নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জানুয়ারি৷৷ ধলাই জেলায় এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে নিঃসংশ ভাবে হত্যা করেছে দুষৃকতিকারীরা৷ নিহত বিজেপি নেতার নাম কৃপা রঞ্জন চাকমা৷ তিনি বিজেপির ছাওমনু মন্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ভাই ছিলেন তিনি৷ নিহত বিজেপি নেতার বাড়ি ধলাই জেলার লংতরাই ভ্যালি মহকুমার মানিক পুর থানা এলাকার জয়চন্দ্র কার্বারী পাড়া৷ গতকাল রাত তিনটা নাগাদ দুসৃকতিকারীরা বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে৷ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘিরে এলাকায় তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে৷
ঘটনার খবর পেয়ে মানিকপুর থানার পুলিশ এবং পদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান৷ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করে পুলিশ৷ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে৷উল্লেখ্য ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা পরিষদ এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে৷প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুষৃকতিকারীরা৷ উল্লেখ্য ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে সন্ত্রাসবাদীরা৷
এদিকে, বিজেপির তরফে নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টির ছাওমনু মণ্ডলের যুবা কার্যকর্তা কৃপারঞ্জন চাকমার হত্যাকাণ্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে পার্টির প্রদেশ নেতৃত্ব৷ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবার দাবি জানাচ্ছে পার্টি৷ শনিবার খুব সকালেই ছাওমনু মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ছোট ভাই তথা জনজাতি মোর্চার একনিষ্ঠ কার্যকর্তা ও ওই মণ্ডলের অধীন ৪২ নং বুথের পৃষ্ঠাপ্রমুখ কৃপারঞ্জন চাকমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রদেশ কার্যালয়ে খবর এসে পৌঁছায়৷ ঘটনার অব্যবহিত পরেই প্রদেশ নেতৃত্বের নির্দেশে মণ্ডল সভাপতি সমেত অন্যান্য স্থানীয় নেতারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন এবং ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করেছেন৷
বিষয়টি সম্পর্কে পার্টির জেলা কমিটিকেও অবহিত করা হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত পার্টির স্থানীয় সূত্রে যে তথ্য পাওয়া গেছে সে অনুযায়ী প্রয়াত কৃপারঞ্জন চাকমা তার বাড়িতে একটি বাঁশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন৷ এই ঘরে আরো দুজন ছিলেন৷ শুক্রবার রাত শেষ হয়নি শনিবার ভোর আনুমানিক তিনটা নাগাদ কতিপয় বন্দুকবাজ বাড়িটিতে চড়াও হয় এবং বাঁশের বেড়ার ফাঁক দিয়ে প্রয়াত কার্যকর্তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে৷ তাতেই এই একনিষ্ঠ ভাজপা কর্মীর মৃত্যু হয়৷ প্রয়াত কৃপারঞ্জন চাকমা এলাকায় পার্টির যথেষ্ট প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন এবং আসন্ন স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে পার্টির অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বতোভাবে চেষ্টা করছিলেন৷ এরই মধ্যে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে পার্টি মনে করে৷ তবে পার্টি এই এই বিষয়ে চলতি পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চায় না৷
যদিও পার্টির স্থানীয় কার্যকর্তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে এবং পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে৷ নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ এবং মর্মবেদনা প্রকাশ করেছেন পার্টির প্রদেশ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা৷ তিনি এক বার্তায় শোক সন্তপ্ত পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং পার্টির প্রত্যেকটি কার্যকর্তা এই পরিবারের পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন৷ সে সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন শোক সন্তপ্ত পরিবারকে৷ অন্যদিকে পার্টির প্রদেশ সভাপতি এই খুনের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করে রাজ্য প্রশাসনের কাছে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধানের দাবি জানিয়েছে বিজেপি৷