নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ অক্টোবর।। রতনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নানা সমস্যায় জর্জরিত।সমস্যা সমাধানের জন্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও ইতিবাচক কোনো সাড়া পাচ্ছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। তাতে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ধূমায়িত হচ্ছে। ঋষ্যমুখ ব্লকের রতনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন। স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য কর্মীদের । এর ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে আসা রোগি ও আত্মীয় স্বজনেরা ক্ষোভে ফুঁসছে । বাম আমলে তৈরি করা হয় রতনপুরে দশ শয্যা বিশিষ্ট রতনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র । এই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে আসা রোগীদের পরিষেবা বিভিন্ন সমস্যার কারণে দিতে পারছে না চিকিৎসক থেকে শুরু করে এই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মীরা । দক্ষিণ জেলার জেলা শাসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চ প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়েও হেলদোল নেই ।এমনকি গত জুলাই মাসের চৌদ্দ তারিখে স্বাস্থ্য অধিকর্তা রাধা দেববর্মার রতন পুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শনকালে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এম ও আই সি পঞ্চম নমঃ সহ অন্যান্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে , বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন । স্বাস্থ্য অধিকর্তা রাধা দেববর্মা বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধান করবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ।
কিন্তু কোন সমস্যার সমাধান হয় নি আজও । রতনপুর, রতনপুর এডিসি, দক্ষিণ সোনাইছড়ি, উত্তর সোনাইছড়ি, গাবুরা ছড়া , শিবপুর এই এলাকার জনগণের স্বার্থে বাম আমলে গড়ে তোলা হয়েছিল রতনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য । কিন্তু সেই আমলের সমস্যা রাম আমলেও বহাল । সমস্যা সমাধানের কোন উদ্যোগ গ্ৰহন করেনি রাম আমলে । এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসকের সংখ্যা তিন জন । সেবিকা আছে চার জন । জিডিএ স্টাফ চার জন , ল্যাব টেকনিশিয়ান একজন ও ফার্মাসিস্ট আছে এক জন । সুইপিং স্টাফ ছয় জন । এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মী থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটছে । অথচ দুই মাস আগে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে আয়ুষ্মান ভারতের সাথে সংযুক্তকরন করা হয়েছে । রতনপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমওআই সি ডাক্তার পঞ্চম নমঃ জানান ,এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে নেটওয়ার্কের সমস্যা । নেটওয়ার্ক না থাকাতে বিভিন্ন ডাটাবেজ কালেকশন আপলোড দেওয়া যাচ্ছে না ।পাশাপাশি আয়ুষ্মান ভারত এর কার্ড গুলোর ঠিকভাবে করা যাচ্ছে না।
ফলে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘায়িত হচ্ছে । ডাটাবেইজ কালেকশন আপলোড দিতে হচ্ছে বিলোনিয়া সিএমও অফিস অথবা এসডিএমও অফিস থেকে। যদি নেটওয়ার্কের সমস্যা না হতো এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসে ডাটা আপলোড সহ আয়ুষ্মান ভারতের কার্ড হোল্ডারের হাতে সহসা সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যেত । এছাড়া বাউন্ডারি ওয়াল না থাকাতে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চত্তরে অবাধ বিচরণ করছে গরু ছাগল । এছাড়া এম ও আই সি আরো জানান ,গত দুই বছর হাসপাতালে সোলার সিস্টেম খুব খারাপ অবস্থায় পড়ে আছে ।বহুবার জানিয়েও কোনো সারাইয়ের উদ্যোগ নেই ।ফলে রাতের বেলা রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের । অনেক সময় লোডশেডিং হয় । এই লোডশেডিং এর ফলে কোভিড্ড ভ্যাকসিন সহ আর আই ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে । এলাকার জনগণ সহ এই স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরাও চাইছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিভিন্ন সমস্যা যেগুলো রয়েছে সেগুলো সমাধানে যাতে উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাস্থ্য দপ্তর । অন্যথায় যে উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যেই পুরোপুরি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।