করিমগঞ্জ (অসম), ১৮ অক্টোবর (হি.স.) : করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন হাজতবাসী জনৈক বাংলাদেশি মহিলা। মহিলা বাংলাদেশ ঢাকার চাঁদনী শেখ। হাসপাতাল সূত্ৰের খবর, প্রসূতি ও নবজাতক সুস্থ আছে।
মা বাংলাদেশি। ছেলে জন্মসূত্রে ভারতীয়! কথাটি শুনলে কিছুটা অবাক হলেও এটাই সত্যি। দক্ষিণ অসমের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জেলা সদরে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে গতকাল সোমবার এক ফুটফটে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশি মহিলা।
গত পাঁচ মাস ধরে করিমগঞ্জ জেলা কারাগারে হাজতবাস করছেন বাংলাদেশ ঢাকার চাঁদনী শেখ নামের এই মহিলা। অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করে পরবর্তীতে মুম্বাই চলে গিয়েছিলেন। গত পাঁচ মাস আগে মুম্বাই থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে ফিরে যাওয়ার সময় বদরপুর রেলস্টেশনে গ্রেফতার হন তিনি। সে সময় চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে পাঠানো হয় হাজতবাসে। সোমবার হঠাৎ তাঁর প্রসববেদনা শুরু হলে ভরতি করা হয় করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে। এর পর সি সেকশনের মাধ্যমে জন্ম দেন পুত্রসন্তানের। বর্তমানে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা ও সদ্যজাত ছেলে দুজনই।
মহিলা সম্পর্কে একই কথা জানিয়েছেন করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. লিপি দেব। ডা. দেব বলেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা চাঁদনী শেখ নামের ওই মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিলেন ভারতে। এর পর কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন তাঁরা মুম্বাইয়ে অবস্থান করছিলেন। কিছুদিন মুম্বাই থাকার পর অন্য লোকের সঙ্গে ফের বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাইলে বদরপুর স্টেশনে একটি দূরপাল্লার ট্রেন থেকে তাঁদেরকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। পরবর্তীতে তাঁদের আদালতে পেশ করা হয়। আদালতের নির্দেশে তাঁদের ঠাই হয় করিমগঞ্জ জেলা কারাগারে।
গত সোমবার চাঁদনী শেখকে ভরতি করা হয় সিভাল হাসপাতালে। এর পর প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞরা তাঁর চিকিৎসা শুরু করেন। যথসময়ে সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান প্রসব করান চিকিৎসকরা।
এদিকে বাংলাদেশি মহিলার ভারতীয় সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার খবরে আজ মঙ্গলবার ভিড় লেগে যায় করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে। ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার যে কয়েকটি উপায় রয়েছে তার মধ্যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়া হচ্ছে একটি মাধ্যম। সঙ্গত কারণে প্রশ্ন উঠেছে, সদ্য ভূমিষ্ট শিশুসন্তান কি জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিকত্বের দাবি করবে?
আজ মঙ্গলবার চাঁদনী শেখকে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতাল থেকে রিলিজ করা হলে নবজাতক পুত্রসন্তানকে নিয়ে ফের ফিরে যেতে হয়েছে জেলা কারাগারে।