শিলচর (অসম), ২২ জুন (হি.স.) : টানা ছয়দিন থেকে ক্রমাগত বন্যার জল বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা শিলচর শহর সহ কাছাড় জেলার গ্রামাঞ্চলে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চতুর্দিকে বন্যার জলে ভেসে হাহাকার করছেন নাগরিকরা। শহর শিলচরের একটিও রাস্তা-উপরাস্তা, অলি-গলি রক্ষা পায়নি বানের জল থেকে।
বরাক নদীর জল আজ সামান্য হ্রাস পেলেও আটকে থাকা গ্রামাঞ্চলের জলের উল্টো ঠেলার চাপে নতুন করে শহরের বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে আজ। সমস্ত দিনে দেড় ফুট জল বৃদ্ধি পেয়েছে শহরে। এতে শিলচরের চাঁদমারি টিবি সেন্টার, বিবেকানন্দ রোড, ঝালুপাড়া, অম্বিকাপট্টি, লিঙ্ক রোড, ইটখলা, ঘনিয়ালা, মালুগ্রাম, শহিদ চণ্ডীচরণ রোড, মোকাম রোড, ন্যাশনাল হাইওয়ের বহু গলি জলের ওপর ভাসছে।
কাছাড়ের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসনকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার তৎপরতায় কাছাড়ের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও ত্রাণ বণ্টনে ভুবেনশ্বর থেকে এনডিআরএফ বাহিনীর মোট চারটি কোম্পানি বিশেষ কপ্টারে মঙ্গলবার রাতে শিলচর পৌঁছেছে। প্রতিটি টিমে ২৬ জন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জওয়ান রয়েছেন। টিম কামান্ডার আরকে রাওয়াত জানিয়েছেন, আজ কঠিন বন্যা পরিস্থিতিতে শিলচর সিভিল হাসপাতাল সংলগ্ন স্থান থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একইভাবে ছোট দুধপাতিল থেকে অপর এক মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন এনডিআরএফ বাহিনীর জওয়ানরা। এছাড়া শহরের বন্যাকবলিত বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ৫০-এর বেশি জলবন্দি অসহায় নাগরিককে উদ্ধার করেছেন।
এনডিআরএফ-এর টিম কমান্ডার আরকে রাওয়াত জানিয়েছেন, আজ বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে ২৪০০ বোতল পানীয় জল, এক হাজার প্যাকেট বিস্কুট বণ্টন করা হয়েছে। এছাড়া বিস্কুট, পানীয় জল সহ খাদ্য সামগ্রী বণ্টন অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার হিসেবে এনডিআরএফ বানভাসিদের উদ্ধার ও ত্রাণ সামগ্রী বণ্টনের কাজ করছে। এছাড়া শহরের সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন ৩৩ কেভি এবং ১১ কেভির চাঁদমারির মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে হাত লাগিয়েছে এনডিআরএফ বাহিনী।