BRAKING NEWS

সিপিএমের মতে মন্ত্রী কিংবা আমলাকে তলব করার এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালের, রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট দেখা দিয়েছে, কেন্দ্রকে জানাবে বিজেপি

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশককে রাজভবনে তলব করার বিষয়ে রাজ্যপালের এক্তিয়ার

গৌতম দাশ ও বিপ্লবকুমার দেব

নিয়ে প্রশ্ণ তুলেছে সিপিএম৷ বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলেন, সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোন মন্ত্রী কিংবা আমলা রাজ্যপাল ডাকলেই যেতে পারেন না৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপাল সাংবিধানিক রীতি অগ্রাহ্য করেছেন৷ ফলে, রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশক মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজ্যপালের ডাকে যাননি রাজভবনে এধরণের প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে গৌতম দাশের এই প্রতিক্রিয়ায় ঘটনার সত্যতাই প্রমাণ করেছে৷

বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্য সচিব সঞ্জিব রঞ্জন এবং পুলিশের মহানির্দেশক এ কে শুক্লকে রাজভবনে যেতে বারণ করার নির্দেশ সম্পর্কিত প্রকাশিত সংবাদ সম্পর্কে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়৷ তাতে তিনি বলেন, সাংবিধানিক রীতি অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া কোন মন্ত্রী কিংবা আমলা রাজ্যপাল ডাকলেই যেতে পারেন না৷ তাঁর মতে, কোন মন্ত্রী কিংবা আমলাকে ডাকার এক্তিয়ার নেই রাজ্যপালের৷ এজন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আগে কথা বলতে হয়৷ এবিষয়ে তাঁর যুক্তি, রাষ্ট্রপতি কোন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা আমলাকে ডাকলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া তাঁরা যেতে পারবেন না৷ তাই তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপাল সাংবিধানিক রীতি অগ্রাহ্য করেছেন৷ কারণ, রাজ্যপাল তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে মুখ্যসচিব এবং পুলিশের মহানির্দেশককে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছেন৷

এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যপালের ডাকে সাড়া না দিয়ে মুখ্য সচিব এবং রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক যে কাজ করেছেন তা নিয়ে এবার দেশের সর্বোচ্চস্তরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি৷ এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লবকুমার দেব বলেন, রাজ্যের প্রশাসনিক ক্ষমতা পুরোপুরি সিপিএমের মুঠোয় চলে গেছে৷ তাই, প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তা রাজ্যপালের নির্দেশ অমান্য করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী রাজভবনে যাননি৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকে এবিষয়ে অবগত করা হবে৷ সাথে যোগ করেন, এধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব নয়, বিষয়টি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকেও জানানো হবে৷ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে৷ তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে রাজ্যে নির্বাচন ঘোষণার আগে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানানো হবে৷ বিপ্লববাবু জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী তথা শীর্ষ বিজেপি নেতা মুখতার আববাস নকভি, বিজেপি সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব, নেডার কনভেনার তথা ত্রিপুরায় বিজেপি’র নির্বাচন প্রভারী ড হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, বিজেপি রাজ্য কমিটির মুখপাত্র ডাঃ অশোক সিনহা সহ তিনিও মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সাথে দেখা করবেন৷ নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রকাশ সহ রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অবগত করা হবে৷

সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ এদিন এবিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে অভিযোগ তুলে বিজেপি নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ তিনি বলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ক্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের কথা বলে গেছেন৷ ৫ জানুয়ারী চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে৷ এই সময়ে বিজেপির এই ধরনের দাবি ষড়যন্ত্রমূলক বলে কটাক্ষ করেন শ্রীদাশ৷ তিনি বলেন, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বিধানসভার মেয়াদ শেষের আগে নির্বাচন হবে বলে জানিয়ে গেছেন৷ কিন্তু, রাজ্যে সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ ব্যহত করার প্রয়াস নিয়েছে বিজেপি, অভিযোগ করেন গৌতমবাবু৷ তাই রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে ব্যহত না হতে পারে, সেবিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ সাথে জোর গলায় দাবি করেন, রাজ্যে কোন ধরনের সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *