দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক বিকাশে অগ্রাধিকার দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার : কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ অক্টোবর (হি. স.) : দিব্যাঙ্গজনদের সার্বিক বিকাশে অগ্রাধিকার দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দিব্যাঙ্গজনদের আর্থসামাজিক অবস্থার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে রাজ্য সরকারও। আজ সচিবালয়ে ২ নং সভাকক্ষে ঋণ মেলা, জব ফেয়ার এবং আলিমকো এনএইসএফডিসি / এনবিসিএফডিসি এবং এনএসএফডিসি দ্বারা প্রদর্শনীমূলক কর্মসূচি আয়োজনের প্রস্তুতি সভায় একথা বলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক।


সভায় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দিব্যাঙ্গজনদের মূল্যায়নের জন্য শিবির আয়োজন করা হচ্ছে। আরও বড় পরিসরে এই ধরনের শিবির আয়োজন করার জন্য তিনি দপ্তরকে নির্দেশ দেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি রাজ্যব্যাপী ঋণ মেলা আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন। মেলায় দিব্যাঙ্গজনদের পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিকদেরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।


তাঁর কথায়, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে তপশিলি জাতি, অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণী সহ দিব্যাঙ্গজনদের আর্থসামাজিক অবস্থার মানোন্নয়নে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি রাবার, বাশ, হস্ততাত, মৃৎ শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে যুক্তদের ক্লাস্টার অনুসারে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির সুফল অন্তিম ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে হবে। এই লক্ষ্যে ব্যাঙ্কগুলিকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি বলেন, এরফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিভিন্ন পরিকল্পনার সঠিক রূপায়ণের মাধ্যমে স্বনির্ভর ত্রিপুরা গড়ে উঠবে।


সভায় আলোচনায় সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে আলোচনা করেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব জে কে সিনহা। তিনি জানান, ইতিমধ্যে আলিমকো সংস্থা উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সিপাহীজলা জেলায় জমি চিহ্নিতকরণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যে সমস্ত জেলায় দিব্যাঙ্গজন এবং প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে সহায়ক যন্ত্রপাতি বিতরণের জন্য দপ্তরের মাধ্যমে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলছে। এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার ৪৩৪ টি ইউডিআইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত ডিডিআরসি-তে এই ইউডিআইডি কার্ড আপলোড করার কাজ চলছে এবং ডিডিআরসি সব তথ্য সংশোধনের জন্য শিবিরের আয়োজন করছে। নিরাময় স্বাস্থ্য বীমা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে সিআরসি-র মাধ্যমে নিয়মিত শিবির করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত ৪টি নুতন ডিডিআরসি তৈরি প্রক্রিয়াধীন, বলেন তিনি।


তিনি জানান, মাদক দ্রব্যের কুপ্রভাব সম্পর্কে সচেতনতামূলক কর্মসূচিতেও দপ্তর সদর্থক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে মাদকাসক্তদের সুস্থ করে তাদের দক্ষতা বিকাশের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট দপ্তরকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক দ্রব্যের কুপ্রভাব সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে শিক্ষা দপ্তরকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় এবং ক্ষমতায়ন দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পগুলিকে সূচারুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শারদোৎসবের পর কর্মশালার আয়োজন করা হবে। সভায় এছাড়াও ডে কেয়ার সেন্টার এবং ওল্ড এইজ হোম গঠন ইত্যাদি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।


এদিনের সভায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তররের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, তপশিলি জাতিকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান দাস, মুখ্যসচিব কুমার অলক প্রমুখ।