শিক্ষকের মারধরে গুরুতর জখম ছাত্রী

Teacher Punishedনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ ফেব্রুয়ারি৷৷ সুকল ছুটি হওয়ার পর বাড়ি না গিয়ে মাঠে খেলাধূলার করার অপরাধে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে বড়জলা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে৷ জানা গেছে, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী নীহারিকা বিশ্বাস দুপুর দুটোয় সুকল ছুটির পর তিনটা পর্যন্ত মাঠে খেলাধূলা করছিল৷ তা দেখে শিক্ষক পবিত্র রায় তাকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ৷ মারধরের মাত্রা এতটাই মারাত্মক ছিল যে ঐ ছাত্রীর মাথার সিটিস্ক্যান করাতে হয়েছে৷ আইজিএম হাসপাতালের ওপিডি স্লিপ অনুসারে দেখা গেছে, চিকিৎসক ঐ ছাত্রীর সিটিস্ক্যান করানোর পরামর্শ দিয়ে ওষুধ লিখে দিয়েছেন৷ চিকিৎসকদের ধারণা, হয়তবা শিক্ষকের প্রহারে ছাত্রীটির মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেও থাকতে পারে৷ সিটিস্ক্যান রিপোর্টে ছাত্রীটির মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া গেলে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা৷
শিক্ষার অধিকার আইন মোতাবেক সুকলে ছাত্রছাত্রীদের কঠোর শাসন দেওয়া আইনত অপরাধ৷ বেত্রাঘাত সহ মারধর করা কিংবা কড়া শাসন, ভয়ভীতি প্রদর্শন ইত্যাদি থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সুকল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ অথচ বিভিন্ন সুকলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই কড়া নির্দেশিকা পালন করছেন না বলে অভিযোগ৷ সম্প্রতি রাজধানী আগরতলা উমাকান্ত ইংলিশ মিডিয়াম সুকলে দেখা গিয়েছে কঁচিকাঁচাদের পড়ানোর সময় শিক্ষক-শিক্ষিকারা হাতে বেত নিয়ে রাখেন৷ বেত্রাঘাতের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ অভিভাবকদের কাছ থেকেও মিলেছে৷ অথচ বিষয়টি সুকল কর্তৃপক্ষ জেনেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না৷ স্বাভাবিকভাবে, সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে শাসনের নামে মারধর করে মাথায় গুরুতর আঘাত দেওয়ার ঘটনাটি কোন মতেই খাটো দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন অভিভাবক মহল৷ বিষয়টি সুকল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও শিক্ষক পবিত্র রায়কে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ৷ শুক্রবার বড়জলা বিজেপি মন্ডল কমিটির কর্মী সমর্থকরা এবিষয়ে বড়জলা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার সাথে দেখা করে এর সুবিচারের দাবি জানায়৷ কিন্তু প্রধানশিক্ষিকা বিজেপি কর্মীদের জানিয়েছেন, এমন কোন ঘটনা সুকলে ঘটেনি৷ অথচ আইজিএম হাসপাতালের ওপিডি স্লিপে স্পষ্ট লেখা রয়েছে শিক্ষকের হাতেই আক্রান্ত হয়েছে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী নীহারিকা বিশ্বাস৷ শিক্ষকদের এই ধরনের অমানবিক আচরণ সুকল কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে একে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি অভিভাবক মহলে৷ তাতে একাংশের শিক্ষক-শিক্ষিকারা এধরনের আচরণে উৎসাহী হবেন বলেই মনে করছেন অভিভাবক মহল৷ শিক্ষাঙ্গণে সন্তানদের নিরাপত্তার প্রশ্ণে এধরনের ঘটনা সুকল কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা দপ্তরের কঠোর পদক্ষেপ খুবই জরুরি বলে দাবি উঠেছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *