নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ অক্টোবর৷৷ ত্রিপুরা কিংবা দেশে কোনও ফ্যাসিস্ট শক্তিই পারবে না বাম আন্দোলনকে রুখতে, বললেন সিপিএমেরপলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাত৷ সোমবার আগরতলা রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে সদ্য প্রয়াত বিজন ধরের স্মরণসভায় তিনি ভাষণ রাখছিলেন৷ এই অনুষ্ঠানে পলিটব্যুরো অন্যতম সদস্য বিমান বসু বলেন, ত্রিপুরার মানুষ ভালো নেই৷ তাই লড়াই-সংগ্রামে মানুষকে আরও বেশি করে যুক্ত করার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে৷ পলিটব্যুরো আরেক সদস্য তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার বলেন, কমিউনিস্টরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করে৷ একটা অঞ্চলভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সংকীর্ণ রাজনীতি করতে অভ্যস্ত নয়৷ প্রকাশ কারাত আরও বলেন, কোভিডে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির চার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে৷ এর মধ্যে দু’জনেই ত্রিপুরার৷ গৌতম দাশ ও বিজন ধর৷ এটা বাম সংগঠনের একটা বড় ঘাটতি৷ কারণ বামপন্থী আন্দোলনে নেতা হঠাৎ তৈরি হয় না৷ বহু লড়াই ও ত্যাগের মধ্য দিয়েই নেতা হয়৷
বিমান বসু বলেন, বর্তমানে দেশে এবং এ রাজ্যেও গণতন্ত্রের উপর হামলা- আক্রমণ হচ্ছে৷ মানুষের অধিকারের উপর হামলা-আক্রমণ হচ্ছে৷ তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা৷ জাত, বর্ণ ও ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনের চেষ্টা হচ্ছে সর্বত্র৷
বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার বলেন, কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতৃত্ব আকাশ থেকে পড়ে না৷ মাটি ফুঁড়েও উঠে না৷ তাই বিজন ধরের মৃত্যু সংগঠনের জন্য অভাবনীয় ক্ষতি৷ তিনি বলেন, বর্তমানে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন আমরা৷ তবে হাঁটতে হবে অনেক দূর৷ একে মোকাবিলা করতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, নিজেকে তৈরি না করে অন্যকে তৈরি করার দায়িত্ব আমরা নিতে পারি না৷ অসাফল্য থেকে শিক্ষা নিতে হবে৷ বিভিন্ন ত্রুটি, দুর্বলতা ও অসাফল্যের কারণগুলো চিহ্ণিত করতে হবে৷ নিজেদের ঘাটতি ও অসম্পূর্ণতার কারণগুলোর যাতে পুনরাবৃত্তি ঘটতে না পারে, তার জন্য সবাইকে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে৷ অনুষ্ঠানে বিজন ধরের স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য রাখেন দলের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীও৷ অন্যদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব, রমা দাস ও অঘোর দেববর্মা, সিপিএমের আসাম রাজ্য সম্পাদক দেবেন ভট্টাচার্য, রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মানিক দে প্রমুখ৷
প্রসঙ্গত, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গত ১১ অক্টোবর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিজন ধরের মৃত্যু হয়৷