BRAKING NEWS

ক্লাস বন্ধ করে ধর্মঘটে সামিল! মলানদীঘি উচ্চবিদ্যালয়ে অভিভাবকদের প্রশ্নের মুখে শিক্ষকরা

দুর্গাপুর, ১১ মার্চ (হি. স.) : ‘মাস্টার তুমি স্কুল ছেড়ে সিপিএম, বিজেপির ঝান্ডা ধরো।’ ‘পড়ুয়ারা জেনে গেল, মাস্টার ১ লাখ টাকা বেতনের পরও টাকার জন্য ধর্মঘট করছে।’ এমনই সব শ্লো-গান লেখা স্কুলের দেওয়ালে পোস্টার।

ক্লাস বন্ধ করে বকেয়া মহার্ঘ্যভাতার দাবীতে ধর্মঘটে সামিলের অভিযোগ। আর তার প্রতিবাদে এবার পাল্টা অবিভাবকদের রোষের মুখে পড়ল শিক্ষকরা। শনিবার ঘটনাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল কাঁকসার মলানদিঘী দূর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামল পুলুশবাহিনী। শেষ পর্যন্ত শিক্ষকদের বাড়তি ক্লাস নেওয়ার আশ্বসে উঠল অবিভাবকদের অবরোধ।

শুক্রবারের ধর্মঘটের জেরে থমকে গিয়েছিল পঠনপাঠন,আসেনি বেশীরভাগ শিক্ষক শিক্ষিকা। শনিবার স্কুলে আসতেই অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সেই সব শিক্ষক শিক্ষিকা। কাঁকসার মলানদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ে শনিবারের এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায়। এদিন শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে না দিয়ে গেটের সামনে তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় অভিভাবকদের একাংশ। ঘটনাস্থলে আসে কাঁকসা থানার পুলিশ।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা সহ একাধিক দাবিকে সামনে রেখে সরকারী কর্মচারীদের একাংশ ধর্মঘটের ডাক দেয়। আর তাতেই সামিল হয় বেশীরভাগ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। যার জেরে দু-একটি ব্যাতিক্রম ছাড়া অধিকাংশ স্কুল খোলা থাকলেও এক প্রকার বন্ধ ছিল পঠনপাঠন। অভিযোগ তার মধ্যে একটি ছিল মলানদিঘীর দুর্গাদাস বিদ্যামন্দিরও। জানা গেছে, ওই স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ৬৬৫ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৫ জন। এছাড়াও পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছে ২ জন। স্কুলের পঠনপাঠনের মানও খুব ভাল। ধর্মঘটে শিক্ষকরা সামিল হওয়ায় পার্শ্ব শিক্ষকরা ক্লাস নিলেও টিফিনের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অবিভাবকরা। শনিবার ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয় অভিভাবকরা। এদিন স্কুল খোলার আগে অবিভাবকরা স্কুলের গেটে আসেন। স্কুলে ঢুকতে যাওয়ার আগে বিক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের বিরূদ্ধে রীতিমত পোস্টার পড়ে স্কুলের দেওয়ালে। তাতে বড় বড় হরপে লেখা শ্লোগান ছিল, ‘মাস্টার তুমি স্কুল ছেড়ে সিপিএম, বিজেপির ঝান্ডা ধরো।’ ‘পড়ুয়ারা জেনে গেল, মাস্টার ১ লাখ টাকা বেতনের পরও টাকার জন্য ধর্মঘট করছে।’ স্কুলে আসা কয়েকজন শিক্ষককের সঙ্গে বচসাও হয় অবিভাবকদের।

অভিভাবক বিভাস ঘোষ প্রশ্ন তুলে বলেন,” শিক্ষকরা সমাজ তৈরীর কারিগর। ধর্মঘটতো কারখানায় শ্রমিকরা করে। শিক্ষকরা যদি নিজেদের টাকা বাড়ানোর জন্য ধর্মঘট করেন , তাহলে শ্রমিকদের সঙ্গে ফারাক কোথায়? তাহলে ছাত্ররা কি শিখবে?” ঘটনাকে ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয় মলানদীঘি ফাঁড়ির পুলিশ।

যদিও এদিন শিক্ষকদের বাড়তি ক্লাস নেওয়ার আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোভনলাল সাহা অবশ্য বলেন,” কিছু শিক্ষক তাদের অধিকারের লড়াইয়ে আন্দোলনে যোগ দিলেও পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধে হয়নি। এমনকি মিড ডে মিলও যথারীতি হয়েছে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বাড়তি ক্লাস নিয়ে পড়াশোনায় লোকসানের পূরণ করে দেবেন।” তবে এদিন একইরকমভাবে দুর্গাপুর কান্ডেশ্বরে অবিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় শিক্ষকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *