BRAKING NEWS

১৯৯৩ মুম্বই বিস্ফোরণ, দোষী সাব্যস্ত আৱু সালেম সহ ৬

মুম্বই, ১৬ জুন (হি.স.): ভয়াবহ মুম্বই বিস্ফোরণ (১৯৯৩) মামলায় আৱু সালেম, মুস্তফা দোসা, ফিরোজ খান, তাহির মার্চেন্ট, রিয়াদ সিদ্দিকি আর করিমুল্লা শেখকে দোষী সাব্যস্ত করল মুম্বই-এর বিশেষ টাডা (টেররিস্ট অ্যান্ড ডিসরাপটিভ অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট) আদালত| তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসমূলক কার‌্যকলাপ এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে| যদিও অপর অভিযুক্ত আব্দুল কায়ুম-কে ব্যক্তিগত বন্ডে রেহাই দিয়েছে আদালত| অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বাড়িতে অস্ত্র পেঁৗছে দেওয়ার অভিযোগ ছিল কায়ুমের বিরুদ্ধে| ২৪ বছর পর ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার রায় দিতে গিয়ে শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, কায়ুমের বিরুদ্ধে সরাসরি বিস্ফোরণে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি| আগামী ১৯ জুন শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত| এই মামলায় টাইগার মেমন এখনও পলাতক|
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল বাণিজ্যনগরী মুম্বই| কেঁপে উঠেছিল বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, কাঠাবাজার, সেনাভবন লাগোয়া লাকি পেট্রোল পাম্প, পাসপোর্ট অফিসের বিপরীত স্থান, মহিম কজওয়ের ফিশারম্যান কলোনি, এয়ার ইন্ডিয়া ভবনের বেসমেন্ট প্রভৃতি জায়গা| বিস্ফোরণে মৃতু্য হয়েছিল ২৫৭ জনের| আহত হয়েছিলেন ৭১৩ জন| ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল অগুণিত| ভয়াবহ বিস্ফোরণে দাউদ ইব্রাহিম, আৱু সালেম সহ মোট ৩৬ জন অভিযুক্ত রয়েছে|

 

১৯৯৩ থেকে একনজরে ভয়াবহ মুম্বাই বিস্ফোরণের ঘটনাপঞ্জী
মুম্বই, ১৬ জুন (হি.স.): ভয়াবহ মুম্বই বিস্ফোরণ (১৯৯৩) মামলায় আৱু সালেম, মুস্তফা দোসা, ফিরোজ খান, তাহির মার্চেন্ট, রিয়াদ সিদ্দিকি আর করিমুল্লা শেখকে দোষী সাব্যস্ত করল মুম্বই-এর বিশেষ টাডা (টেররিস্ট অ্যান্ড ডিসরাপটিভ অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট) আদালত| তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসমূলক কার‌্যরকলাপ এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে| যদিও অপর অভিযুক্ত আব্দুল কায়ুম-কে ব্যক্তিগত বন্ডে রেহাই দিয়েছে আদালত| অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের বাড়িতে অস্ত্র পেঁছে দেওয়ার অভিযোগ ছিল কায়ুমের বিরুদ্ধে| ২৪ বছর পর ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার রায় দিতে গিয়ে শুক্রবার আদালত জানিয়েছে, কায়ুমের বিরুদ্ধে সরাসরি বিস্ফোরণে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি| আগামী ১৯ জুন শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত| এই মামলায় টাইগার মেমন এখনও পলাতক| এই মামলায় এর আগে ২০১৫ সালে দোষী সাব্যস্ত ইয়াকুব মেননের ফাঁসি হয়| মুম্বই বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম চক্রী ছিল দাউদ ঘনিষ্ঠ ইয়াকুব মেনন|

১৯৯৩ থেকে একনজরে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণের ঘটনাপঞ্জী

১২ মার্চ, ১৯৯৩ : মুম্বইয়ের ১৩ টি আলাদা জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৫৭ জনের মৃতু্য, আহত ৭১৩ জন|
১৯ এপ্রিল ১৯৯৩ : বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে গ্রেফতার করা হয়|
৪ নভেম্বর ১৯৯৩ : ১৮৯ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১০ হাজার পাতার প্রাথমিক চার্জশিট দাখিল করা হয়| যার মধ্যে সঞ্জয় দত্তের নাম ছিল|
১৯ নভেম্বর ১৯৯৩ : মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার দায়িত্বভার দেওয়া হয় সিবিআইকে|
১ এপ্রিল ১৯৯৪ : মুম্বই নগর দায়রা আদালত থেকে টাডা আদালতকে আলাদা একটি জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয় আর্থার রোড সেন্ট্রাল জেলের ভিতরে|
১০ এপ্রিল ১৯৯৪ : ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া ২৬ জনকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় টাডা আদালত| পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টও দুজনকে (আসীম আজমি ও আমজেদ মেহের বক্স) মুক্তি দেয়|
১৯ এপ্রিল ১৯৯৪ : মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার ট্রায়াল শুরু হয়| অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনও শুরু হয় তখনই|
১৪ অক্টোবর ১৯৯৪ : সুপ্রিম কোর্টে জামিন পান অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত|
২৯ মার্চ ১৯৯৬ : মুম্বই বিস্ফোরণ মামলা বিচারের দায়িত্ব বর্তায় স্পেশাল টাডা বিচারপতি পিডি কোড়ের উপরে|
অক্টোবর ২০০০ : এই মামলায় সাক্ষী হিসাবে ৬৮৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়|
জুলাই ২০০১ : অভিযুক্ত সবার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়|
আগস্ট, ২০০১- অগাস্ট ২০০২ : মামলায় সরকারি পক্ষ ও আসামি পক্ষের মধ্যে বক্তব্যের শুনানি চলে|
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০০৩ : দাউদ ইব্রাহিমের দলের সদস্য ইজাজ পাঠানকে আদালতে হাজির করা হয়|
অগাস্ট ১০, ২০০৬ : বিচারপতি পিডি কোড়ে শুনানি শেষে জানান, মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে ১২ সেপ্টেম্বর|
১২ সেপ্টেম্বর, ২০০৬ : গোটা ঘটনায় ১২ জনকে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়| ২০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনানো হয়|
১ নভেম্বর, ২০১১ : সুপ্রিম কোর্টে মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১০০ জনের আবেদনের শুনানি শুরু হয়|
২৯ আগস্ট, ২০১২ : মুম্বই বিস্ফোরণ মামলার রায়দান স্থগিত রাখে সর্বোচ্চ আদালত|
২১ মার্চ, ২০১৩ : মুম্বই বিস্ফোরণের অন্যতম মাস্টার মাইন্ড ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাজাকে সমর্থন সুপ্রিম কোর্টের|
মে, ২০১৪ : রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ইয়াকুব মেমনের মৃতু্যদণ্ড রদের আবেদন খারিজ করলেন|
২ জুন, ২০১৪ : ফের একবার ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাজা স্থগিত রেখে ফের শুনানি চলল সুপ্রিম কোর্টে|
৯ এপ্রিল, ২০১৫ : ফের একবার ইয়াকুব মেমনের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট|
২১ জুলাই, ২০১৫ : ইয়াকুব মেমনের শেষ আইনি অস্ত্র কিউরিটিভ পিটিশনও খারিজ করে মৃতু্যদণ্ডের সাজাই বহাল রাখল শীর্ষ আদালত| সেদিনই কয়েকঘণ্টার মধ্যে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় ইয়াকুব|
২৩ জুলাই, ২০১৫ : ৩০ জুলাই নির্ধারিত মৃতু্যদণ্ডের সাজা স্থগিত রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান ইয়াকুবের আইনজীবীরা|
২৯ জুলাই, ২০১৫ : ইয়াকুবের সেই আবেদনও খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট| এরপর ফের একবার রাষ্ট্রপতির কাছে নতুনভাবে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় ইয়াকুব মেমন| ফের একবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল তা খারিজ করেন, পত্রপাট নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতিও|
৩০ জুলাই, ২০১৫ : এদিন মাঝরাতে ফের একবার ইয়াকুব প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় সুপ্রিম কোর্টের কাছে| মাঝরাতে দীর্ঘ প্রাণ দু’ঘণ্টার শুনানির পর তা খারিজ হয় ও এদিন সকাল সাড়ে ৬ টার পরে ইয়াকুবরে শেষপর‌্যন্ত ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়|
ফেব্রুয়ারি ২০১৫ : ইয়াকুবের ঘটনা চলার মাঝেই মুম্বইয়ের বিল্ডার প্রদীপ জৈন হত্যা মামলায় আৱু সালেমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল আদালত|
১৬ জুন, ২০১৭ : বিশেষ আদালতের রায়ে আৱু সালেম সহ মোট পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে| ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসবাদের ধারায় আৱু সালেমকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত| টাডা আদালতের রায় মোতাবেক আৱু সালেম, মুস্তাফা দোসা, তাহির মার্চেন্ট ও ফিরোজ খান মুম্বই বিস্ফোরণের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের অন্যতম| আগামী ১৯ জুন শাস্তি ঘোষণা করবে আদালত|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *