BRAKING NEWS

২০২২ সালের বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে বলেন রাজ্যপাল, লক্ষ্য-২০৪৭ প্রাণবন্ত এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শনে সক্ষম হবে

আগরতলা, ১৭ মার্চ : আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে ২০২২ সালের পূর্ণরাজ্য দিবস উদযাপনের সময় সরকার ’লক্ষ্য-২০৪৭’ শীর্ষক উন্নয়নের এক রূপরেখা প্রকাশ করেছে৷ এই রূপরেখায় ৬টি ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে যেমন প্রাথমিক ক্ষেত্র, পরিকাঠামো, যোগাযোগ ও সরবরাহ ক্ষেত্র, শিল্প ও বিনিয়োগ ক্ষেত্র, সামাজিক ক্ষেত্র, সুশাসন ক্ষেত্র এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ক্ষেত্র৷ ত্রিপুরার উন্নয়নের এটি একটি কার্যকরী রূপরেখা৷ ত্রিপুরাকে প্রাণবন্ত এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই রূপরেখা পথ প্রদর্শনে সক্ষম হবে৷ আজ দ্বাদশ বিধানসভার একাদশতম অধিবেশনে রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইণ আর্য একথা বলেন৷ 
রাজ্যপাল বলেন, কৃষি ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে, শিল্পোদ্যোগ এবং আইন শৃঙ্খলা সহ অন্যান্য সুশাসন সূচকগুলির মধ্যে ত্রিপুরাকে একটি মডেল রাজ্যে পরিণত করার জন্য সরকার কাজ করছে৷ তিনি বলেন, নিয়ত, নীতি ও নিয়ম এই তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে সরকার যে সমস্ত কর্মসূচি রূপায়ণ করছে তাতে অবশ্যই একটি মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার স্বপকে বাস্তবায়িত করবে৷
২০২২ সালের বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে রাজ্যপাল আরও বলেন, চার বছর আগে এক ঐতিহাসিক মতদানের মাধ্যমে ত্রিপুরার জনগণ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিলেন এবং সেই থেকে রাজ্য সরকার উন্নয়নের দিশায় যাত্রা শুরু করে৷ সরকারের মধ্যে এক দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন এবং রূপান্তরণ ঘটে যা প্রশাসনে নিয়ে এসেছে স্বচ্ছতা৷ সরকারি অফিসগুলিতে ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে কর্ম সংস্কৃতি এবং কাজের মান৷ নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং স্বরোজগারের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে যুবকদের মধ্যে স্বনির্ভরতা গড়ে উঠেছে৷ সরকার এ রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন এবং শান্তি অক্ষুন্ন রাখতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ৷ বিবিধ সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মের মিলন স্থল হলো ভারত, যার বৈচিত্র্যের সবগুলিই বিভিন্ন রাজ্যের সাথে বিজড়িত এবং ভারতের উন্নয়ন ও সামগ্রিক বিকাশ কল্পে এক প্রাণবন্ত অবদান রাখার প্রয়াসে কাজ করে চলেছে ত্রিপুরা৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, রাজ্য সরকার ত্রিপুরায় মহিলাদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের জন্য আইনগত এবং কর্মসূচিগত উভয় ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ এটিকে আরও ব্যাপক এবং কেন্দ্রীভূত করার জন্য আমার সরকার ’দ্য ত্রিপুরা পলিসি ফর উইমেন ২০২২’ প্রণয়ন করেছে এবং ’মহিলা স্বশক্তিকরণ অভিযান’ নামক একটি পরিলেখ চূড়ান্ত করেছে যাতে করে বিদ্যমান বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ব্যাপক অন্তর্ভক্তি এবং নতুন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অন্তরায় পূরণ করা যায়৷ সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও আবেগপূর্ণ-উন্নয়নের চারটি ক্ষেত্রকে নিয়ে কাজ করার জন্য এটি একটি ইতিবাচক নীতি৷ এই নীতি প্রণয়নে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ যেমন, সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ পদ সংরক্ষণ, উচ্চশিক্ষায় মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ, জাতীয়স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহণে সুদের হার নমনীয় করা, স্টার্ট আপ প্রকল্প স্থাপনে মহিলাদের জন্য ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বন্ধক রাখার প্রথা মুক্ত করা, সরকারি উদ্যোগে মূলধনি ফাণ্ড থেকে ৫০ শতাংশ অর্থ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ, মহিলাদের জন্য ১৩টি নতুন হেলথ এণ্ড ওয়েলনেস সেন্টার সহ সুসংহত ’ওয়ান স্টপ সেন্টার’ স্থাপন, সমস্ত  পুলিশ স্টেশনে ’ওমেন হেল্প ডেস্ক-কে’ শক্তিশালী করা, ৩টি নতুন বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন, দুটি ডি-অ্যাডিকশন হাসপাতাল স্থাপন, দুটি মানসিক হাসপাতাল স্থাপন, ক্রাশ এবং ফিডিং রুম সহ কর্মরত মহিলাদের জন্য চারটি নতুন আবাস নির্মাণ, মহিলাদের স্থাবর সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশনের জন্য স্ট্যাম্প ডিউটি হাস করা ও মহিলাদের জন্য স্টেট রিসোর্স সেন্টার স্থাপন৷ মহিলা স্ব-শক্তিকরণে এই কর্ম পরিকল্পনা রূপায়ণে সরকার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করবে৷ সরকারের এই উদ্যোগ মহিলাদের জীবনযাত্রার মানকে সহজতর করবে৷ মহিলা স্বশক্তিকরণের অঙ্গ হিসেবে রাজ্যে প্রথমবারের মতো ত্রিপুরা পুলিশে মহিলাদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করা হয়েছে৷ পুলিশ দপ্তরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য ৪৫১ জন মহিলা পুলিশ স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করা হয়েছে৷ রাজ্য সরকার রাজ্যের মহিলাদের মধ্য থেকে ৪০৮টি ন্যায্যমূল্যের দোকানের ডিলার হিসেবে মহিলাদেরকে নিযুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷

অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, পঞ্চম জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায় জন্ম অনুসারে ত্রিপুরায় লিঙ্গ অনুপাত হচ্ছে প্রতি ১,০০০ পুরুষে ১,০২৮ মহিলা এবং মোট জনসংখ্যা অনুসারে ত্রিপুরায় লিঙ্গ অনুপাত হচ্ছে প্রতি ১,০০০ পুরুষে ১,০১১ জন মহিলা৷ ৩১ জানুয়ারি, ২০২২-এর নিরিখে হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম অনুসারে ত্রিপুরায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৯৪ শতাংশ৷ সর্বশেষ স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম অনুসারে রাজ্যে শিশু মৃত্যর হার ২৭ থেকে কমে ২১ হয়েছে৷ ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে গুরুতর অপরাধ হাস পেয়েছে ২৬ শতাংশ৷ এ থেকে স্পষ্ট যে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে এবং সুনিয়ন্ত্রিত রয়েছে৷ ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ ১৯.৬ শতাংশ হাস পেয়েছে৷ দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ২০১৯ সালে বিশেষ স্থানীয় আইনে (নন আইপিসি) ৩৬.৩ শতাংশের তুলনায় ২০২০ সালে ৫২ শতাংশে পৌঁছেছে এবং আইপিসি ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার ২০১৯ সালের ২৩.১ শতাংশ থেকে ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২.৪ শতাংশ৷ আমার সরকার নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলার দিশায় কাজ করছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, এই সময়ের মধ্যে সরকার কৃষিক্ষেত্রে বড় উদ্যোগ নিয়েছে যেমন আরও বেশি সংখ্যক ধানচাষীদের ’মুখ্যমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা’র আওতায় আনার জন্য রাজ্য বাজেট থেকে সংযোজন প্রিমিয়াম সহায়তা, শস্য বহুমুখীকরণ কর্মসূচি, সার এবং পিপিসি’র ই-লাইসেন্সিং, নগদবিহীন সার ক্রয়, সাফল্য অর্জনকারী কৃষকদের মাধ্যমে ক্ষেত্র সম্পসারণ ইত্যাদি৷ সরকার কৃষকদের আয় ২০১৫-১৬ (ভিত্তি বছর) বছরের ৬৫৮০ টাকা থেকে ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ১৩৫৯০ টাকায় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে৷ সংকর জাতীয় এবং উচ্চফলনশীলন প্রজাতির সংযুক্তিকরণ, নিবিড় মৃত্তিকা পরীক্ষণ, শ্রী পদ্ধতির মতো বৈজ্ঞানিক শস্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি গ্রহণ, ঋণদানে সুবিধা এবং ফসল কাটার পর ব্যবস্থাপনা ও ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ফলস্বরূপ, ২০১৫-১৬ (ভিত্তি বছর) বছরের ৬৫৮০ টাকা থেকে ২০২০-২১ সালে কৃষকদের মাসিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১০৯৬ টাকা৷ খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২০২১-২২ সালের লক্ষ্যমাত্রা ৯.৩৫ লক্ষ মেট্রিকটন থেকে ২০২২-২৩ সালে ৯.৪৮ লক্ষ মেট্রিকটন নির্ধারণ করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা সরকার রাজ্যে প্রথমবারের মতো প্রকৃত ভূমিহীন বর্গাদার কৃষকদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বর্গাদার যোজনা চালু করেছে৷ সরকার ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৫৬০০০ হেক্টর কৃষি জমিকে ’মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত সেচ কর্মসূচি’-এর অধীনে সেচের আওতায় নিয়ে আসার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে৷ ২০১৮ সাল থেকে ১৬০০ হেক্টর জমি নিশ্চিত সেচের আওতায় আনা হয়েছে৷ রাজ্যের ভাগচাষী, বর্গাদার, কৃষকদের কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ২০১৮-১৯ থেকে এখন পর্যন্ত ২,৫১,৫২৫ জন কৃষক কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে ঋণ পেয়েছেন৷ তাদের প্রাপ্ত ঋণের পরিমাণ ১,১৬৬ কোটি টাকা৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল আরও বলেন, ২০১৮-১৯ সালে রাজ্যে প্রথমবার ন্যুনতম সহায়কমূল্যে ধান ক্রয় শুরু হয়েছিল৷ প্রথমে প্রতি কেজি ধানের নূ্যনতম সহায়কমূল্য ছিল ১৭ টাকা পঞ্চাশ পয়সা৷ এটা এখন বেড়ে ১৯ টাকা ৪০ পয়সা হয়েছে৷ রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৫৬,৭২২ জন কৃষকের কাছ থেকে ১,০৪,২০৯ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করা হয়েছে৷ এতে ১৯২.৫২ কোটি টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের কৃষকগণ যাতে প্রযুক্তিগত কৌশল রপ্ত করতে পারেন সেজন্য সরকার প্রতিটি কৃষি মহকুমায় একটি করে মোট ৩৭টি কৃষক বন্ধ কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ইতিমধ্যেই ২৭টি কৃষক বন্ধ কেন্দ্র খোলা হয়েছে৷ কৃষকদের আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে লাভজনক সংকরজাতীয় ভুট্টা ও মাষকলাই চাষ, সংগ্রহ পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণ এবং মূল্যসংযোজনে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ২০২১-২২ সালে ৯,৭৮৪ হেক্টরে সংকর জাতীয় ভুট্টা ও ৭,৩০৫ হেক্টরে মাষকলাই চাষ করা হয়েছে৷ রাজ্যে ২১ হাজার হেক্টর জমি জৈব চাষের আওতায় আনা হয়েছে, যাতে আনারস সুগন্ধি চাল, আঁদা, হলুদ, মরিচের মতো ফসল উৎপাদন হচ্ছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, চা বাগান শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সরকার ’মুখ্যমন্ত্রী চা কল্যাণ প্রকল্প’ চালু করেছে৷ এই প্রকল্পে ৭ হাজারের মতো চা বাগান শ্রমিক পরিবারকে জমি বন্দোবস্ত দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা গৃহ ও প্রায়োরিটি হাউজ হোল্ড রেশনকার্ড দেওয়া হবে৷ তাছাড়াও এই প্রকল্পে চা বাগান শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত কাজের পরিবেশ প্রদান এবং উপযুক্ত ব্যক্তিদের সামাজিক ভাতা প্রদান, সর্ব ঋতুর উপযোগী রাস্তা নির্মাণ, শিক্ষা সম্পসারণ, মেধাবৃত্তি প্রদান ও স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা হবে৷ এই প্রকল্প রূপায়নে সরকার ৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করবে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, আগামী তিন বছরে ১,২০০ হেক্টর এলাকাকে ফুলচাষের আওতায় আনার জন্য ’মুখ্যমন্ত্রী পুপ উদ্যান প্রকল্পে’ এক ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এতে ২৮.০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে এবং ৬,০০০ ফুলচাষী উপকৃত হবেন৷ ২০২১-২২ বছরে ৩০৫ হেক্টর এলাকায় এই প্রকল্পের আওতায় ফুলের চাষ করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার ’ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট এরিয়া’-র আওতায় একটি নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য সিপাহীজলা জেলাকে চিহ্ণিত করেছে৷ আগামী তিন বছরে ক্যইন প্রজাতির আনারসের প্রাক উৎপাদন, উৎপাদন এবং উৎপাদন পরবর্তী পর্যায়ের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও উৎপাদিত ফসলের বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে৷ এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ড, উদ্যানচর্চা ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তর এবং ত্রিপুরা হর্টিকালচার কর্পোরেশনের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ রাজ্যের মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য সরকার দুধ, মাংস এবং ডিমের মতো প্রাণীজ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে৷ কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বখনা বাছুরের সংখ্যা বাড়ানোর ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে৷ এজন্য ’মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গোধন প্রকল্প’ চালু করা হয়েছে৷ এতে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৭২,১২১টি গাভীকে সে’ সর্টেড সিমেন প্রয়োগ করা হয়েছে৷ এতে ৪,৩৪০টি বখনা বাছুর এবং ৫৪৪টি পুরুষ বাছুরের জন্ম হয়েছে৷ ডম্বর এবং রাজ্যের অন্য জলাধারগুলিতে খাঁচার মাধ্যমে মাছ চাষের জন্য আমার সরকার ৩৪.৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করছে৷ ডম্বর জলাধারে ১,৫০০টি এবং অন্যান্য বড় জলাশয়ে ২৬০টি খাঁচা বসানো হবে৷ খাঁচা বসানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে৷ মৎস্য দপ্তর বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের জন্য উৎসাহিত করছে৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে ১,০০০ আগ্রহী মাছ চাষীও উৎসাহী ব্যক্তিদের বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইণ আর্য বলেন, ত্রিপুরায় বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষকে উৎসাহিত করার জন্য ’মুখ্যমন্ত্রী নিবিড় মৎস্যচাষ প্রকল্প’ চালু করা হয়েছে৷ এছাড়া গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নয়ন তহবিলের (আরআইডিএফ) আওতায় বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে ৩,০০০ সুবিধাভোগীকে সহায়তা করার জন্য নাবার্ড নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে৷ এই কর্মসূচিতে ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ হাজার করে মৎস্যচাষ ছোট ছোট বায়োফ্লক ইউনিট স্থাপন করার জন্য কারিগরী এবং আর্থিক সহায়তা করা হবে৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে ’চিফ মিনিস্টার্স মডেল ভিলেজ স্কিম’ চালু করা হয়৷ গ্রামীণ এলাকার ৫৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজগুলিকে সংশ্লিষ্ট বিধানসভা এলাকার বিধায়কগণ এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই চিহ্ণিত করেছেন৷ সচেতনতামূলক প্রচার, প্রকল্প তৈরি এবং তার প্রদর্শনী ও উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়ার জন্য ৯.০৯ লক্ষ টাকা বিভিন্ন ব্লককে দেওয়া হয়েছে৷ বিভিন্ন বুনিয়াদি ক্ষেত্র এবং বনায়নের মতো বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিয়ে গ্রামীণ অংশের মানুষের যাতে জীবিকার সংস্থান হয় সেই লক্ষ্যে চলতি অর্থবছরে মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনা চালু করা হয়েছে৷ ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ৬ লক্ষ গ্রামীণ পরিবারকে পোল্টি পালন, মাছের পোনা, সব্জি / ফল / ফুলের বীজ ইত্যাদি এবং গাছের চারার মতো বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সহায়তা করা হবে৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে মৎস্যচাষ, শূকর, ছাগল, হাঁস ও মুরগী পালন ইত্যাদির মাধ্যমে স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্যে ২ লক্ষ পরিবারকে নানা সহায়তা করা হয়েছে৷

অধিবেশনে রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইণ আর্য বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রামীণ অংশের মানুষের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে এবং গ্রামাঞ্চলের একেবারে অন্তিম ব্যক্তির কাছে সমস্ত পরিষেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের পরবর্তী সময়ে রাজ্য সরকার সার্বিক উন্নয়নে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করেছে৷ রাজ্যে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত কর্মসূচি (এমজিএন রেগা) রূপায়ণ পদ্ধতি আরও শক্তিশালী করা হয়েছে এবং দরিদ্র পরিবারগুলির মধ্যে যাতে নিয়মিত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকে সেই লক্ষ্যে আরও সম্পদ সৃষ্টির উপর বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে (ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত) ত্রিপুরায় ৩০০ লক্ষেরও বেশি শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে৷ এতে ব্যয় হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা৷ ২০১৮-১৯ সালের পূর্বে দীনদয়াল উপাধ্যায় যোজনা- জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশনে ত্রিপুরায় মহিলা স্ব-সহায়ক দলের সংখ্যা ছিলো মাত্র ৪,১৪০-র কাছাকাছি৷ ২০১৮-১৯ সাল থেকে রাজ্যে স্বসহায়ক দল গঠনের বিষয়টি ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশন-র মাধ্যমে এক নতুন মাত্রা পায়৷ শেষ ৩.৫ বছরে গ্রামীণ জীবিকা মিশন রাজ্যে ২৭,৯৮৮টি মহিলা স্ব-সহায়ক দলকে প্রোমোট করেছে এবং এই মুহর্তে ২ লক্ষ ৯৫ হাজারের মতো গ্রামীণ মহিলা ৩২,১২৮-র মতো স্ব-সহায়ক দলের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন৷ এই স্বসহায়ক দলগুলিকে আবার ১,৪৩৯টি ভিলেজ অর্গানাইজেশন এবং ৩৫টি ক্লাস্টার লেভেল ফেডারেশনে বিভক্ত করা হয়েছে৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-গ্রামীণ প্রকল্পে রাজ্যে ৪৩,২০৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে৷ অথচ ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত রাজ্যে এই প্রকল্পে মাত্র ৩,৩৩৩টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিলো৷ রাজ্য সরকারের সহানুভূতিসুলভ মনোভাবের দরুণ ২০২১ সালে এই প্রকল্পে কাঁচা ঘরের সঙ্গা সংশোধন করা হয়৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে ঘর নির্মাণের জন্য ১.৫ লক্ষের মতো বেনিফিসিয়ারিকে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়৷ ২০২২ সালের মধ্যে সবাইকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার লক্ষ্যে আরও ঘর নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, সবচেয়ে প্রত্যন্ত জেলাগুলির এবং সার্বিকভাবে রাজ্যের সমস্ত গ্রামীণ অংশের আর্থসামাজিক পরিকাঠামো আরও উন্নত করার লক্ষ্যে অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রামের মতো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প এবং মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনার মতো রাজ্য সরকারের প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে৷ এতে প্রত্যাশিত ফল পাওয়ার লক্ষ্যে স্টেক হোল্ডারদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি সমস্ত গ্রামীণ উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির নিয়মিত পর্যালোচনা করা হচ্ছে৷ রাজ্যের সমস্ত গ্রামের উন্নয়ন সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা পরিকল্পনা এবং পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে৷ ৮৮৮.৮১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য যুক্ত ৬টি জাতীয় সড়ক (জাতীয় সড়ক ০৮ (৪৪), জাতীয় সড়ক – ২০৮, জাতীয় সড়ক ২০৮-এ, জাতীয় সড়ক ৪৪-এ, জাতীয় সড়ক ১০৮-এ এবং জাতীয় সড়ক-১০৮বি) ম’র করা হয়েছে যারমধ্যে ২০৯.৪৪ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ সম্পর্ণ হয়েছে এবং ২৫৭.৪৬৯ কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে৷ ৭,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ ত্রিপুরায় জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য করা হচ্ছে যার সঙ্গে পূর্বতন সরকারের সময় বিনিয়োগ করা ১,২০০ কোটি টাকার বিরাট পার্থক্য রয়েছে৷ আগরতলা-আখাউড়া রেলওয়ে লাইন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে এবং আগামী বছর এই রেললাইন চালু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এই রেললাইনে নিশ্চিন্তপুরে একটি রেল ইয়ার্ড থাকবে এবং সেখানে একটি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) স্থাপন করার প্রস্তাব রয়েছে৷ ২০২০ সালের ৫ সেপ্ঢেম্বর ভাসমান জেটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সোনামুড়ার কাছে শ্রীমন্তপুর টার্মিনালের নাম ইনল্যাণ্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্টের মানচিত্রে এবং প্রটোকল রুটে অন্তর্ভক্ত হয়ে গেছে৷ বন্দর, জাহাজ এবং নৌ যোগাযোগ মন্ত্রক ২৪.৫২৫৭ কোটি টাকার ’ডেভেলপমেন্ট অব আইডব্লিউটি ইন রিভার গোমতী ইন ত্রিপুরা’ প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে৷ শ্রীমন্তপুর থেকে উদয়পুর পর্যন্ত আরও ৯টি ভাসমান জেটি স্থাপন করা হবে৷ বাংলাদেশের এলাকায় গোমতী নদীর ৪০ কিলোমিটার এলাকার নাব্যতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
রাজ্যের বোর্ড এবং বহির্রাজ্যের বোর্ডের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নো নলেজ গ্যাপ নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার ২০১৯-২০ সালে প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য এনসিইআরটি কারিকুলাম এবং সিলেবাস চালু করেছে৷ রাজ্যের ২২টি ডিগ্রি কলেজের জন্য সেন্ট্রালাইজড অনলাইন অ্যাডমিশন সিস্টেম চালু করা উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা৷ সুইচওভার মুডে ২০২০ সালে রাজ্যের ২৯টি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় সি বি এস ই-র অনুমোদন পেয়েছে৷ মিশন-১০০ বিদ্যাজ্যোতি সুকল প্রকল্পে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে থাকা সরকারি এবং সরকার অনুদানপ্রাপ্ত মোট ১০০ বিদ্যালয় সিবিএসই অনুমোদন পেয়েছে৷ ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ৪টি একলব্য মডেল রেসিডেনসিয়াল সুকল ছিল৷ আরও ১৭টি একলব্য মডেল রেসিডেনসিয়াল সুকল স্থাপন করতে রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ পারিবারিক আয়ের সীমারেখা না দেখে রাজ্য সরকার গত দুই বছরে নবম শ্রেণীর ৫৪ হাজার ৫৩৬ জন ছাত্রীকে বাইসাইকেল প্রদান করেছে৷ ২০১৭ সাল পর্যন্ত দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী এবং অন্ত্যোদয় প্রকল্পভুক্ত পরিবারগুলির ছাত্রীরা এই সুুযোগ পেতো৷ শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করা হয়েছে আত্মরক্ষা শেখার ক্লাসও৷ প্রতিটি ক্লাসের প্রতিটি বিষয়ে লাইভ ও রেকর্ডেড ভিডিও ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রচারের উদ্দেশ্যে ১৭ মে, ২০২১ তারিখে শিক্ষামূলক টিভি চ্যানেল ’বন্দে ত্রিপুরা’ চালু করা হয়েছে৷ দিব্যাঙ্গ ছাত্রছাত্রীদের সুসংহত শিক্ষার উন্নয়নে সক্ষম ত্রিপুরা প্রকল্প চালু করা হয়েছে৷ ১,০০০ জনজাতি ছাত্রীর পড়াশুনায় লার্নিং অ্যাণ্ড কোচিংয়ের সুবিধার জন্য একটি অনলাইন টিচিং মডিউল তৈরি করা হবে৷অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যের সব গ্রাহকদের গুণগত বিদ্যৎ পরিষেবা নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং এডিবি প্রভূতি সংস্থা থেকে ৪,৪৪২ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা পাওয়া গেছে৷ ’প্রধানমন্ত্রী সহজ বিজলী হর ঘর যোজনায়’ (সৌভাগ্য) সব মিলিয়ে ১,৩৬,২৩২টি সার্ভিস কানেকশন দেওয়া হয়েছে৷ এরমধ্যে ১,৩২,৬৩১টি কানেকশন দেওয়া হয়েছে চিরাচরিত পদ্ধতিতে৷ ৩,৬০১টি বিদ্যৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে সোলার পাওয়ারের অধীনে৷ ’দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনায়-১’ ৮৯.৭৮ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন, ২১৪.১৭ কিলোমিটার এলটি লাইন, ১৬১.৮৫ কিলোমিটার ১১ কেভি লাইন বৃদ্ধি এবং ১৩৩টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে এবং চালু করা হয়েছে৷ অটল জলধারা মিশন নামে রাজ্যে একটি নতুন প্রকল্প ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে চালু করা হয়েছে৷ এই প্রকল্পে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিটি বাড়িতে বিনামূল্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হবে৷ ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট শুরু করা হয়েছে জলজীবন মিশন প্রকল্প৷ এই প্রকল্পে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৭,৬০,০৫২টি বাড়িতে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হবে৷ ০১.০৪.২০২১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৭,৬০,০৫২টি বাড়ির মধ্যে ০২-০৩-২০২২ পর্যন্ত ৩,৪১,০২৬টি বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে (৪৪.৮৭ শতাংশ)৷ বাড়ি বাড়ি পানীয়জলের সংযোগ দেওয়ার জাতীয় গড় হলো ৪৭.২৩ শতাংশ৷

অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, এই প্রথম ২০২১ সালের ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ইণ্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স এবং ইনভেস্ট ইণ্ডিয়ার সহযোগিতায় ’ডেস্টিনেশন ত্রিপুরা’-২০২১ শীর্ষক ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়৷ এর উদ্দেশ্য হলো খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, উদ্যান চর্চা, হস্ততাঁত, পর্যটন, হস্তকারু, চা, রাবার, আগর, তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা প্রভ’তি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগ এবং মূল্যযুক্তকরণকে উৎসাহিত করা৷ আগরতলায় দুইদিনের এই ইনভেস্টমেন্ট সামিটে দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং বাংলাদেশ থেকে ১০০-এর বেশি শিল্পপতি এবং স্টেক হোল্ডারগণ অংশ নেন৷ এই সামিটের সময় বিভিন্ন শিল্প সংস্থার প্রতিনিধিগণের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ৮১টি মউ স্বাক্ষরিত হয় যাতে প্রায় ২,৮৬৮.৯৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে৷ সৃষ্টি হবে প্রায় ২০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ৷ শুধুমাত্র তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রেই ৭টি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে যাতে প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১০৩৪ কোটি টাকা৷ প্রস্তাবিত কারখানা যাতে খুব তাড়াতাড়ি গড়ে উঠে এজন্য নিয়মিত শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগযোগ রাখা হচ্ছে৷ ত্রিপুরার শিল্প পরিকাঠামোর উন্নতিতে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক প্রজেক্ট রেডিনেস ফিনান্স ফেসিলিটি ম’র করেছে৷ আশা করা হচ্ছে আগামী দুই তিন বছরে শিল্প পরিকাঠামোর উন্নয়নে ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷রাজ্যের নাগরিকদের অভিযোগ সুষ্ঠভাবে সমাধান করার জন্য রাজ্য সরকার ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১-এ সিএম হেল্পলাইন-’১৯০৫’ পরিষেবা চালু করেছে৷ সিএম হেল্পলাইন পরিষেবার মাধ্যমে উত্থাপিত সমস্যাগুলি টাস্ক মনিটরিং সিস্টেম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে৷ এই পরিষেবা অভিযোগগুলির প্রতিকার ও জনসাধারণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির উপর নজরদারি রাখতে সহায়তা করছে৷ এই পরিষেবা রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও সহায়তা করছে৷ অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যের ১২টি অ্যাসপিরেশনাল ব্লকে প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি শিশু (৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সের) এবং প্রত্যেক মা (গর্ভবতী মা ও শিশু পরিচর্যাকারিণী মা)-এর জন্য বর্তমান বরাদ্দ ২টি ডিমের অতিরিক্ত ১টি করে ডিম প্রদানের নতুন নীতি চালু করেছে৷ পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে ১২টি অ্যাসপিরেশনাল ব্লকে প্রত্যেক শিশুকে (৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সের) এবং প্রত্যেক মাকে (গর্ভবতী ও শিশু পরিচর্যাকারিণী  মা) একটি করে কলা প্রদান করা হচ্ছে৷ ৫১,৪২৫ শিশুকে (৬ মাস – ৬ বছর বয়সের) এবং ১৩,৪০২ মাকে (গর্ভবতী এবং শিশু পরিচর্যাকারিনী মা) এই প্রকল্পের আওতায় আনা যাবে বলে অনুমান করা হয়েছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, আয়ুমান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা হলো বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প৷ রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে সুবিধাভোগীদের জন্য ১২,৭০,১৯৯ ই-কার্ড বিতরণ করেছে৷ এখন পর্যন্ত ১,২৬,২৬০ জন রোগী আয়ুমান ভারত পিএমজেএওয়াই-র অধীনে চিকিৎসা পরিষেবা লাভ করেছেন৷ এজন্য ৫৯.২৮ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে৷ ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ১২৬টি সরকারি হাসপাতাল এবং ২টি বেসরকারি হাসপাতাল এবি-পি এম জে এ ওয়াই-এর অধীনে তালিকাভুক্ত হয়েছে৷ সরকার কোভিড-১৯ অতিমারীর সাথে লড়াই করেছে, যার কারণে ২২-০২-২০২২ তারিখ পর্যন্ত কোভিড পজিটিভিটির হার ০.৩৫ শতাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে৷ রাজ্যে প্রায় ৫০ লক্ষ ডোজ টিকাকরণ হয়েছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, সরকার ’সবার জন্য খেলাধুলা’ এই কর্মসূচিতে জোর দিয়েছে৷ রাজ্য সরকার ফুটবল এবং জিমন্যাস্টিক এই দুটি খেলাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে৷ ব্লকস্তর পর্যন্ত এই খেলাগুলির বিকাশে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ নেতাজি সুভাষ আঞ্চলিক কোচিং সেন্টারে ২০২০ সালে মাল্টি ডিসিপ্লিনড স্পোর্টস বিল্ডিং উদ্বোধন করা হয়েছে৷ ২০২০ সালে রাজ্যে আয়োজিত ৬৫তম জাতীয় সুকল গেমসে (১৭ অনূর্ধ বালকদের ফুটবল) ত্রিপুরা দল শিরোপা অর্জন করে৷ খেলো ইণ্ডিয়া স্কিমে বাধারঘাটস্থিত ডিডিএসএস কমপ্লেক্স সিন্থেটিক অ্যাথলেটিক ট্র্যাক, খোয়াই বালক সরকারি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে সিন্থেটিক ফুটবল টার্ফ, পানিসাগরস্থিত শারীর শিক্ষনের আঞ্চলিক মহাবিদ্যালয়ে সুইমিংপুল নির্মাণের মতো বিভিন্ন ক্রীড়া পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে৷ মাথাপিছু আয়ের হিসাব থেকে জীবনধারণের মান সম্পর্কে জানা যায়৷ রাজ্যে ২০১৭-১৮ সালে মাথাপিছু আয় ছিলো ১ লক্ষ ৪৪৪ টাকা যা ২০১৯-২০ সালে ২৫.১২ শতাংশ বেড়ে হয় ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৬৭৪ টাকা৷ এডভান্স এস্টিমেট অনুসারে ২০২০-২১ সালে এই মাথাপিছু আয় ২০১৭-১৮ সালের তুলনায় ২৯.৪২ শতাংশ বেড়ে ১,২৯,৯৯৫ টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, নর্থ ইস্ট স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের সহায়তায় ত্রিপুরা বন অধিকার অ্যাপ নির্মাণ করা হয়েছে৷ এই অ্যাপের মাধ্যমে বনাঞ্চলের মধ্যে পাট্টা প্রাপকদের কতটুকু জমি রয়েছে তা নির্ভল এবং সঠিকভাবে নিরূপণ করা যাবে এবং এরফলে বনাঞ্চলে বসবাসকারী ১.৩ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন৷ যেহেতু বনের উপর তাদের অধিকার প্রযুক্তির মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকবে৷ তাই এর মাধ্যমে জনজাতিদের স্বশক্তিকরণ এবং উন্নয়ন সুনিশ্চিত হবে৷ বর্তমানে এই পাইলট প্রজেক্টটি ২৩টি মহকুমায় ২৩টি মৌজা এলাকায় কার্যকরী করা হচ্ছে৷ শীঘ্রই সমগ্র রাজ্যে এই কর্মসূচি চালু করা হবে৷

অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, আগর চাষ এবং আগর কাঠের বিপণনের সুবিধার্থে ২০২১ সালে ’ত্রিপুরা আগর উড পলিসি’ ঘোষণা করা হয়েছে৷ মূলত: রাজ্যের অর্থনীতিতে ২,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত যোগদানের লক্ষ্যে এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে৷ সৌন্দর্যায়নের উদ্দেশ্যে আমার সরকার রোডসাইড প্ল্যান্টেশন অ্যাণ্ড বিউটিফিকেশন অব ত্রিপুরা কর্মসূচি চালু করেছে৷ এই কর্মসূচিতে জাতীয় সড়কের ২৮৯.১০ কিমি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে৷ ২০২০-এর ৪ জলাই বুরাখাতে ম’তিবন চালু করা হয়েছে যেখানে যে কেউ পূর্বপুরুষদের স্মৃতিতে গাছ লাগাতে পারেন৷ রাজ্যের অর্থনীতিতে কোভিড অতিমারীর কুপ্রভাব দূর করার উদ্দেশ্যে আমার সরকার আর্থিক প্রবৃদ্ধি ও বিনিয়োগের প্রতি জোর দিয়েছে৷ মূলধনী ব্যয়ের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে৷ আমার সরকার রাস্তঘাট, বিল্ডিং নির্মাণ, স্বাস্থ্য, খেলাধুলার পরিকাঠামো ইত্যাদি ক্ষেত্রে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১,৬১৭ কোটি টাকা মূল্যের বড় বড় প্রকল্প করেছে৷ তাছাড়াও আমার সরকার আরআইডিএফ প্রকল্পে ৪৬২.৮৮ কোটি টাকার একটি প্রস্তাব নাবার্ডের কাছে জমা দিয়েছে৷নাবার্ড ইতিমধ্যেই ২৭৭.৮৩ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে এবং প্রস্তাবের বাকি অংশ বিবেচনাধীন রয়েছে৷ আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ডিসেম্বর, ২০২১ থেকে সমস্ত বেতন বাবদ বিল কাগজহীন পদ্ধতিতে জমা পড়ছে এবং বিলের পাস দেওয়া হচ্ছে৷ তাছাড়া সরকার পূর্ত দপ্তর ও বন দপ্তরের বিল পাসের প্রক্রিয়া এবং ট্রেজারির মাধ্যমে হিসাব নিকাশ জমা দেওয়ার ব্যবস্থায় পরিবর্তন এনেছে৷ ফলে পুরো প্রক্রিয়ায় আরও বেশি স্বচ্ছতা এসেছে৷ ১২টি অ্যাসপিরেশনাল ব্লকের উপর অগ্রাধিকার দিয়ে বিশেষ করে জনজাতি সম্পদায়ের জীবনের মান উন্নয়ন তথা শিক্ষা, রাস্তাঘাট, কৃষি বাজার ও আয়ের মাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নত ও সবার জন্য সমান পরিষেবা দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্যের ক্ষমতা বাড়ানোই হচ্ছে প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য৷
অধিবেশনে রাজ্যপাল বলেন, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরে ১,৩৩২টি পরিবারের জন্য জীবিকা সংক্রান্ত উপার্জনমুখী কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে৷ এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩.১২ কোটি টাকা৷ ২৬.৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ যেমন ১) ৩০টি অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ ও অন্যান্য পরিকাঠামোমূলক সুযোগ সুবিধা ২) ৮টি নতুন এনজিও হোস্টেল নির্মাণ ৩) ১টি হোস্টেল কাম ভিটিসি ৪) ৩৫০টি মার্কেট স্টল ৫) ৩০টি ওপেন মার্কেট শেড ৬) ১টি হাসপাতাল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে৷ মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৫,৫৯৬টি দরিদ্র জনজাতি পরিবারকে প্রাণীসম্পদ বিকাশ, মৎস্য এবং উদ্যান চাষ ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়া হয়েছে৷ ২০২১-২২ অর্থবছরে জম চাষ সাহায্য প্রকল্পে ৫,৯৭৩টি জমিয়া পরিবারকে মোট ৯০.০০ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে৷ এই সহায়তা প্রতিটি সুবিধাভোগীকে ৩০ টাকা দরে ২ কেজি জম চাষের বীজ ক্রয় এবং জনপ্রতি ৬ শ্রমদিবসের ২১২ টাকা এবং অন্যান্য খরচ বাবদ দেওয়া হয়েছে৷ ক্ষুদ্র বনজ ফসল সংগ্রাহক এবং কারিগর ও কারুশিল্পীদের মধ্যে উদ্যোগ স্থাপনে উৎসাহ দিতে মুখ্যমন্ত্রী ২০২০-এর ১১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বনধন যোজনার সূচনা করেন৷ ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ক্ষুদ্র বনজ সম্পদ যেমন ফুল ঝাড়, আমলকি, তেঁতুল, গন্ধকী ইত্যাদি সংগ্রহ ও ভ্যালু অ্যাডিশনের জন্য ভারত সরকারের জনজাতি বিষয়ক মন্ত্রকের অধীন ট্রাইফেড ৩২টি বনধন বিকাশ কেন্দ্র অনুমোদন করে এবং ৩৩১.৬০ লক্ষ টাকা প্রদান করে যার ফলে ৬৪৫টি স্বসহায়ক দলের ৮৭৭৪ জন সদস্য সদস্যা উপকৃত হয়েছেন৷
২০২২ সালের বিধানসভার প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল শুরুতেই রাজ্যের হজাগিরি নৃত্যগুরু সত্যরাম রিয়াংকে শিল্পকলায় পদ্মশ্রী পুরস্কার ২০২১-এ ভূষিত করার জন্য ভারত সরকারকে ও সত্যরাম রিয়াংকে অভিনন্দন জানান৷ তাছাড়াও রাজ্যপাল গত দুই বছর যাবৎ সময়কালে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে৷ কোভিড-১৯ অতিমারী আমাদের রাজ্য ত্রিপুরা সহ সারা বিশ্বে সকলের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে৷ এই অতিমারীর ফলে যারা কোনও না কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন৷ রাজ্যপাল বলেন, সাম্প্রতিককালে সার্স-কোভিড-২’এর বিভিন্ন প্রকারের প্রজাতি মানবজাতির উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে৷ সরকার বিভিন্ন ঘোষণার মাধ্যমে আগে থেকেই সাড়া দিয়েছে এবং ভারত সরকারের নির্দেশনায় সময়ে সময়ে উপযুক্ত নির্দেশিকা জারি করে এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে৷
রাজ্যপাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ৯ মার্চ, ২০২১-এ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ’মৈত্রী সেতু’র উদ্বোধন করেন৷ পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তিনি ত্রিপুরায় একাধিক পরিকাঠামো প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন৷ ’মৈত্রী সেতু’ দুই প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে৷ এই সেতু ত্রিপুরাকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সাথে যুক্ত করবে ফলস্বরূপ এই সেতুটি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্ব ভারতকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *