নারী সংক্রান্ত অপরাধ বন্ধে পুলিশ কিংবা বিচারকের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে ঠিক হবে না ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ ফেব্রুয়ারি ৷৷ রাজ্যে নারী সংক্রান্ত অপরাধ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এবিষয়ে গভীর চিন্তা ব্যক্ত

শনিবার রক্তদান শিবিরে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
শনিবার রক্তদান শিবিরে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷

করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার পুরুষ ও মহিলা উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের পরামর্শ দেন৷ কারণ, পুলিশ কিংবা বিচারকের উপর নির্ভর করে থাকলে এই সমস্যার সমাধান হবে না বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷
শনিবার আগরতলায় একটি রক্তদান শিবিরে নারীদের উপর সংঘটিত অপরাধ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, এখন আমরা সাক্ষরতা, রক্তদান, উপজাতি জমি বন্টনে সারা দেশে সামনের সারিতে থাকলেও সবচেয়ে বেদনাদায়ক হচ্ছে নারী সংক্রান্ত অপরাধ বেড়েই চলেছে৷ বিষয়টি নিয়ে তিনি যথেষ্ট উদ্বিগ্ণ সেকথাও বলেছেন৷ তাঁর বক্তব্য, এই ধরনের অপরাধ বন্ধ হওয়া দরকার৷ বিশেষ করে গার্হস্থ্য হিংসা বন্ধ হওয়া খুবই প্রয়োজন৷ মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, গার্হস্থ্য হিংসার ভিত্তি এবং উৎপত্তি হচ্ছে যৌতুক৷ এটা বেআইনী মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এত ভাল ভাল কাজ করতে পারলেও পণ প্রথার মত সামাজিক ব্যধির বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়া যাচ্ছে না৷ তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস সবাই মিলে সচেতন প্রয়াস নিলে পণ প্রথা বন্ধ করা যাবে না এমনটা হতে পারে না৷
এদিন তিনি বলেন, নারী সংক্রান্ত অপরাদের জন্য কেবল পুলিশকেই দোষ দেওয়া হচ্ছে৷ সকলের উদ্দেশ্যে পাল্টা প্রশ্ণ ছুঁড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশ কী করে জানবে কোন লোকটি কোথায় শ্লীলতাহানির জন্য ঘাপটি মেরে বসে আছেন৷ এরকম কোন যন্ত্র এখনও পৃথিবীত আবিসৃকত হয়নি যার মাধ্যমে আগাম জানা যাবে কে অপরাধ সংঘটিত করতে চলেছে বলে তিনি দাবি করেন৷ তবে, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর অভিযোগ থানায় গেলে তখন পুলিশ জানতে পেয়ে ব্যবস্থা নেয়৷ এদিন তিনি জোর গলায় দাবি করেন, বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশকে বলা হয়েছে মহিলারা যদি কোন নারী সংক্রান্ত অপরাধ নিয়ে থানায় আসেন তাহলে তাদের কোন প্রশ্ণ করার দরকার নেই৷ সর্বপ্রথম মামলা রুজু করতে হবে৷ তাঁর আরও দাবি, এইসব কারণেই গোটা দেশের মধ্যে এই রাজ্যে মামলা নথিভুক্ত করার ঘটনা বেশী৷ তিনি মনে করেন, এটা গণতান্ত্রিক চেতনার স্বাক্ষর৷ তাতে মা- বোনেদের সাহস ক্ষমতাই হচ্ছে এটা তারই নিদর্শন৷
নারী সংক্রান্ত অপরাধ বন্ধের ক্ষেত্রে পুলিশ কিংবা বিচারকের উপর নির্ভর করে বসে থাকলে ঠিক হবে না বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাই তিনি বিভিন্ন এলাকার ক্লাব, সংগঠন তাদের সচেতন প্রয়াস নিজ নিজ এলাকায় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন৷ নারী সংক্রান্ত অপরাধ শূন্যের কোটায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দাওয়াই ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের চিন্তা ভাবনার দিকে নজর দিতে হবে৷ বিশেষ করে পুত্র সন্তানদের ভগ্ণিদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গী ঠিক রাখতে হবে৷ পাশাপাশি মেয়েদেরও তাদের চলাফেরা ও জীবন ধারা সম্পর্কে সচেতন করতে হবে৷ তবেই ধীরে ধীরে নারী সংক্রান্ত অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *