BRAKING NEWS

টুজি কেলেঙ্কারি মামলায় বড় রায়, বেকসুর খালাস হলেন এ রাজা ও কানিমোঝি সহ সব অভিযুক্ত

নয়াদিল্লি, ২১ ডিসেম্বর (হি.স.): অবশেষে প্রবল স্বস্তি| টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি মামলায় বেকসুর খালাস হলেন প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা এবং ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি সহ ১৭ জন অভিযুক্তই| বৃহস্পতিবার তাঁদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে বিশেষ সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) আদালত| টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার সময় এদিন পাটিয়ালা হাউস কোর্টে উপস্থিত ছিলেন এ রাজা এবং ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি সহ বেশিরভাগ অভিযুক্তই| এক লাইনের রায়ে তাঁদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছেন বিশেষ সিবিআই বিচারক ওপি সাইনি| রায়দানের সময় বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি ও পি সাইনি বলেছেন, ‘টুজি স্পেকট্রাম বন্টনে কোনও দুর্নীতি হয়নি|’ আদালত আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দাখিল করতে পারেনি সিবিআই| টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি মামলায় এদিন এ রাজা এবং কানিমোঝি ছাড়া বেকসুর খালাস হয়েছেন প্রাক্তন টেলিকম সচিব সিদ্ধার্থ বেহুরা, রাজা-র প্রাক্তন প্রাইভেট সচিব আর কে চাঁদোলিয়া, শাহিদ উসমান বালওয়া, বিনোদ গোয়েঙ্কা, ইউনিটেক লিমিটেড এমডি সঞ্জয় চন্দ্র,রিলায়েন্স অনিল ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপের শীর্ষ কার্যনির্বাহী গৌতম ডোশি, সুরেন্দ্র পিপারা এবং হরি নাইর, কুসেগাঁও ফ্রুটস এণ্ড ভেজিটেবলস প্রাইভেট লিমিটেড-এর ডিরেক্টর আসিফ বালওয়া এবং রাজীব আগরওয়াল, কলাইগনার টিভি ডিরেক্টর শরদ কুমার, বলিউড প্রযোজক করিম মোরানি এবং পি অমিরথাম| এদিন রায়দানের পরই আদালত চত্বরে উত্সবে মেতে ওঠেন ডিএমকে সমর্থকরা| বাজি ফাটিয়ে, স্লোগান দিয়ে নেতাদের স্বাগত জানান তাঁরা|

টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি মামলার রায়দানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল পাটিয়ালা হাউস কোর্ট চত্বর| রায়দানের প্রাক্কালে সকাল ৯.৪৩ মিনিট নাগাদ আদালত চত্বরে উপস্থিত হন প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা এবং ডিএমকে প্রধান এম করুণানিধির কন্যা তথা রাজ্যসভার সাংসদ কানিমোঝি| এই মামলায় ১৫৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ছিলেন রিলায়েন্স অনিল ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপের অনিল আম্বানি ও তাঁর স্ত্রী টিনা আম্বানি| দীর্ঘ ৬ বছর ধরে শুনানি চলার পর বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর টুজি মামলার রায় ঘোষণা করল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত| টুজি দুর্নীতির তিনটি মামলাতেই এ রাজা এবং কানিমোঝিকে মুক্তি দিয়েছে সিবিআই আদালত|

২০১০ সালের ক্যাগ রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথম টুজি দুর্নীতির কথা প্রকাশ্যে আসে| ইউপিএ দুই সরকারের আমলে মোবাইল পরিষেবায় টুজি স্পেকট্রাম বন্টনে দুর্নীতি হওয়ায় সরকারের ১ লক্ষ ৭৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল| যদিও, পরবর্তী সময়ে সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল, তাতে রাজকোষে ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকার আশেপাশে ছিল বলে উল্লেখ করা হয়| এ রাজা এবং কানিমোঝি সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে টুজি স্পেকট্রাম বন্টনে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল|

এদিন টুজি স্পেকট্রাম দুর্নীতি মামলায় বেকসুর খালাস হওয়ার পর প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা বলেছেন, ‘একজন ভালো আইনজীবীর মতো, সম্পূর্ণ রায় পড়ার পরই আমি মন্তব্য করবো|’ বেকসুর খালাস হওয়ার পর ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি বলেছেন, ‘আইনের জয় হল| গত ৭ বছর প্রত্যেকের কাছে খুব কঠিন ছিল…| অনেক ষড়যন্ত্র ছিল| এক জনকে দোষারোপ করা যাবে না| এই রায় ডিএমকে সমর্থকদের উত্সাহিত করবে|’ অন্যদিকে, বিশেষ সিবিআই আদালতের রায়দানের পর ১১.১০ মিনিট নাগাদ টুইট করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, ‘প্রাক্তন সিএজি বিনোদ রাইকে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে|’ টুজি স্পেকট্রাম মামলার রায় দানের পর কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, ‘নিরাপরাধ মানুষদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছিল|’ বিশেষ সিবিআই আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছেন, ‘আমি দম্ভ করতে চাই না| আদালতের রায়কে সম্মান করতে হবে| আমি গর্বিত, কারণ আদলত স্পষ্টতই তা জানিয়ে দিয়েছে| বিরোধী দল হিসেবেও আমরা চাইনি তাঁরা জেলে যাক|’

তবে, আদালতের রায় প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সুব্রামাণিয়ান স্বামী বলেছেন, ‘১৭ জন অভিযুক্তের বেকসুর খালাসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়া উচিত তদন্তকারী সংস্থার|’ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, ‘এই রায়কে সম্মানের একটি ব্যাজ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয় কংগ্রেসের|’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *