BRAKING NEWS

A month-long night curfew at Tripura : ১ অগাস্ট থেকে রাজ্যে এক মাসব্যাপী রাতের কারফিউ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুলাই৷৷ রাজ্যে পয়াল আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে প্রতিদিনি সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল পাঁচটা পর্যন্ত করোনা রাতের কারফিউ ঘোষণা করল রাজ্য সরকার৷ উঠে যাচ্ছে উইকেন্ড কারফিউ৷ তাছাড়া থাকছে না দিনের কারফিউ৷ সেই সাথে বেশ কিছু শিথিলতা আনা হয়েছে৷ তার মধ্যে যেমন রয়েছে জিম, দেবলায় ইত্যাদি৷
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকার সারা রাজ্যে করোনা রাতের কার্ফর মেয়াদ বাড়িয়েছে৷ এই পরিপ্রেক্ষিতে স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির স্টেট এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মুখ্যসচিব কুমার অলোক আজ এক আদেশে কিছু নির্দেশিকা জারি করেছেন৷


নির্দেশিকা অনুযায়ী, করোনা রাতের কার্ফ ১ আগস্ট, ২০২১ থেকে ৩১ আগস্ট, ২০২১ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৫টা পর্যন্ত সারা রাজ্যে কার্যকর থাকবে৷ এই আদেশ অনুসারে নিম্নলিখিত করোনা বিধিনিষেধ সারা রাজ্যে কার্যকর থাকবে : কঠোরভাবে করোনা নিয়ম পালন করে খোলা অথবা বন্ধ জায়গায় বৈঠক / জমায়েত (খোলা জায়গায় ১০০ জন পর্যন্ত এবং বন্ধ জায়গায় / হলের ৩০ শতাংশ আসন পূর্ণ করে) করা যাবে৷ ২ গজ দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে৷ কোভিড বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে এসব অনুষ্ঠানের ভিডিও রেকর্ডিং করা হবে৷ সিনেমা হল / মাল্টিপ্লে’, জিমন্যাসিয়াম / সুুইমিং পুল, স্পোর্টস কমপ্লে’ ও স্টেডিয়াম, বিনোদন পার্ক, বার ইত্যাদি ৩০ শতাংশ ধারণ ক্ষমতা পূরণ করে খোলা যাবে৷
সমস্ত এককভাবে পরিচালিত দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান (শপিং কমপ্লে’ / মল, বিউটি পার্লার, সেলুন সহ) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে৷ ক্রেতারা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন এবং মাস্ক পরিধান করেন তা সুুনিশ্চিত করবেন দোকানের মালিক৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বাজার কমিটি ভলান্টিয়ার নিয়োগ করবেন৷ ঔষধের দোকান সবসময় খোলা থাকবে৷


রেস্টুরেন্ট / ধাবা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে৷ হোটেলের ভিতরের রেস্টুরেন্ট বাইরের অতিথির জন্য সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে৷ কিন্তু হোটেলে অবস্থানকারী অতিথিরা সবসময় রেস্টুরেন্টের পরিষেবা নিতে পারবেন৷ রেস্টুরেন্ট / ধাবার ভিতরে মালিক বা তার সহকারীরা প্রতি ৩৬ স্কোয়ার ফুট এলাকায় একজনের বেশি থাকতে পারবেন না৷ সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস ১০০ শতাংশ উপস্থিতি নিয়ে চলবে এবং পরিবহণ ব্যবস্থায় ভিড় কমাতে বিভিন্ন সময়ে তাদের কর্মসময় থাকবে৷ যেমন সকাল ১০টা থেকে ৪.৩০ টা সকাল ১০.৩০ টা থেকে বিকাল ৫টা এবং সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫.৩০ টা৷ অফিসে সবাইকে কঠোরভাবে কোভিড নিয়ম মেনে চলতে হবে৷জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি ও কর্মস্থলের বাইরে যাবেন না৷ জরুরি প্রয়োজনে কোভিড নিয়ম মেনে চলাচল করা যেতে পারে৷ পরিবারের সদস্য ছাড়া বাকিদের সাথে পাবলিক প্লেস ও রাস্তায় সবসময় ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷ একমাত্র পরিবারের সদস্যরা এই নিয়মের বাইরে থাকবেন৷ তারা রাস্তা এবং অন্যত্র একসাথে চলাচল করতে পারবেন৷
কোভিড নিয়ম মেনে সর্বোচ্চ ৫০ জন নিয়ে বিবাহ অনুষ্ঠান চলতে পারে৷দাহক্রিয়া / অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান সর্বোচ্চ ২০ জন নিয়ে করা যাবে৷ কোভিড নিয়ম সমস্ত ধর্মীয় স্থান খোলা থাকতে পারবে৷ সমস্ত কর্মস্থল, পাবলিক প্লেস ও পরিবহণে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক৷


করোনা কার্ফ নিয়ে মুখ্যসচিবের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা অনুযায়ী সুুনির্দিষ্ট শর্তাবলী উল্লেখ করে জেলাশাসকগণ করোনা কার্ফর বিষয়ে বিস্তারিত আদেশ জারি করবেন৷ বিধিভঙ্গকারীরা বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর ৫১ থেকে ৬০ নং ধারার পাশাপাশি আইপিসি-র ১৮৮ ধারা এবং অন্যান্য আইনি ধারায় শাস্তিযোগ্য৷ সরকার এছাড়াও এপিডেমিক ডিজিজ অ্যাক্ট ১৯৮৭-র মূল ধারাও কার্যকর করেছেন৷ সারা রাজ্যে কার্ফর আওতার বাইরে থাকবে :যথাযথ কোভিড বিধি মেনে চলার মাধ্যমে সমস্ত দপ্তর এবং ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন / ট্রেনিং সেন্টারগুলির প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলি জারি থাকবে৷ একে অন্যের মধ্যে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে এই কর্মসূচিগুলি সম্পন্ন করা হবে৷
পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য সহ মাল পরিবহণকারী যানবাহন ও খালি যানবাহন, লোডিং / আনলোডিং চলবে৷টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট পরিষেবা, সম্পচার ও ক্যাবল পরিষেবা এবং আইটি এবং আইটি নির্ভর পরিষেবার সাথে যুক্ত কর্মী ও যানবাহন চলাচল করতে পারবে৷ ই-কমার্সের মাধ্যমে খাদ্য, ঔষধ ও স্বাস্থ্য সর’াম ইত্যাদি জরুরি দ্রব্যাদি ডেলিভারি করার কাজে নিযুক্ত কর্মী ও যানবাহন চলবে৷পেট্রোল পাম্প, এলপিজি, সিএনজি, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাসের খুচরো ও স্টোরেজ পরিষেবার কর্মী ও যানবাহন চলবে৷দিনরাত চলমান শিল্প / কোম্পানিতে বিভিন্ন শিফটে কর্মরত কর্মীরা সংশ্লিষ্ট সংস্থার বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারবেন৷ব্যাঙ্ক, এটিএম, আরবিআই, বীমা, এনআইসি, কাস্টমস ও স্থলবন্দর এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও যানবাহন চলবে৷ বিমানবন্দর / রেলওয়ে এবং কার্গো পরিষেবার সাথে যুক্ত কর্মীরা চলাচল করতে পারবেন৷ডাক ও ক্যরিয়ার পরিষেবায় নিযুক্ত কর্মী চলাচল করতে পারবেন৷বীজ, সার, কীটনাশক, ক’ষি যন্ত্রপাতি পরিবহণ ও মেরামতের সাথে যুক্ত ব্যক্তি কার্ফর আওতার বাইরে থাকবেন৷এফসিআই ও খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের মাল পরিবহণকারী কর্মী ও যানবাহন চলাচল করতে পারবে৷স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে যাওয়া রোগী ও তার সহকারি কার্ফর আওতার বাইরে থাকবে৷


ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সরকারি মিডিয়ার কর্মী বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে চলাচল করতে পারবেন৷
যথাযথ কোভিড-১৯ নির্দেশিকা মেনে চা বাগানের কাজকর্ম চলতে পারবে৷ চা পাতা পরিবহণকারী যানও চলতে পারবে৷হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য খাবারের দোকান থেকে হোম ডেলিভারি দেওয়া যাবে৷যথাযথ কোভিড নির্দেশিকা মেনে ই-কমার্সের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ডেলিভারি দেওয়া যাবে৷ গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, কোল্ড স্টোরেজ ও ওয়্যারহাউস খোলা থাকবে৷বেসরকারি নিরাপত্তা পরিষেবা৷হোটেলগুলি খোলা থাকবে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া এবং হোম ডেলিভারি পরিষেবা সহ৷ প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক ও গৃহস্থালীর সর’াম মেরামত ইত্যাদি পরিষেবার সাথে যুক্ত কর্মী চলাচল করতে পারবেন৷ জেলাশাসকের দ্বারা অনুমোদিত যে কোনও ধরণের ছাড়৷যথাযথ কোভিড নিয়ম মেনে রেগার কাজ চলবে৷সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিধানের নিয়ম মেনে গ্রামীণ এলাকায় ক’ষিকাজ / উদ্যান চাষ / মৎস্যচাষ / প্রাণী পালন ও রাবার ট্যাপিং-এর কাজ চলবে৷ দুগ্দ পরিবহণকারী যানবাহন চলতে পারবে৷নির্মাণ ও প্রজেক্টের কাজ চলবে৷


উল্লিখিত নির্দেশিকা অমান্যকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইপিসি-র ১৮৮ ধারায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে৷ আবার ’দ্য এপিডেমিক ডিজিজ কোভিড-১৯ রেগুলেশনস ২০২০-র অধীনে বলা হয়েছে যে- কর্মস্থলে / পাবলিক প্লেস এবং ভ্রমণে যানবাহণ চালানোর সময় মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক৷ সরকারি ও বেসরকারি যানবহণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে৷একমাত্র সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই দোকান খোলা যাবে এবং ভিড় যাতে না হয় সেজন্য স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে৷ যেসব দোকানের সামনের অংশ এক মিটারের কম প্রশস্ত সেখানে একসাথে একজন ক্রেতা থাকতে পারবেন৷ তবে ১ মিটারের বেশি কিন্তু ২ মিটারের কম প্রশস্ত হলে একসাথে দুইজন ক্রেতা থাকতে পারবেন এবং বাকিরা পিছনে অপেক্ষা করবে৷ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং প্রতিদিন দোকান স্যানিটাইজ করতে হবে৷মাস্ক পরিধানের নিয়ম ভঙ্গ করলে প্রথমবার ২০০ টাকা এবং পরবর্তী বারগুলিতে ৪০০ টাকা করে জরিমানা হবে৷সামাজিক দূরত্বের নিয়ম এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভঙ্গ করলে ১,০০০ টাকা জরিমানা হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *