন নিযুক্তি পেয়েছেন সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এর কোনও জবাব দেননি। তিনি বলেন, একটি সূত্রে তাঁদের কাছে খবর আছে, বরাক থেকে একহাজার নিযুক্তিও হয়নি। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী জবাব দেননি তাই ধরে নিতে হবে এই তথ্যই সঠিক। এছাড়া রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ বাংলাভাষীর মাতৃভাষাকে সরকারি সহযোগী ভাষার মর্যাদা কেন দেওয়া হচ্ছে না, কেন ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণকে অনর্থক ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে? এ সব ব্যাপারেও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি। বোঝা যাচ্ছে, এ সব নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে মুখ্যমন্ত্রী আগ্রহী নন। বিদ্যুৎ বণ্টনে বরাক বঞ্চনারও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে করিমগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ব্যাপারে কাজ শুরু করার একটা সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বরাকবাসী লক্ষ্য রাখবেন এই প্রতিশ্রুতি পালিত হয় কিনা? কারণ ইতিমধ্যে এই মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে।

বিডিএফ-এর মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ডিলিমিটেশন নিয়ে বরাকবাসী খুবই খুশি, সবাই তাঁকে এজন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন। জয়দীপ বলেন, যদি তা-ই হয়, তা-হলে ডিলিমিটেশনের প্রতিবাদে বিডিএফ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ডাকা বরাক বনধ সফল হল কী করে? কেন এখন পর্যন্ত বিভিন্ন দল সংগঠন এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে? এমন-কি কাছাড় বিজেপির সভাপতির ছেলে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে, মাটির টানে ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মিছিল সংগঠিত করেছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। জয়দীপ বলেন, এর আগেও মিজোরাম সীমান্তে আসাম পুলিশ জওয়ানদের হত্যা, কিংবা চাকরি বঞ্চনা নিয়ে বিডিএফ-এর ডাকা বনধকে জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি এজন্য বরাকবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আগামী দিনে পৃথকীকরণের আন্দলনেও একই ধরনের সাড়া পাবেন বলে তাঁরা আশাবাদী। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পৃথক রাজ্যের ইস্তাহার ও প্রচার পুস্তিকা জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও এদিন জানান জয়দীপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *