নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ মার্চ৷৷ ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতি মামলাটি মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টে শুনানি হয়েছে৷ আর এই মামলাকে ঘিরে রাজ্যবাসী উৎকন্ঠায় কাটাচ্ছেন৷ বিশেষ করে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা এই মামলাকে ঘিরে ভীষণ চিন্তায় রয়েছেন৷ এদিন দিনভর রাজ্য সরকারের পক্ষের আইনজীবী পিপি রাও এবং শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী রাজীব ধওয়ান সওয়াল করেছেন৷ আগামীকাল ফের এই মামলায় শুনানি হবে৷ আগামীকাল বরিষ্ট কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী সলমান খুরশিদ এবং আইনজীবী জেপি কামাথ সওয়াল করবেন৷ ধারণা করা হচ্ছে, আগামীকাল এই মামলায় শুনানি সমাপ্ত হতে পারে৷
এদিন, সুপ্রিমকোর্টে বিচারপতি আদর্শকুমার গোয়েল এবং বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়৷ মোট তিনটি মামলা একত্রিত করে এদিন শুনানি হয়েছে৷ রাজ্য সরকার, চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা এবং শিক্ষক সংগঠনের তরফে দায়ের মামলার একত্রিতভাবে শুনানি হয়েছে৷ রাজ্য সরকার, চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা এবং শিক্ষক সংগঠনের তরফে সুপ্রিমকোর্টে মামলা পরিচালনা করছেন বরিষ্ঠ আইনজীবী রাজীব ধওয়ান, পিপি রাও এবং জেপি কামাথ৷
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৭ মে উচ্চ আদালত ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরিচ্যুতির রায় দিয়েছিলেন৷ রাজ্য সরকারের নিয়োগনীতি বাতিল করে দিয়ে এই রায় দিয়েছিল আদালত৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিমকোর্টে মানবিক আবেদনের ভিত্তিতে এসএলপি দাখিল করেন৷ গত ৬মার্চ তিনটি মামলা একসাথে শুনানির জন্য উঠেছিল৷ সেদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল৷ কিন্তু সুপ্রিমকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের সে আবেদন খারিজ করে ৮ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেছিল৷ এরপর ৮ মার্চ মামলা শুনানির জন্য উঠলে সরকার, শিক্ষক ও শিক্ষক সংগঠনের পক্ষের আইনজীবীরা পৃথক ভাবে সওয়াল করার আবেদন জানান৷ তাতে, অনেকটা সময় লাগবে বুঝতে পেরে ডিভিশন বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির দিন ২৮ মার্চ নির্ধারিত করেন৷ সেই মোতাবেক আজ সকাল সাড়ে দশটা থেকে সুপ্রিমকোর্টের ১৩নম্বর কোর্টে তিনটি মামলার একত্রে শুনানি শুরু হয়৷ বরিষ্ঠ আইনজীবী পিপি রাও এবং রাজীব ধওয়ান এদিন উচ্চ আদালতের রায়ে বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আবেদনের পক্ষে সওয়াল করেন৷ এদিন, প্রথমার্ধে শুনানি গড়িয়ে দ্বিতীয়ার্ধে পর্যন্ত যায়৷ দুই আইনজীবী তাদের বক্তব্য আদালতের কাছে তুলে ধরার পর পুনরায় আগামীকাল শুনানি হবে বলে নির্ধারিত করে সুপ্রিমকোর্ট৷ সে অনুযায়ী আগামীকাল ফের সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুনানি শুরু হবে৷
এদিকে, এই মামলাকে ঘিরে এদিন উৎকন্ঠায় ছিলেন রাজ্যবাসী৷ বিশেষ করে চাকুরিচ্যুত শিক্ষকরা এদিন মানসিকচাপে কাটিয়েছেন৷ বিভিন্ন মহল থেকে বিভ্রান্তিকর সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে৷ সোশ্যাল মিডিয়াতে ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকুরি বাতিল হয়ে গেছে বলেও প্রচার করা হয়েছে৷ এই বিভ্রান্তিকর প্রচারে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷ রাজ্যবাসী এদিন সুপ্রিমকোর্টের প্রকৃত খবর জানার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলেন৷
যতদূর ধারণা করা হচ্ছে, আগামীকাল সুপ্রিমকোর্টে শুনানি প্রক্রিয়া সমাপ্ত হতে পারে৷