পুরসভা ও প্রশাসনের জন্যই একের পর এক দুর্ঘটনা, তোপ গৃহমালিক সমিতির

অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ২৯ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : সরকারের দূরদৃষ্টি এবং সদিচ্ছার অভাবের জন্য গোটা শহর খন্ডহর হয়ে উঠছে। বুধবার আহিড়িটোলায় বাড়ি ভাঙার পর এই মন্তব্য করলেন দি ক্যালকাটা হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার রক্ষিত। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালের বাড়িভাড়া আইনের অসঙ্গতির জন্যই গৃহমালিকরা কেউ পুরনো ও জীর্ণ বাড়ি সারাচ্ছেন না। বাড়ছে বিপদ।

সুকুমারবাবুর হিসাবে, গোটা কলকাতায় পুরনো বাড়ি আছে প্রায় ছ‘হাজার। এর মধ্যে খারাপ এবং অতি খারাপ বা বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা যথাক্রমে পাঁচ হাজার ও দেড় হাজারের মত। সংখ্যাটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। বাড়িভাড়া আইনে বলা হয়েছিল, পুরনো বা জীর্ণ বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করলে সংশ্লিষ্ট জমি ও নির্মাণব্যয়ের পৌনে সাত শতাংশ বছরে ভাড়া-বাবদ ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে আদায় করা যাবে। এর মধ্যে আবার দুই শতাংশ যাবে পুরকরে। অর্থাৎ, বাড়িকে বিপন্মুক্ত করতে মালিক তাঁর বরাদ্দের পৌনে পাঁচ শতাংশ বছরে পাবেন ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে।

সুকুমারবাবু বলেন, “মালিক যদি আদৌ অর্থের সঙ্কুলান করতে পারেন, তবে তা লাভজনক প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন। ভাড়াটিয়াকে থাকতে দিয়ে কেন খামোকা নিজের লোকসান করবেন? দীর্ঘদিন ধরে যৎসামান্য ভাড়া পেয়ে গৃহমালিকদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আর, সরকার বা ব্যাঙ্ক যদি সুলভে এই খাতে ঋণ না দেয়, মালিকদের পক্ষে অর্থের সঙ্কুলান সম্ভব নয়। আমরা কয়েক মাস আগে এই সুলভ ঋণের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব সরকারকে দিয়েছিলাম। জবাব পাইনি।“ সুকুমারবাবু প্রশ্ন করেন, “যদি মালিক বিপজ্জনক পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করেন, বাড়িভাড়া আইন অনুযায়ী নয়া হারে নিয়মিত ভাড়ার নিশ্চয়তা কে দেবেন? ভাড়াটিয়াকে আইনগতভাবে তার দায় নিতে বাধ্য করতে হবে। এই সব প্রশ্নের সমাধান না হলে কোনও মালিক বিপজ্জনক বাড়ি মেরামতি বা পুনর্নির্মাণে এগোবেন না।“ সুকুমারবাবু বলেন, “রাজ্য সরকারের রেন্ট কন্ট্রোলে মালিকদের প্রাপ্য ৪০০ কোটি টাকার উপর আটকে আছে দীর্ঘদিন ধরে। দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও মালিকরা সেই টাকা পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে শহরের বাড়ির এই ভগ্নদশার জন্য দায়ী সরকারের দূরদৃষ্টি এবং সদিচ্ছার অভাব।“

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *