নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ ফেব্রুয়ারী৷৷ চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে মৃত্যু হল সাড়ে পাঁচ বছরের এক শিশু কন্যার৷ শুক্রবার খেলার সময় পুকুরে পড়ে যায় ধর্মনগর থানাধীন ডুপিরবন্দ এলাকার বাসিন্দা রবি দাসের সাড়ে পাঁচ বছরের কন্যা ষষ্ঠী দাস৷ অনেকক্ষন তাকে দেখতে না পেয়ে খুজিখুজি শুরু করেন তার বাবা মা৷ তখনই আশঙ্কা করা হয় ষষ্ঠী পুকুরে পড়েছে কিনা৷ তাতে, খবর দেওয়া হয় দমকল বাহিনীকে৷ দমকল বাহিনীর কর্মীরা এসে পুকুর থেকে ষষ্টিকে উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ কিন্তু, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক চৈতন্য রিয়াং তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন৷ বাড়ি ফিরে তার শেষকৃত্যের উদ্যোগ নেওয়া হলে শিশুটিকে স্নান করানোর জন্য শরীরে জল ঢালতেই ষষ্ঠী নড়েচড়ে উঠে এবং বমি করতে থাকে৷ এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত সকলেই হতভম্ব হয়ে পড়েন৷ তখন ফের খবর দেওয়া দমকল বাহিনীকে৷ দমকল বাহিনীর কর্মীরা এসে বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ফের তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা বুঝে ডাঃ চৈতন্য রিয়াং হাসপাতাল থেকে কাউকে কিছু জানিয়ে বেরিয়ে যান৷ ঐসময় হাসপাতালের জনৈক শিশু বিশেষজ্ঞ ষষ্টিকে পরীক্ষা করে জানান তার মৃত্যু হয়েছে৷ হাসপাতালে কর্তব্যরত অন্যান্যদের কাছ থেকে ষষ্ঠীর পরিবারের সদস্যরা জানতে পান দুপুর ২টা থেকে রাত্র ৮টা পর্যন্ত৷ তাতেই, উপস্থিত ষষ্টির পরিবারের সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন৷ খবর পেয়ে আরো অনেক লোক হাসপাতালে এসে জড়ো হন৷ অবস্থা বেগতিক দেখে খবর দেওয়া হয় হাসপাতাল সুপার ডাঃ সুভাষ বরুয়াকে৷ তিনি এসে সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান৷ কিন্তু ডাঃ চৈতন্য রিয়াংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দাবিতে হাসপাতালে উপস্থিত মৃতার পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করছে আঁচ করতে পেরে হাসপাতাল সুপার পুলিশকে খবর দেয়৷ পুলিশ এসেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যর্থ৷ অবশেষে ডাঃ চৈতন্য রিয়াংয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা নেওয়ার পর রাত ১০টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷
এদিনের এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় একটা বিষয় পরিস্কার যে, প্রথমেই যখন ষষ্টিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল তখনই মৃত বলে ঘোষণা দেওয়ার বদলে সঠিকভাবে পরীক্ষা করে তার চিকিৎসা শুরু হলে হয়তো শিশু কন্যাটি প্রাণে বেঁচে যেত৷ এই ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বাদল চৌধুরী সেই ধাঁরালো কথা মনে পড়ল যে, চিকিৎসকরা মানুষ নাকি অমানুষ তা তিনি জানেন না৷ কারণ, এরাজ্যের চিকিৎসকদের তিনি ভগবানও মানতে পারছেন না৷
2017-02-11