BRAKING NEWS

কর্মচারী ভোট ব্যাঙ্ক বাদ দিয়েই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েছে বামেরা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ জানুয়ারি৷৷ কর্মচারী ভোট ব্যাঙ্ক বাদ দিয়েই বামেরা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েছে৷ অন্তত, অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহার কথায় এই সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আভাস মিলেছে৷ সম্ভবত, বামফ্রন্ট সরকারের অন্তিম মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল মঙ্গলবার৷ এই বৈঠকেও কর্মচারীদের ডিএ ঘোষণা দেওয়া হয়নি৷ তাতে, রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীরা বামফ্রন্ট সরকারের উপর চরম অসন্তুষ্ট হবেন কি, এই প্রশ্ণের জবাবে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, যখন প্রয়োজন বোধ হবে তখনই ডিএ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার৷ ফলে ধারণা করা হচ্ছে, আপাতত নির্বাচনের মুখে শিক্ষক কর্মচারীদের সন্তুষ্ট করতে চাইছে না বামফ্রন্ট সরকার৷

এদিন মহাকরণে রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের ডিএ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, ১ শতাংশ ডিএ বকেয়া রয়েছে৷ কিন্তু, নির্বাচন ঘোষণা হলে ডিএ দেওয়া কিভাবে সম্ভব সেবিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দাবি, নির্বাচন ঘোষণা হলেও মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাঁধা নেই৷ তাতে, প্রশ্ণ উঠে মন্ত্রিসভার বৈঠক হলেও শিক্ষক কর্মচারীদের সুবিধা ঘোষণা দেওয়া কিভাবে সম্ভব৷ অর্থমন্ত্রীর দাবি, নির্বাচন ঘোষণা হলেও মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষক কর্মচারীদের সুবিধা দিতেও বাঁধা নেই৷

তাঁর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে জানতে চাওয়া হয়, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি রাজ্যে সরকার গঠনের সাথে সাথেই শিক্ষক কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্বেও আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিএ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নেয়নি কেন৷ জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রসার ভারতী ক্যাজুয়েল ওয়ার্কারদের দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না৷ এই প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘দিল্লির লাড্ডু যারা খেয়েছেন তারাও পস্তান এবং যারা খাননি তারাও পস্তান৷’ তিনি উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, মণিপুরে নির্বাচনের আগে শিক্ষক কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি৷ কিন্তু, এখন সে রাজ্যের উপ মুখ্যমন্ত্রী মণিপুরের শিক্ষক কর্মচারীদের সপ্তম বেতন কমিশন লাগু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন৷ অর্থমন্ত্রী এদিন কটাক্ষ করে আরো বলেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ কিন্তু, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নির্বাচনের আগে যা বলা হয়েছিল তা ছিল জুমলা৷ অর্থাৎ ফাঁকা প্রতিশ্রুতি৷ এই প্রসঙ্গ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বিদ্রুপ করে বলেন, এরাজ্যে বিজেপি যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ভোটের পর তা জুমলা হবে৷

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীরা অতীতেও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন৷ আগামী দিনেও তাঁদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে৷ কারণ, সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটের আগে বা পরে তা দিয়ে বামফ্রন্ট সরকার বিচার করেনা৷ যখন যা প্রয়োজন বোধ করা হয় তখন তা দিয়ে থাকে বামফ্রন্ট সরকার৷ এই দাবি করে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, ডিএ নিয়েও প্রয়োজন বোধ হলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তাতেই ধারণা করা হচ্ছে, এই  মুহূর্তে রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীদের ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেনা বামফ্রন্ট সরকার৷ সমালোচকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনে শিক্ষক কর্মচারীদের ভোট বাদ দিয়েই প্রস্তুতি নিয়েছে বামেরা৷ তাই, ডিএ মিটিয়ে দিলেই শিক্ষক কর্মচারীরা বামেদের পক্ষেই ভোট দেবেন, এমনটা মনে করছে না বামফ্রন্ট৷ অন্তত আসন্ন নির্বাচনে কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হয়েও কর্মচারী ভোট ব্যাঙ্কের তোয়াক্কা না করার সাহসী সিদ্ধান্ত সেটাই প্রমাণ করেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *