BRAKING NEWS

বগটুইকাণ্ডে তথ্য প্রমাণ নষ্টের আশঙ্কায় রামপুরহাটে অস্থায়ী ক্যাম্প খালি করল সিবিআই

রামপুরহাট, ১৪ ডিসেম্বর (হি. স.) : লালন শেখের মৃত্যুর পর বগটুইকাণ্ডে তথ্য প্রমাণ নষ্টের আশঙ্কায় রামপুরহাটে অস্থায়ী ক্যাম্প খালি করল সিবিআই।

সোমবার রাত থেকেই দফায় দফায় জন রোষের মুখে বার বার পরে সিবিআই অস্থায়ী ক‍্যাম্প কার্যত ফাঁকা। রাতের অন্ধকারে পাত তাড়ি গুটিয়ে কোলকাতামুখো হয়েছে সিবিআই। মঙ্গলবার দুপুরে বাকি কয়েকজন ও অস্থায়ী ক‍্যাম্প পান্থশ্রী ছেড়ে চলে যান। সিজিএ কমপ্লেক্সে তাদের বৈঠক আছে বলে জেলা পুলিশ কে জানিয়েছেন ।
শুরু থেকেই লালনের দেহ নিতে অস্বীকার করেছিল পরিবার। যদিও পরবর্তীতে দেহ নিতে রাজি হয় লালনের পরিবার। বুধবার সকাল দশটার পর রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে তাঁর দেহ নিয়ে বগটুই গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেয় পরিবার। কিন্তু মাঝপথেই রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের সামনে থেমে যায় লালনের মৃতদেহবাহী শকট। লালনের আত্মীয়রা সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে ঘিরে ধরে। দেহ নিয়ে তাঁরা সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে ঢুকতে চাইলে শুরু হয় উত্তেজনা। সিবিআই আধিকারিকদের শাস্তি দাবি করেন লালনের স্ত্রী।চলতে থাকে ব্যাপক বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই এলাকায় তৈরি হওয়া পুলিশ ক্যাম্পের কর্মীরা চলে আসেন। সিবিআই শিবিরের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। কিন্তু গ্রামবাসীরা শিবিরের সামনেই বসে পড়ে ধর্না দেওয়া শুরু করেন।পরিবারের লোকজন জানান, সিবিআই আধিকারিকদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হতে শুরু করে। শুরু হয় ধস্তাধস্তি।প্ল‍‍্যাকার্ড ফেস্টুন নিয়ে সিবিআইয়ের গ্রেফতার নাহলে কবর হবে না বলে এক সময় দাবিও ওঠে।
লালন শেখের ছেলে রোহন সেখ বলেন,বাবা দোষ করলে বিচার হতো। তারপর যা হতো মেনে নিতাম। কিন্তু সিবিআই কেন টাকা চাইলো? কেন তাদের সিল করা আমাদের ঘর থেকে সব লুঠ হলো? এর জবাব কে দেবে? “এই অবস্থায় ‘সিআইডি তদন্ত শুরু হয়েছে বলে’পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ।প্রায় আধ ঘণ্টা লালনের দেহ নিয়ে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসের সামনে বিক্ষোভ হয়। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি।পরে লালনকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় । বেলা দেড়টার পর গ্রামের কবর স্থানে কবর দেওয়া হয় লালনকে। সেখানে সবাই মাটি দেন। মাটি দেন লালনের ছেলে রোহন সেখ। অশান্তি এড়াতে সেখানে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। জেলাপুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, পরিবারের আবেদনেই পুলিশি নিরাপত্তার করা হয়েছে।”

এদিন সকাল থেকেই রাজ‍্য সি আইডির আইজি সুনীল কুমার চৌধুরী সহ অন‍্যান‍্য আধিকারিকরা হাসপাতাল থেকে ই শুরু করে তদন্ত। তাঁরা জেলা পুলিশের কাছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট না নিয়ে হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করেছে । জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন,” গোটা বিষয়টি সি আই ডি টিম তদন্ত করছে। এমনকি পি এম রিপোর্ট তাঁরাই সংগ্রহ করেছেন। আমাদের কাছ থেকে নেন নি। এই মুহুর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।”

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, লালনের মৃত্যু হয়েছে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকার কারণে। মঙ্গলবার রামপুরহাট হাসপাতালে দুপুর সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা ধরে চলে লালনের দেহের ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়। ময়নাতদন্ত করেন ৪ চিকিৎসকের দল। সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে।
গত সোমবার বিকালে রামপুরহাটে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচাগারে লালনের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সিবিআই দাবি করে, আত্মহত্যা করেছেন লালন। যদিও পরিবারের দাবি, লালনকে খুন করেছে সিবিআই। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, সিবিআই একে আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও তাদের হেফাজতে কী ভাবে একজন আত্মহত্যা করতে পারেন? লালনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবে সিআইডি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *