নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ অক্টোবর ।। রাজ্যের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ খুব জোর গতিতে এগুচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। কংগ্রেস ত্যাগী পিযুষ বিশ্বাস, তাঁর পুত্র পূজন বিশ্বাস, তাপস দে, তেজেন দাস প্রমুখরা প্রদ্যুত কিশোরের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়ার অতি ঘনিষ্ঠতার খবর মিলেছে। সংবাদে এটাও প্রকাশ্যে এসেছে, প্রদ্যুতের তিপ্রা মথা একটি বাঙালি শাখা তৈরী উদ্যোগ নিয়েছে। কংগ্রেস ত্যাগী যারা যুক্ত হয়েছেন নতুন দল গঠন করে তিপ্রা মথার সহযোগী হিসেবে তাঁদের চলার পথ নির্দিষ্ট করেছে বলে খবর। পৃথক দল হলেও তিপ্রা মথার শক্তি ও তার রাজনৈতিক ব্যাপ্তির কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। এই অবস্থায় রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ কোন খাতে বিবে এই মুহুর্তে বলা মুশকিল। তবে, পরিস্থিতি যেদিকে নেওয়ার চেষ্টা চলছে তাতে রাজ্যের জাতি-জনজাতির ঐক্যের এবং সম্প্রীতির ক্ষেত্রে অন্তরায় নিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে।
তিপ্রা মথা গত নির্বাচনে এডিসি দখল করেছে। জনজাতি জাত্যাভিমানী ভোটের বাক্সে যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলেছে। যার কারণে এডিসির ২৮টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করে শক্তিমত্যার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদিকে সিপিএম এডিসি থেকে মুছে গেছে। কংগ্রেসেরও একই অবস্থা। বিজেপি যত আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, অধিকাংশ আসনেই জয়লাভ করেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন আইপিএফটিকে ছেড়ে দিয়েছিল বিজেপি। সেখানে শাসক জোটের শরিক দল মুছে গেছে। ফলে, এই পরিস্থিতিতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে জনজাতি সংরক্ষিত ২০টি বিধানসভা আসন ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকায় থাকছে। তাই, এডিসির রাজনীতি ত্রিপুরার ভাগ্যাকাশে কি পরিণাম নিয়ে আসবে তার উপর নির্ভর করছে এরাজ্যে ক্ষমতা দখলের চাবিকাঠি। বিধানসভার এসসি এবং সাধারণ আসনে বেশি সংখ্যক আসনে জয়ী হতে না পারলে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন চুরমার হয়ে যাবে। এই প্রেক্ষাপটে তিপ্রা মথার রাজনৈতিক রণকৌশল অনেক বেশি তাত্পর্যপুর্ন বলেই মনে করা হচ্ছে। এযাবত্কালে অনেক জনজাতি ভিত্তিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। কিন্ত, তাঁদের কোন দলই বাঙালি সংগঠন গড়ে রাজনীতির পাশা খেলায় মত্ত হয়েছেন এমন নজির নেই। এক্ষেত্রে তিপ্রা মথা এমনই রাজনৈতিক কৌশল আগামীদিনে রাজ্য দখলের স্বপ্নে বিভোর।
ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। বিজেপি ইতিমধ্যেই সাংগঠনিক কাজকর্মের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। সিপিএম আগের থেকে কিছুটা সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে। আর নব্য ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে বিভোর রাজ্যে কমিটি গড়তে গিয়েই হাবুডুবু খাচ্ছে। মানুষের আশা-ভরসা রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় তিপ্রা মথার রাজনৈতিক কৌশল আগামীদিনে কি প্রভাব ফেলবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

