নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ ফেব্রুয়ারি৷৷ ইট বৃষ্টি, চাপা উত্তেজনা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর সুরক্ষা বেষ্টনি ভেদ

করতে ব্যর্থ হয়েছে আইপিএফটি৷ গন্ডাছড়া মহকুমা বৃহস্পতিবার বনধ সর্বাত্মক সফল হলেও কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷ অমরপুর গন্ডাছড়া সড়কে প্রায় ৮ শতাধিক আইপিএফটি কর্মীদের পুলিশ প্রশাসন ব্যারিকেড করে রেখেছে৷ এদিন, বনধ প্রত্যাহার করার উদ্দেশ্যে আইপিএফটি নেতৃবৃন্দের সাথে প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠক করলেও তাতে কোন সুরাহা হয়নি৷ আগামীকাল ফের বৈঠক হবে বলে জানা গেছে৷ এই বনধকে ঘিরে গন্ডাছড়া মহকুমাজুড়ে প্রায় ২৭০০ পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ এদিকে, নিরাপত্তার খাতিরে গন্ডাছড়া মহকুমায় অউপজাতি সাড়ে তিনশ গ্রামবাসীকে মনোরঞ্জন দাস পাড়া সিনিয়র বেসিক সুকলে অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে রাখা হয়েছে৷
এদিন সকাল থেকেই গন্ডাছড়া মহকুমায় কোন পিকেটারদের পিকেটিং করতে দেওয়া হয়নি৷ কাতারে কাতারে আইপিএফটি কর্মী সমর্থকরা গন্ডাছড়ার উদ্দেশ্যে আসছে দেখে তাদের ব্যারিকেড করে রাখা হয়েছে৷ গন্ডাছড়া-অমরপুর সড়কে রামনগরে প্রায় ৮ শতাধিক আইপিএফটি কর্মী সমর্থককে পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী ব্যারিকেড করে রেখেছেন৷ এদিন সকাল থেকে বনধকে ঘিরে থমথমে পরিস্থিতির মাঝে আইপিএফটি এবং সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের আকার নিয়েছিল৷ আইপিএফটি কর্মীরা সিপিএম কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছঁুড়েছেন৷ তবে, নিরাপত্তা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে৷ এদিন, হরিপুর মোটরস্ট্যান্ড, শর্মা এসডিএম অফিস চৌমুহনী, জগবন্ধু পাড়া এবং গঙ্গানগর এলাকায় পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী ব্যারিকেড করে রাখে৷ পুলিশ প্রশাসনের উধর্বতন কর্তাদের মধ্যে আইজিপি আইনশৃঙ্খলা কে ভি শ্রীজেশ, ডি আইজি

নর্দান রেঞ্জ, ধলাইয়ের পুলিশ সুপার জলসিং মিনা গন্ডাছড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার তদারকি করেছেন৷ গন্ডাছড়া মহকুমা শাসকও এদিন নিরাপত্তার কাজে হাত লাগিয়েছেন৷
এদিন সকাল থেকেই ৪৮ ঘন্টার গন্ডাছড়া মহকুমা বনধকে ঘিরে সমস্ত দোকানপাট, অফিস, সুকল ইত্যাদি বন্ধ ছিল৷ জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রগুলি বনধের আওতার বাইরে রাখা হলেও ওষুধের দোকান এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলি এদিন ঝাঁপ নামিয়ে রেখেছে৷ এদিন রামনগর এবং কালাঝাড়ি ভিলেজ কমিটির প্রায় সাড়ে তিনশ অউপজাতি গ্রামবাসীদের চন্দ্রকিশোরপাড়ার নিকটস্থ মনোরঞ্জন দাস পাড়া সিনিয়র বেসিক সুকলে অস্থায়ী শরণার্থী শিবিরে নিয়ে রাখা হয়েছে৷ তাদের নিরাপদে রাখার উদ্দেশ্যেই প্রশাসনের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জনৈক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন৷
আইপিএফটি সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জমাতিয়ার দাবি গন্ডাছড়া মহকুমায় বনধ সর্বাত্মক সফল৷ গন্ডাছড়াবাসী স্বর্তস্ফুর্তভাবে এই বনধকে সমর্থন করেছেন৷ তবে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার যুক্তি দেখিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ প্রশাসন গন্ডাছড়া মহকুমায় কাউকেই পিকেটিং করতে দেয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন৷
এদিকে, গন্ডাছড়া মহকুমা বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রশাসনের তরফে আইপিএফটি নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের আয়োজন করা হয়৷ এদিন, দুপুর দেড়টা নাগাদ ধলাই জেলা শাসক, ধলাই পুলিশ সুপার এবং গন্ডাছড়ার মহকুমা শাসক আইপিএফটির ৩ সদস্যক প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকে বসেন৷ তবে, ৩০ মিনিটের এই বৈঠকে কোন সুরাহা হয়নি৷ জানা গেছে, আগামীকাল সকাল আটটায় দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে৷ এদিন এই বৈঠকে আইপিএফটির প্রতিনিধিরা প্রশাসনের কাছে তাদের দাবিগুলি মেনে নেওয়ার জন্য সরব হন৷ জানা গেছে, ধলাই জেলা শাসক তাদের দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন৷ কিন্তু আইপিএফটি তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বনধ প্রত্যাহার করা হবে না বলে বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে৷

