BRAKING NEWS

আজ মধ্যরাতে জিএসটির সূচনা, বয়কটের ডাক দিল বিরোধীরা, সিদ্ধান্ত বদল করে বিরোধীদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আহ্বান অর্থমন্ত্রীর

নয়াদিল্লি, ২৯ জুন (হিস)৷৷ শুক্রবার রাত ১১টায় দেশের ইতিহাসে কর ব্যবস্থায় আসছে মাহেন্দ্রক্ষণ৷ স্বাধীনতার সত্তর বছরে

বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লীতে জিএসটি নিয়ে বাণিজ্য মহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷ ছবি – পিআইবি৷

ত্রিশ জুন মধ্যরাতে এক দেশ, এক কর ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক সূচনা হতে চলেছে৷ সংসদের সেন্ট্রাল হলে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সারা দেশে জিএসটি (পণ্য ও পরিষেবা কর) এর সূচনা করবেন৷ এরই সাথে ১লা জুলাই থেকে কার্য্যকর হবে নয়া এই কর ব্যবস্থা৷ এই অনুষ্ঠানে শাসক এবং বিরোধী দলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির দাবি নয়া কর ব্যবস্থায় গোটা দেশবাসী উপকৃত হবেন৷ কেন্দ্রের বক্তব্য জিএসটি এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ৷
তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের পর সংসদের হলে কেন্দ্রের ডাকা জিএসটি উদ্বোধনি অনুষ্ঠান বয়কট করল কংগ্রেস৷ আগামীকাল শুক্রবার মধ্যরাতে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বিশেষ অনুষ্ঠানে দেশজুড়ে চালু হতে চলেছে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি)৷ কিন্তু জিএসটি-র জন্মক্ষণের ওই অনুষ্ঠানে থাকছে না প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস৷ বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা সত্যব্রত চতুর্বেদী৷ এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করেছে৷ সত্যব্রত চতুর্বেদী বলেন, জিএসটি কার্য্যকর করতে যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, তাতে অংশ নেবেন না কংগ্রেস৷ এনিয়ে আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সহ দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী৷ সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, নিয়ে সেদিনের বিশেষ অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না কংগ্রেস৷ এর আগে সংসদে শুক্রবার মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা জিএসটি উদ্বোধনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল কংগ্রেস৷ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা প্রশ্ণ তোলেন, যেখানে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকবেন, সেখানে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী জিএসটি উদ্বোধন করতে পারেন৷ এতে তো রাষ্ট্রপতির পদমর্যাদাই খাটো করা হয়৷ জিএসটি-র সূচনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ নিয়ে প্রথম থেকেই কংগ্রেসের মধ্যে দোলাচন ছিল৷ কারণ, কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য, মোদী চাইছেন মধ্যরাতের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজেকে নেহরুর সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে! প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার মধ্যরাতে বক্তব্য রেখেছিলেন প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু৷ সূত্রের খবর, জিএসটি-রআগে তাঁর অনুকরমে বক্তব্য রাখতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ যা ভালোভাবে নিতে পারছে না কংগ্রেস৷ কংগ্রেসের বক্তব্য, আদতে জিএসটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের মস্তিস্কপ্রসূত৷ কংগ্রেসের কেউ কেউ এমনটাও কনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১১ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার যখন জিএসটি কার্যকরের জন্য সংবিধান সংশোধনী আনতে চেয়েছিলেন, তখন তার তীব্র বিরোধিতা করেছিল গুজরাত সরকার৷ সেসময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এই নরেন্দ্র মোদী৷ অনুষ্ঠান বয়কট করা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত বসার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস৷ এদিন সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সত্যব্রত চতুর্বেদী অনুষ্ঠান বয়কট করার কথা জানিয়েছেন৷ এদিকে, এদিন বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, মোদীর আমলে অত্যাচারিত হচ্ছেন সংখ্যালঘু এবং দলিতরা৷ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বাসিন্দারা দুর্দশাগ্রস্ত৷ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা৷ তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন৷ সেই সব কিছু না ভেবে জিএসটি নিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে৷ অন্যদিকে, জিএসটিরি বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বস্ত্র শিল্পে ধর্মঘট শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা৷ পশ্চিমবঙ্গেও ৯৬ ঘন্টার ধর্মঘট চলছে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের৷ বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও শহরের রাস্তায় জিএসটিররর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা৷ পোড়ানো হয় কুশপুতুল৷ একইসঙ্গে হরিয়ানাতেও ধর্মঘটে নেমেছেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা৷ রোহতকে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা৷ জিএসটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস৷ দলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর মতে, জিএসটি চালুর জন্য এটা আদশ সময় নয়৷ নোটবাতিলের পর এখনও তৈরি হয়নি দেশের অর্থনীতি৷ এই মুহূর্তে কার্যকর বলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ছোটো ব্যবসায়ীরা৷
এদিকে, সিদ্ধান্ত বদল করে বিরোধীদের জিএসটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আহ্বান জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *