নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, কৈলাসহর, কমলাসাগর, বিলোনীয়া,১৭ ফেব্রুয়ারী৷৷ শুক্রবার ত্রিপুরা প্রদেশ যুব কংগ্রেসের
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2017/02/Congress-300x200.jpg)
আহ্বানে সাত দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে রাজ্যের আট জেলায় এক সাথে অহিংস আইন অমান্য আন্দোলন সংঘটিত হয়৷ সেই আন্দোলনকে ঘিরে আগরতলা, খোয়াই, তেলিয়ামুড়া, কল্যাণপুর, বিলোনীয়া, কৈলাসহর, বিশালগড় সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মীরা আন্দোলনে যোগদান করেছে৷ বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বের হয় কিন্তু পুলিশ তাঁদের গতিরোধ করে৷ সাররাজ্যে প্রায় পাঁচশ জন কংগ্রেস কর্মীকে গ্রেপ্তার করেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে৷ র্যালিতে কংগ্রেসের রাজ্য নেতারাও যোগ দেন৷ কংগ্রেসের এই আইন অমান্য আন্দোলন সামাল দিতে আরক্ষা প্রশাসন থেকে বিশাল পুলিশ, টিএসআর এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছিল৷ রাজধানী আগরতলা শহরের গোর্খাবস্তি এলাকায় আইন অমান্য আন্দোলন সংঘটিত করেছে যুবক কংগ্রেসে৷ আইন অমান্য আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেখান মোতায়েন করা হয়েছিল বিশাল সংখ্যায় নিরাপত্তা কর্মী৷ যেসব দাবীতে এদিন আইন অমান্য আন্দোলন সংগঠিত করা হয়েছে সেগুলির মধ্যে রয়েছে ১৪২টি চিটফান্ড সংস্থা ত্রিপুরার জনসাধারণকে প্রতারিত করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিয়ে যায়৷ এর জন্য সিবিআই তদন্ত দিতে হবে৷
রাজ্যের প্রতিটি জেলার সাথে এদিন ঊনকোটি জেলায় আইন অমান্য আন্দোলন সংঘটিত করেছে কংগ্রেস৷ বেলা দুইটায় কৈলাসহর কংগ্রেস ভবন থেকে একটি মিছিল করে কোর্ট চত্বরে আসে৷ সেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যারিকেট ভেঙ্গে এগিয়ে যায় মিছিল৷ এসডিএম অফিসের সামনে বাঁশের তৃতীয় ব্যারিকেড ভাঙ্গার চেষ্টা করলে মহকুমা পুলিশ আধিকারীক আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন৷ এদিন, যুব কংগ্রেসের আইন অমান্য আন্দোলনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল৷ টিএসআর জওয়ান সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী মাঠে নামানো হয়েছিল৷ এদিনের আইন অমান্য আন্দোলন ঘিরে পুলিশ প্রশাসনকে হিমসিম খেতে হয়েছে৷ এদিনের আন্দোলন কর্মসূচীতে দুই হাজার কংগ্রেস কর্মী সমর্থক যোগদান করেছেন বলে জানিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি৷ তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এদিন কৈলাসহরে ১১৮৮ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷
এদিন এসডিএম অফিসের সামনে বড় বড় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড বানানো হয়েছিল৷ এইপকম কোন ব্যারিকেড বিগত কোন আন্দোলনে প্রশাসনের তরফ থেকে করা হয়নি৷ এদিন আন্দোলনকারীদের মধ্যে যারা গ্রেপ্তার বরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ বদরুজ্জামান, কংগ্রেস নেতা রুদ্রেন্দু ভট্টাচার্য, বর্নেন্দু চৌধুরীূ, নির্মলেন্দু দেব, যুব নেতা নির্মল মালাকার, রুণু মিয়া, আশিষ সেন প্রমুখ৷ স্থানীয় যেসব দাবী রয়েছে সেগুলি হচ্ছে, কৈলাসহর বিমানবন্দর চালু, সীমান্ত হাট কৈরী করা, কৈলাসহরে নবোদয় বিদ্যালয় স্থাপন, কৈলাসহর-কুমারঘাট রাস্তা ডাবল লাইন করার কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা৷ জেলা কারগারে জেলা হাসপাতাল স্থাপন করা ইত্যাদি৷ স্থানীয় এই দাবী সহ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কর্তৃক নোটবন্দীর ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মচ্যুত, কলকারাখা বন্ধ, ক্ষুদ্র প্রান্তীক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মন্দা, দেশে অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা বাতিল করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা ও চিটফান্ড কেলেংকারীর সাথে যুক্তদের গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা ইত্যাদি৷
এদিকে, রাজ্যের অন্যান্য স্থানের সাথে বিশালগড়েও আইন অমান্য আন্দোলন সংঘটিত করেছে যুব কংগ্রেস৷ সাত দফা দাবীতে বিশালগড় যুব কংগ্রেস ভবন থেকে মিছিল শুরু হয়৷ জাতীয় সড়ক দিয়ে বিশালগড়ের বিভিন্ন ফাঁড়ি রাস্তা দিয়ে মিছিল করে বিশালগড় থানা সংলগ্ণ কালীবাড়ীর সামনে আসে৷ সেখানে দুইটি ব্যারিকেড তৈরী করা হয়৷ দুটি ব্যারিক্যাড ভেঙ্গে আন্দোলনকারীরা এগিয়ে যায়৷ তৃতীয় ব্যারিকেড ভাঙ্গতে গেলেই পুলিশ তাদের গতিরোধ করে৷ এদিন এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন, সিপাহীজলা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নিগমানন্দ গোস্বামী৷ প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী মতিলাল সাহা, যুব কংগ্রেস নেতা জয়দোল হুসেন সহ আরও অনেক যুব কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ এদিন, আাইন অমান্য আন্দোলনে যেসব কর্মী সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷
অন্যদিকে, বিলোনীয়াতেও এদিন যুব কংগ্রেসের তরফ থেকে আইন অমান্য আন্দোলন সংগঠিত করা হয়েছে৷ বিলোনীয়া থানার সামনে পরপর দুটি ব্যারিকেড ভাঙ্গার পর তৃতীয় ব্যারিকেড ভাঙ্গার সময় গ্রেপ্তার করা হয় সত্তর জন কর্মী সমর্থককে৷