BRAKING NEWS

জার্মানিতে রাহুলের সন্ত্রাসবাদ তোষণ : দেশকে কালিমালিপ্ত করছেন কংগ্রেস সভাপতি, দাবি সম্বিদ পাত্রের

নয়াদিল্লি, ২৩ আগস্ট (হি.স.) : বিদেশের মাটিতে ভারতের মর্যাদা কালিমালিপ্ত করেছেন রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছে বিজেপি।
বুধবার জার্মানির হামবুর্গের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল গান্ধী আইসিসের উদাহরণ দিয়ে বলেছিলেন, উন্নয়নের কর্মকাণ্ড থেকে সিংহভাগ মানুষদের বঞ্চিত করলে বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনগুলির বৃদ্ধি গোটা বিশ্বে ঘটবে। কংগ্রেস সভাপতি এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি। পাল্টা দেশজুড়ে বেকারত্ব সমস্যার প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের নিন্দায় মুখর আরপিএন সিং।
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, বিজেপি সরকার আদিবাসী, দলিত এবং সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত করে দিচ্ছে। এই প্রবণতা বিপদজনক হতে পারে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নিন্দায় মুখর হয়ে বিজেপির মুখোপাত্র সম্বিদ পাত্র বলেন, রাহুল গান্ধী ভারতের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করেছেন। দেশের নেতিবাচক ছবি তিনি তুলে ধরেছেন। এর জন্য তাকে কৈফিয়ৎ দিতে হবে। রাহুল গান্ধী সন্ত্রাসবাদকে ন্যা্য্যতা প্রতিপাদন করতে চেয়েছে। এমনকি তিনি আইসিসের হয়েও সওয়াল করেছেন। এর থেকে ভয়ানক এবং চিন্তার বিষয় আর কি হতে পারে? দেশের সংখ্যালঘুদের ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করেছেন তিনি। ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করছেন তিনি। সব বিষয়ে তিনি চিনকে টেনে আনেন। রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন ২৪ ঘন্টায় ৫০জন চাকরি পায়। ভারতে পায় ৪৪জন। এই রিপোর্ট তিনি কোথা থেকে পাচ্ছেন? এই রিপোর্ট কি ‘মেড ইন ১০ জনপথ’-এ তৈরি হয়েছে?ভারত সম্পর্কে রাহুল গান্ধীর কোনও তথ্যই নেই।
রাহুল গান্ধী ছাড়াও কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে সম্বিদ পাত্র বলেন, ১৯ বছর ধরে সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের সভানেত্রী ছিলেন। দেশকে তিনি ১০ বছর শাসন করেছিলেন। এই ভারতীয় সভ্যতাই সোনিয়া গান্ধীকে শীর্ষে তুলেছিল। ভারতীয় সংস্কৃতিকে এই ভাবে কালিমালিপ্ত করার জন্য সোনিয়া এবং রাহুল গান্ধীকে জনসমক্ষে এসে জবাবদিহি করতে হবে। কংগ্রেস সভাপতি নিজের মুখ দিয়ে অবিরত মিথ্যা কথা বলে চলেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আমলে মাত্র ১১টি রাজ্যে খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর করেছিল। আর বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার দেশের প্রতিটি রাজ্যে খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের সাফল্য তুলে ধরে সম্বিদ পাত্র বলেন, ৪৩১টি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা যার মোট মূল্য চার লক্ষ কোটি টাকা সরকারী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরসরী পৌচ্ছে যাচ্ছে। তার ফলে উপকৃত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি মোদী সরকারের যে প্রশংসা করছেন তাও তিনি তুলে ধরেছেন।
জার্মানিতে রাহুল গান্ধীর বক্তব্য নিয়ে উত্তাল দেশের রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে কংগ্রেস সভাপতির জবাবদিহি চেয়েছে বিজেপি। এবার পাল্টা বিজেপির নিন্দায় মুখোর হল কংগ্রেস।
বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা আরপিএন সিং বলেন, হামবুর্গের বুসেরিয়াস সামার স্কুলে বুধবার কংগ্রেস সভাপতি দেশের চাকরির অভাব তুলে ধরেছেন তিনি। এই সমস্যাটি বর্তমান সময়ে দেশের সব থেকে বেশি বড় সমস্যা। কর্মহীনতা কি ভাবে দেশের মানুষদের মনের মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্রোধ তৈরি করেছে সেই দিকটিই তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। দেশের সিংহভাগ মানুষের কর্মহীনতার বিষয়ে ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন দুই কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। কিন্তু বিগত চার বছরে সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। নিজেদের এই ব্যর্থতা থেকে সাধারণ মানুষদের মনোযোগ ঘোরানোর জন্যই এই রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। দেশজুড়ে নারীদের প্রতি যে অত্যাচার হচ্ছে প্রসঙ্গ তুলে ধরে আরপিএন সিং বলেন, দেশের মধ্যে মহিলাদের প্রতি বিশেষ করে শেল্টার হোমে যে ভাবে নারীদের প্রতি অত্যাচার হচ্ছে তাতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী একেবারেই নীরব। পাশাপাশি সম্বিদ পাত্রের ভাষার ধরণ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন আরপিএন সিং। তিনি বলেন রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।
প্রসঙ্গত, জার্মানির ওই সভা রাহুল গান্ধী বলেন নোটবন্দি এবং জিএসটির ফলে ছোটব্যবসায়ীরা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। দেশের কর্মসংস্থানের উপরও এর প্রভাব পড়েছে। এর জন্য মানুষের মনের মধ্যে ক্রোধের সঞ্চার হয়েছে। যার ফলে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। রাহুল গান্ধীর এমন মন্তব্যের নিন্দা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভি বলেন, রাহুল গান্ধীর এমন মন্তব্যে পেছনে যুক্তিটি আমি বুঝতে পারছি না। আইসিস এবং আল-কায়দার চিন্তাধারা বর্জন করেছে এই দেশ ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *